বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসে তামাক ও নিকোটিন পণ্য অপ্রাপ্তবয়স্কদের নাগালের বাইরে রাখার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকো (বিএটি)। এ লক্ষ্য অর্জনে সকল প্রকার প্রচেষ্টা এবং নীতিমালা প্রণয়নের প্রক্রিয়া সমর্থন করে প্রতিষ্ঠানটি। বিশ বছর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তামাক নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন (এফসিটিসি) অনুমোদিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত অনেক কিছু পরিবর্তিত হয়েছে।
ধূমপানমুক্ত বিশ্ব গড়ার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে এ খাতের অংশীজনদের সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে বিএটি। ধূমপানের বিকল্প পণ্য, যেমন: ভেপিং, হিটেড প্রোডাক্টস ও নিকোটিন পাউচ তামাক পোড়ানোর তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ উৎপন্ন করে। সিগারেট ধূমপানের সাথে সম্পর্কিত ক্ষতিকর প্রভাব কমাতে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এসব পণ্যের কারণে জাপান, নিউজিল্যান্ড, সুইডেন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলোতে ধূমপানের প্রবণতা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে।
সুইডেনের উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, তামাকের ক্ষতি হ্রাস সংক্রান্ত উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা রাখে। গত ৩০ বছরে সুইডেনের অনেক মানুষ ধূমপান ছেড়ে স্নাস (ওরাল তামাকজাত পণ্য) ব্যবহার শুরু করেছে। সম্প্রতি, দেশটি ধূমপানের বিকল্প আরও অনেক পণ্য বাজারে এনেছে। এই পণ্যগুলো সিগারেটের তুলনায় বেশি সাশ্রয়ী কারণ কম ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার কারণে এসব পণ্যের ওপর তুলনামূলক কম কর আরোপ করা হয়েছে।
প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ীদের জন্য ধূমপানের বিকল্প পণ্য ও ধূমপানের ঝুঁকি সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করতে উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত নিয়ন্ত্রক সংস্থার। একইসাথে, অপ্রাপ্তবয়স্করা যেন কোনো তামাক বা নিকোটিন পণ্য ক্রয় করতে না পারে তা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করাও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
অপ্রাপ্তবয়স্কদের মাঝে এসব পণ্যের ব্যবহার প্রতিরোধে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের কাছে তামাক এবং নিকোটিন পণ্য বিক্রয় এবং ব্যবহার নিষিদ্ধ করতে হবে। কেনা বা ডেলিভারির ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক বয়স যাচাইকরণ ব্যবস্থা চালু করতে হবে। উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার মাধ্যমে নিয়ম ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে নিয়ম/বিধির কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
বিএটি বাংলাদেশের কর্পোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স বিভাগের প্রধান সাবাব চৌধুরী বলেন, “বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসে, তামাক ও নিকোটিন পণ্য অপ্রাপ্তবয়স্কদের হাতের নাগালের বাইরে রাখার উদ্দেশ্যে শক্তিশালী সুরক্ষা ব্যবস্থার আহ্বানের সাথে আমরা একাত্মতা প্রকাশ করছি। আমরা আমাদের ব্যবসায় দায়িত্বশীল অনুশীলন বাস্তবায়ন করেছি এবং ইতিবাচক পরিবর্তন অর্জনে কাজ করে যাচ্ছি। বাস্তবসম্মত ও যৌক্তিক নীতিমালা তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখার পাশাপাশি প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ীদের সম্পূর্ণরূপে ধূমপানের বিকল্প পণ্য ব্যবহারে এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের মাঝে এসব পণ্যের ব্যবহার রোধ করতে ভূমিকা রাখবে।”
বিএটি গ্রুপের রিসার্চ অ্যান্ড সায়েন্স ডিরেক্টর ড. জেমস মারফি বলেন, “বিশ বছর আগে সিগারেট ধূমপানের সাথে সম্পর্কিত স্বাস্থ্যগত প্রভাব মোকাবিলার একমাত্র উপায় ছিল তামাক নিয়ন্ত্রণ। এখন প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ীদের জন্য কম ঝুঁকিপূর্ণ প্রোফাইলে (বিকল্প) স্যুইচ করার সুযোগ থাকা উচিত। ধূমপানের ক্ষতি হ্রাস করতে এই কৌশল কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম; এর পক্ষে অনেক বৈজ্ঞানিক প্রমাণও রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, এই কৌশল বাস্তবায়নের মাধ্যমে তামাকমুক্ত বিশ্ব গড়ে তোলার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করা সম্ভব।”
সিগারেটের সাথে সংশ্লিষ্ট ক্ষতি সম্পর্কে অবগত রয়েছে বিএটি। এই ক্ষতি কমানোর লক্ষ্যে, প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ীদের (যারা অন্যথায় ধূমপান চালিয়ে যেতেন) জন্য সিগারেটের চেয়ে কম ঝুঁকিপূর্ণ প্রোফাইলসহ ধূমপানের বিকল্প পণ্যের পোর্টফোলিও চালু করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বিএটি। ২০৩৫ সালের মধ্যে নিজেদের তামাকমুক্ত ব্যবসায় পরিণত করতে কাজ করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
বিএটি বিশ্বাস করে যে, তামাক ব্যবহারের ক্ষতি হ্রাস করা জনস্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ও বিধি বাস্তবায়নে মাধ্যমে তামাক নিয়ন্ত্রণ এবং এর ক্ষতি হ্রাস করা সম্ভব।
একুশে সংবাদ / এস.কে/এ.জে