AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে আমাদের করণীয়


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
০৭:৪২ পিএম, ২ জানুয়ারি, ২০২১
হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে আমাদের করণীয়

 


বর্তমানে করোনা ভাইরাসের জন্য সারা পৃথিবীর মানুষ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। দুঃখ, কষ্ট, দুশ্চিন্তা আমাদের হৃদপিনডো ও মনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই সুস্থ থাকতে হৃদপিন্ডো ও মন ভালো রাখতে হবে। হৃদপিণ্ড আমাদের দেহের ভীষণ জরুরী একটি অংগ। আমাদের সারা শরীরে রক্ত সরবরাহ করে হৃদপিণ্ড।

আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি তখনও কাজ করতে থাকে। এক সেকেন্ড এর জন্য তার কাজ বন্ধ হয় না।মায়ের পেটে থাকাকালীন সময় থেকেই আমাদের হৃদপিণ্ড তৈরী হওয়া শুরু হয়। 

বাম পাশের বগলের গোড়া থেকে তিন বা চার ইঞ্চি দূরে আমাদের হৃদপিণ্ড এর অবস্থান। হৃদপিণ্ডের কাজ অনেকটা পানির পাম্প এর মতো। পানির পাম্প  বিশাল একটা দালান এর নীচে থেকে সবচেয়ে উপরের অংশে  পানি সরবরাহ করে ।

আমাদের দেহে হৃদপিণ্ড  নামের জরুরী অংগ টি ঠিক সেই কাজটিই করে । পায়ের আঙ্গুল থেকে মাথা পর্যন্ত রক্ত পৌঁছে দেয় ।

পানির পাইপ লাইনে পানির ময়লা জমলে , পানি সঠিকভাবে চলাচল করতে পারে না । ঠিক তেমনি আমাদের শরীরের শিরা উপশিরা তে ময়লা জমলে , রক্ত সঠিকভাবে চলতে পারে না । রক্তের ময়লা বলতে রক্তের মধ্যে জমে যাওয়া চর্বি কে বোঝায়।

রক্ত নালী তে জমে থাকা চর্বি বা fat তৈরী হয় দেহের তুলনায় অধিক পরিমাণে চর্বি জাতীয় খাবার , মাদক দ্রব্য , ধূমপান থেকে ।

বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারলে , হৃদপিণ্ডর  উপর অতিরিক্ত চাপ তৈরী হয় । তখন হৃদপিনডো সারা দেহে সঠিকভাবে রক্ত সরবরাহ করতে পারে না ।

পরিণামে তৈরী হয় হৃদপিনডের  এর নানাবিধ অসুখ । যা কখনোই কাম্য নয় ।

হৃদপিনডের অসুখের জন্য দায়ী বিষয় গুলো হলো :

১) অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও অক্লান্ত পরিশ্রম ,

২) ভয়ানক  দুশ্চিন্তা, হতাশা।

৩) বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী ওজন বেশী ,

৪) দীর্ঘ বছর সঠিকভাবে ঘুমের অভাব ,

৫) কোন ওষুধের দীর্ঘ বছরের পারশোপ্রতিক্রিয়া।

৬) অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ ,

৭) কিডনীর জটিল অসুখ

৮) মাদক দ্রব্য সেবন ও অতিরিক্ত ধূমপান।

  সিগারেট এর নিকোটিন
রক্তনালীর সংকোচন করে। ফলে হৃদপিণ্ডে রক্ত সরবরাহ কমে যায়।

৯) পারিবারিক ইতিহাস অর্থাৎ রক্তের আত্মীয় স্বজনদের হৃদরোগ থাকলে, আপনার হৃদরোগ হতে পারে।
যদি আপনি সঠিকভাবে নিজের যত্ন না নেন।

১০) কোন জটিল রোগের জন্যও হৃদপিণ্ডের অসুখ হতে পারে।

১১) হৃদপিণ্ডের অপারেশন বা কোন অসুখের পরে চিকিৎসক এর পরামর্শ মেনে না চলা।

হৃদপিণ্ড ভালো রাখার জন্য আমাদের করণীয় :

১) বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে ।

২) অতিরিক্ত মিষ্টি ও চর্বি জাতীয় খাবার , মাদক দ্রব্য , ধূমপান পরিহার করতে হবে ।

৩)  ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে
হবে ।

৪) জীবন মানেই একটার পর একটা যুদ্ধ । মানসিক চাপ কমাতে নিয়মিত নিজেকে খুশী রাখা উচিত ।

৫) ধর্মের কাজ , মেডিটেশন মানসিক প্রশান্তি দেয় ।

হৃদপিনডো ভালো রাখার জন্য মানসিক প্রশান্তি ভীষণ জরুরী ।

৬) পারিবারিক ইতিহাসে কারো হৃদপিনডের অসুখ থাকলে , আগে থেকেই সচেতন হোন ।

৭) হার্ট  এর অসুখ থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন । নিয়মিত চেক আপ করানো  ভীষণ জরুরী ।

৮) প্রতি বছর পুরো দেহের চেকআপ করান । আমাদের দেহ বিশাল এক কারখানা । একটা মেশিন দূর্বল হলে,
আশেপাশের মেশিনে  জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে । তাই  সময় থাকতে সচেতন হোন ।

৯) অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার খাবেন । নিয়মিত দুই লিটার পানি ভীষণ জরুরী ।

যারা রোযা রাখবেন তারা এফতারে অতিরিক্ত তেল , মশলা , চর্বি জাতীয় খাবার বাদ দিবেন।

১০) সুযোগ হলেই হাটবেন।

করোনা ভাইরাসের জন্য লকডাউনে থেকে ঘরের কাজ গুলো নিয়মিত করার চেষ্টা করবেন ( ঘর পরিষ্কার করা , কাপড় ধোয়া) ।

এতে ঘামের মাধ্যমে শরীরের বাড়তি calorie গুলো
ঝরে যায় । যা ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় ।

১১) সঠিক সময়ে ঘুমানোর চেষ্টা করবেন ।

১২) সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠার চেষ্টা হার্ট এর জন্য ভালো । তবে হৃদরোগ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জীবন যাপন করবেন ।

১৩) হতাশা দূর করতে নিজেকে সৃষ্টিশীলতা ও মানবতার কল্যাণে নিয়োজিত রাখবেন । ভালো কাজ আমাদের কে দেয় আত্মতৃপ্তি । মন ভালো থাকলে , হার্ট  ভালো থাকবে ।

হার্ট  ভীষণ জরুরী অংগ।  আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি , তখনও আমাদের হৃদস্পন্দন ( heart beat ) সচল থাকে । Heart beat থেমে গেলে , আমাদের জীবন টাও থেমে যাবে ।

আমার সবার উচিত হার্ট  ভালো রাখার উপায় গুলো মেনে চলা এবং অন্যদের সচেতন করা ।

লেখক : ডাঃ ফারহানা মোবিন, বারডেম হাসপাতাল।

একুশে সংবাদ/টি/আই

Link copied!