কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছে পুলিশ। আর্মড পুলিশের সদস্যরা দোয়েল চত্বর হয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ক্যাম্পাসের অবস্থান নিয়েছে পুলিশ।
সোমবার (১৫ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে ঢাবির দোয়েল চত্বর এলাকা থেকে অভিযান শুরু করে পুলিউশ। এ সময় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের একটি গ্রুপ এবং পুলিশের সাঁজোয়া যান একসঙ্গে সামনের দিকে যেতে দেখা যায়।
অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ক্যাম্পাসে বিপুল সংখ্যক পুলিশ অবস্থান নেওয়া শুরু করে। এসময় ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারকে বিভিন্ন ধরনের দিক নির্দেশনা দিতে দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ আবাসিক হলের সামনে দ্বিতীয় দফায় সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। এ সময় তাদের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দও পাওয়া যায়। তবে সন্ধ্যায় পুলিশ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে শহীদুল্লাহ হলের সামনে অবস্থান এবং উভয়পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেন।
এদিন দুপুর ২টার পর ঢাবি ঢাবিতে মুখোমুখি অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে দুইপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। দুইপক্ষ ইট-পাটকেল, লাঠিসোঁটা নিয়ে মুখোমুখি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। পরে সেই ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ছড়িয়ে পড়ে পুরো ক্যাম্পাসে।
পরে ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতাকর্মীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে প্রবেশ করে। যোগ দেন ঢাকা কলেজসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের আরও নেতাকর্মী।
পরে সংঘর্ষের একপর্যায়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন। তখন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নেন। এক পর্যায়ে দ্বিতীয় দফায় দোয়েল চত্বর এলাকায় সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। পুলিশ ক্যাম্পাসে প্রবেশের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত এই সংঘর্ষ চলে।
এরআগে, দুপুরে ‘মুক্তিযোদ্ধা কোটা’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্য প্রত্যাহার এবং কোটা সংস্কারের আন্দোলনে জড়িতদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিভিন্ন হলে হলে গেলে এক পর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উভয়পক্ষের সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ১৫৫ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তাদের ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে আটজনকে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলেন- কাজী তাসনিম (২৪), ইয়াকুব (২৪), অমি আক্তার (২৬), আমিনুর (২২), শুভ (২৫), গিয়াস উদ্দিন (২২), নাসির (২৩) ও অপি (২২)।
একুশে সংবাদ/জ.ন.প্র/জাহা