জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে দায়ের হওয়া মামলায় তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্যগ্রহণ আজ শুরু হয়েছে। আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন।
এই মামলায় রাজসাক্ষী হওয়ার শর্তে ট্রাইব্যুনালের অনুমতি পাওয়া চৌধুরী মামুনকে আজ প্রথমবারের মতো আদালতে হাজির করা হয়। তাকে কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে স্বাভাবিকভাবেই ট্রাইব্যুনালে আনা হলেও তার হাতে কোনো হাতকড়া কিংবা মাথায় হেলমেট ছিল না।
রোববার (৩ আগস্ট) সকাল থেকে এই বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়। ট্রাইব্যুনালের ফেসবুক পেজ থেকে বিচারকার্য সরাসরি সম্প্রচারের অনুমতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম।
উল্লেখ্য, ১০ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেয়। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
আদালতে প্রসিকিউশনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। চৌধুরী মামুন আদালতে উপস্থিত থেকে নিজেই অপরাধের দায় স্বীকার করেন এবং রাজসাক্ষী হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
চৌধুরী মামুন বলেন, “জুলাই-আগস্টে চলমান আন্দোলনের সময় আমাদের বিরুদ্ধে যে হত্যা ও গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য। আমি দায় স্বীকার করছি এবং এসব অপরাধের সত্যতা আদালতের সামনে তুলে ধরতে চাই।”
এর প্রেক্ষিতে আদালত পাঁচটি মানবতাবিরোধী অপরাধে তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরুর আদেশ দেয়। এর আগে ১ জুলাই মামলার অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি শেষ করে প্রসিকিউশন।
গত ১৭ জুন পলাতক শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে আত্মসমর্পণের জন্য সাত দিনের নোটিশ জারি করে ট্রাইব্যুনাল। পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা হাজির না হলে অনুপস্থিতিতেই বিচার চলবে।
গত ১ জুন মামলার অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল এবং নতুন করে শেখ হাসিনা ও কামালের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। মামলার অভিযোগপত্র আদালতে পড়ে শোনান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম, আব্দুস সোবহান তরফদার ও মিজানুল ইসলাম, যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে সম্প্রচারিত হয়।
একুশে সংবাদ/ঢ.প/এ.জে