বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বাঙালির মুক্তি ও স্বাধীনতার প্রশ্নে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন আপোষহীন। তিনি তাঁর সারাজীবনে কখনোই কোনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করেননি।
এসময়, একটি উন্নত-সমৃদ্ধ, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পাশে থাকার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহবান জানান মন্ত্রী।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর টিসিবি ভবনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮ তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে (ভিডিও বার্তায়) তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাটি জীবন মানুষের অধিকার আদায়ে লড়াই- সংগ্রাম করেছেন। মানুষের কল্যাণে নিজের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ছয় দফা, গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচনসহ সকল আন্দোলনে নেতৃত্বের আসনে ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বিশ্বের বুকে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের লাল সবুজের পতাকা স্থান করে নেয়।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ পুরো জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে দ্বিধা করেননি। বঙ্গবন্ধু তাঁর ভাষণে বলেছিলেন ‘এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম‘ যে ভাষণ এখনো পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভাষণে স্বীকৃতি পেয়েছে।
টিপু মুনশি জানান, স্বাধীনতার পর নিজ মাতৃভূমিতে ফিরেই ধ্বংসস্তূপ দেশকে পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেন। শুরু করেন বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মহাযজ্ঞ। মাত্র সাড়ে তিন বছরে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ অর্থনীতির সকলে সূচকে শক্ত ভিত রচনা করে দেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শহীদ হওয়ার পর সকল অর্থনীতির চাকা বন্ধ হয়ে যায়।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরাজিত শক্তি যুদ্ধে হার মানলেও তাদের ষড়যন্ত্র থেমে থাকেনি। যে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে তার প্রতিশোধ নিতেই পাকিস্তানের দোসররা ৭৫ এর ১৫ আগস্ট কালরাতে শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর সহধর্মিণীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নৃশংসভাবে শহীদ করেন। ঘাতকচক্র জাতির পিতাকে হত্যা করলে তার নীতি ও আদর্শকে মুছে ফেলতে পারেনি।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করতে না পারলেও সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিতার আদর্শ ও দর্শন বুকে লালন ও ধারণ করে সে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ আজ উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। বিশ্বে পরিচিত পেয়েছে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে।
প্রধানমন্ত্রী রুপকল্প-২০৪১ এবং ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ সহ অনেক দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন উল্লেখ করে টিপু মুনশি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত-সমৃদ্ধ সেই স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে দেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।
সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
এছাড়া, বাংলাদেশ ফরেন ট্রেড ইনিস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মোঃ জাফর উদ্দীন, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেইয়ারম্যান এএইচএম আহসান, প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপার্সন প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী এবং ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আরিফুল হাসান পিএসসি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত সচিব মালেকা খায়রুন্নেছা।
এ সময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও আওতাধীন দপ্তর সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষে টিসিবি ভবনে স্থাপিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন ও সকল শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
একুশে সংবাদ/এসএপি



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

