AB Bank
ঢাকা রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

বাবার শূন্যতা প্রতিনিয়ত অনুভব করি


Ekushey Sangbad
একুশে সংবাদ ডেস্ক
১১:৩৯ এএম, ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩
বাবার শূন্যতা প্রতিনিয়ত অনুভব করি

আমার পরম শ্রদ্ধেয় আব্বা সাইটুলা ইসলামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা প্রিন্সিপাল মাওলানা মোঃ মোজাহিরুল হক (রহ.)-কে হারিয়ে আমি এবং আমার পরিবার যে নির্ভরতা আর আশ্রয় হারিয়েছি সেটা ভাষায় প্রকাশ করে বুঝানো দুরূহ ব্যাপার। বাবাকে প্রাণভরে আব্বা বলে ডাকতে না পারার ৩৬৫ দিন কতটা কষ্টের তা কেবল বলতে পারবে বাবাহীন সন্তানেরা। বুকের ভেতর হাহাকার করে কেঁদে ওঠা প্রতিটা স্পন্দন জানে বাবা ছাড়া পৃথিবীটা কতটা কঠিন, যন্ত্রণার, হাহাকারের, অসহায়ত্বের।


বাবা হলেন একটি সংসারের বটবৃক্ষ। বটবৃক্ষের ছায়ায় পথিকেরা যেমন ক্লান্তি দূর করে, শীতলতা অনুভব করে, ঠিক তেমনি বাবার স্নেহ-ভালোবাসায় সন্তানের জীবনের সব দুর্দশা ও ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। বাবার ভালোবাসা ও নির্দেশনায় সন্তানরা সারাজীবন আলোর পথ খুঁজে পায়। বাবাহীন জীবন বালুকাময়। সেখানে স্বস্তি নেই, শীতলতা নেই। যেদিকে চোখ যায়, দেখা যাবে শুধু হাহাকার আর ধূসর প্রান্তর। আমার প্রিয় বাবাকে হারিয়ে আমার জীবনও আজ বালুকাময়। নিষ্প্রভ ও বেদনাময়। 


আমার আব্বা (রহ.) ২০২২ সালের ৭ ডিসেম্বর রাত ৩টা ২০ মিনিটে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও সুন্দর এই সুন্দর পৃথিবী ছেড়ে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে কাঁদিয়ে গেলেন আমাদের। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। এখন থেকে এক বছর, দুই বছর করেই দিন চলে যাবে বাবাকে ছাড়া। পথের বাঁকে বাঁকে বাবাকে আমার খুব মনে পড়ে। আমি এবং আমার পপরিবার বাবার শূন্যতা প্রতিনিয়ত অনুভব করে।
আমার আদর্শবান আলেম পিতা নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে তিলে তিলে আমাদের আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে কোনো কৃপণতা করেননি। আব্বার প্রতি আমার যে অনুভূতি হৃদয়ে ধারণ করেছি তা প্রকাশের ভাষা এখনো আবিষ্কার করতে পারিনি।


বাবাহীন একজন ছেলের জীবন যে কতটা বিয়োগান্ত হয়, তা হয়তো যাদের বাবা বেঁচে আছেন তারা কখনোই বুঝতে পারবে না। প্রতিটি মুহূর্তে মনে হয় সত্যি আমি বড়ই একা। বাবাকে ছাড়া বাঁচতে পারবো এটা কখনো কল্পনা করিনি। কিন্তু বাস্তবতা বড়ই কঠিন। বাবার জীবদ্দশায় এতটা টের পাইনি। তাঁর মৃত্যুর পর যত দিন যাচ্ছে তত বেশি করে অনুভব করছি। বুঝতে পারছি মাথার ওপর ছায়া দেওয়ার মত আকাশটা আর নেই। একটা দুঃসহকাল অতিবাহিত করছি, নীড়ে থেকেও আশ্রয়হীন।


বাবাহীন হতে পারি আমরাও এমন ভাবনা তাঁর অসুস্থ হওয়ার ক্ষণে ক্ষণে মনে পড়লেও বিপদ ভেবে সেটা দূরে সরিয়ে রাখছিলাম। কেনো আমরা বাবা-হারা হবো; আমাদের কী বাবার আশ্রয়ের দরকার নেই- এমন ভাবনায় তাঁর কাছাকাছি থেকেছিলাম সবসময়।


আমার দেখা সাধারণে অসাধারণ মানুষদের একজন আমার আদর্শবান বাবা। সহজ-সরল অনাড়ম্বর জীবন যাপন করা সৎ ও কর্মনিষ্ঠ এই মানুষটি আমার জীবনের আদর্শ ছিলেন। আমার বাবা আমার কাছে বিশেষ এক আবেগ, ভালোবাসা, শ্রদ্ধা, গর্ব। সেই গৌরব হারানোর বেদনা পৃথিবীর কোনো কিছুর বিনিময়েই প্রশমিত হবার নয়। এ এক অবর্ণণীয় শূন্যতা, যা কেবল মিশে আছে হৃদয়ের রক্তক্ষরণে। বাবা স্বশরীরে বেঁচে নেই, তবু বেঁচে আছেন আমাদের মাঝে প্রতি মুহূর্তে। আমাদের ভালোর জন্য বাবা জীবনের প্রায় সবকিছুই নির্দ্বিধায় ত্যাগ করেছেন। কখনো নিজেকে ভালো রাখার চিন্তা করেননি। 


আমার জীবনে যদি বলি প্রাপ্তি তবে তা হলো বাবা আমাদের মাঝে আদর্শ ও সততার বীজ বুনে দিয়েছিলেন। শিখিয়েছিলেন সততার চেয়ে নেই কিছু মহান এই পৃথিবীতে। বাবাই আমাদের শিখিয়েছেন কীভাবে হকের ওপর অটল থেকে মাথা উঁচু করে পৃথিবীতে টিকে থাকতে হয়। পরিবারের প্রতিটি বিপদে বাবাকে নতুন করে চেনার পরম সৌভাগ্য হতো আমাদের। ‍‍`হালাল সবসময় বরকতময়’এ কথাটি সবসময় মনে করে দিতে আব্বা। 


বাবার মৃত্যুর এই ১ বছরে অনেক কিছুই পাল্টে গেছে। পুত্র সন্তান গালিবের পর আমাদের ঘরে এসেছে রাজকন্যা নুসাইবা মাদিহা। বড় ভাইয়ের ঘরেও নতুন মেহমান ভাতিজির আগমন। আব্বা যদি জানতেন তার ছেলেদের ঘরে আরও নাতনি হয়েছে তিনি কতই না খুশি হতেন! 


মনে অনাবিল আনন্দ আর গর্ব নিয়ে বেঁচে থাকি এমন মুখলিস আলেম পিতার সন্তান হতে পেরে। আব্বা ছিলেন একজন আমলদার আলেমের সবচেয়ে ভালো উদাহরণ। আব্বার সবচেয়ে বড় গুন হলো, তিনি কুরআন সুন্নাহ মতো জীবন পরিচালনা করতেন। পরিবারকেও এভাবে চালাতেন। হালাল হারাম বেছে চলতেন। ন্যায় ও হকের পক্ষে অবিচল থাকতেন। মেহমানকে খেদমত করতেন। জীবনে অনেক ছাত্র তৈরি করে গেছেন। দেশে বিদেশে বিভিন্ন সেক্টরে তাঁর ছাত্ররা কর্মরত। আলেমদের ভালোবাসতেন, কাছে ডাকতেন পরম স্নেহ মমতা নিয়ে। কখনো কাউকে ছোট করে দেখতেন না। 


আব্বা আজীবন শুধু মানুষের উপকার করতে চাইতেন। সেইসব মানুষের অবারিত ভালোবাসায় বাবাকে সিক্ত হতে দেখেছি।
বাবার মৃত্যুর পর কত শত মানুষ বাবার জন্য কান্না করেছে, আমাদের জানিয়েছে নীরবে নিভৃতে বাবা সব সময় মানুষের ভালো চাইতেন। সেই পথে চলতে আমাদের বাবা অদৃশ্য এক ছায়া হয়ে থাকেন আমাদের সাথে। 


বাবার সাথে অগণিত স্মৃতিগুচ্ছ শুধু মনে পড়ছে বারবার। রমজান মাসসহ বছরব্যাপী তাহাজ্জুদের নামাজের সময় উচ্চস্বরে দোয়া আর কান্না, বাবার সুরেলা কণ্ঠে কুরআন তেলাওয়াত। ফজরের আজানের সাথে সাথে ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলা। কোনো সুসংবাদ শুনলে বাবা হাত দুটো আকাশের দিকে তুলে দিতেন। তবে আমি আজও বাবার স্মৃতিগুলো আঁকড়ে ধরে বেঁচে আছি।


মানুষদের কাছ থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছি সেটা ভুলার মত নয়। এগুলো আদতে অর্জন। আব্বা নেই আজ এক বছর পূর্ণ হয়েছে, অথচ সেই একই পরিচিতি, একই ভালোবাসা আমরা পেয়ে যাচ্ছি। এগুলো দেখে মনে হয় আব্বা দৈহিকভাবে হয়ত নেই কিন্তু তাঁর পরিচিতি এখনও রয়ে গেছে। এগুলো দেখে একদিকে গর্ব হয়, আবার অন্যদিকে নিজেকে পিতৃহীন ভেবে বুকটা হাহাকার করে ওঠে! এই হাহাকারের যন্ত্রণা যে কতটা ভারী সেটা ঠিক ঠিক টের পাই; আমি নিশ্চিত জগতের অধিকাংশ পিতৃহীনেরাই টের পায়। ওগো আরশে আজিমের মালিক, আমার বাবাসহ সব কবরবাসী বাবাকে ক্ষমা করে জান্নাতের সু-উচ্চ মাকাম দান করুন। হে আমার রব! তাদের প্রতি দয়া করো যেভাবে শৈশবে তারা আমাদের প্রতিপালন করেছিলেন। আমীন। ‍‍`রাব্বিরহামহুমা কামা রাব্বা ইয়ানি ছাগিরা‍‍`।

 

আব্বার অসুস্থতা-চিকিৎসা, জানাজা-দাফন :
আব্বার হাই ব্লাড প্রেসার ছিল, কোলেস্টেরল সমস্যা ছিল, ডায়াবেটিস ছিল তাঁর। শেষ সময়ে এসে মৃত্যুর বেশ কয়েক বছর আগে থেকে নানা রোগে ভোগছিলেন। আব্বাকে প্রতিদিন একগাদা ওষুধ খেতে হতো। কার্ডিওলজি, মেডিসিন, ডায়াবেটিক চিকিৎসকসহ অনেক চিকিৎসক আব্বাকে চিকিৎসা দিয়েছেন। 
২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় হঠাৎ আব্বার মুঠোফোন থেকে কল করে আম্মা বললেন আব্বার অবস্থা খারাপ দ্রুত বাসায় আসার জন্য। আমি এসময় স্কুল ছুটি দিয়ে বাসায় আসার জন্য কালিঘাট রোড অতিক্রম করছিলাম। ফোন পেয়ে মটরসাইকেলের গতি কিছুটা বাড়িয়ে ২ মিনিটেই বাসায় চলে আসি। এসে দেখি আব্বার শরীর প্রচণ্ড জ্বরে পুড়ে যাচ্ছে। শরীরে বারবার কাঁপুনি দিচ্ছে। তখন বিছানায় বসা অবস্থায় ছিলেন। হঠাৎ বিছানা থেকে হেলে মাটিতে পড়ে যাচ্ছেন দেখে আমরা (আমি, আম্মা, দুই বোন) সাথে সাথে হাত দিয়ে আঁকড়ে ধরে বালিশে ধীরে ধীরে বিছানায় শুয়ে দেই। এসময় মুখ দিয়ে ফেনা বের হচ্ছিল আর জোরে জোরে কয়েক সেকেন্ড নিঃশ্বাস নিয়ে আব্বার সেন্সলেস হয়ে যাায়। সাথে সাথে আমরা বাসায় থাকা মেশিন দিয়ে ডায়াবেটিকস, প্রেশার, জ্বর, অক্সিজেন সেচুরেশেন পরীক্ষা করে দেখলাম জ্বর ও প্রেশার খুব বেশি এবং অক্সিজেন সেচুরেশন ও ডায়াবেটিক অনেক কম। আব্বার শরীরের অবস্থা খারাপের খবর মুহুর্তেই জেনে গেলেন প্রতিবেশি। ১৫ মিনিটের মধ্যে ভগ্নিপতি গাড়ি নিয়ে আসলেন। চালক সাদ্দাম, প্রতিবেশি নয়ন ও কালু এগিয়ে এলো। সবাই মিলে আব্বাকে বিছানা থেকে তুলে গাড়িতে ওঠালাম। ৭-৮ মিনিট পর পৌছলাম শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এর আগ থেকেই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে অপেক্ষা করছিলেন সাংবাদিক ইসমাইল ভাই, মেডিকেল অফিসার ডা. নাজমুল হাসান ভাই ও সহযোদ্ধা আশিকুর রহমান চৌধুরী। হাসপাতালে নেওয়ার সাথে সাথে চিকিৎসা শুরু হলো। কর্তব্যরত চিকিৎসক বললেন প্রেশার ২৫০/২২০। ডাক্তাররা বললেন হয়তে স্ট্রোক করেছেন। শহরের ইনোভা ডায়াগনেস্টিক সেন্টারে কল করে প্যাথলজিস্ট ল্যাব ও স্টাফদের এনে চিকিৎসকের পরামর্শে ইসিজি, রক্ত পরীক্ষাসহ কয়েকটি টেস্ট করলাম। হাাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সরা অক্সিজেন, স্যালাইন, ইনজেকশনসহ একের পর ওষুধ দিলেন, কিন্তু বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত আব্বার সেন্স ফিরেনি, কোনো উন্নতিও হয়নি। বারবার অক্সিজেন সেচুরেশন কমে আসছে, আবার প্রেশারও কমছে না। এরই মধ্যে মেজু ভাই এনামুল হক নোমান মৌলভীবাজার কর্মস্থল থেকে চলে আসলেন হাসপাতালে।


প্রবাসী মেজু দুলাভাই জুবায়ের আহমদ বারবার কল দিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন, উন্নত চিকিৎসার যেনো কোনো কমতি না হয় এজন্য করেছেন সার্বিক সহযোগিতা। হাসপাতাল মসজিদের ইমাম মাওলানা আছগর হোসেনও আব্বাকে দেখতে আসেন। অবস্থা থেকে পারিবারিকভাবে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম সিলেট নিয়ে যাবো। হাসপাতালের ডাক্তাররাও সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাাওয়ার পরামর্শ দিলেন। আমরা রাত সাড়ে ৮টায় এম্বুুলেন্সযোগে রওয়ানা হললাম সিলেট নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশ্যে। রাত প্রায় ১০টার দিকে নর্থইস্টে আব্বাকে ভর্তি করা হলো। ডাক্তাররা অনেক টেস্ট দিয়ে বললেন দুইদিন পর ICU-তে ভর্তি করতে হবে। আমরা বললাম প্রাথমিকভাবে বেডে চিকিৎসা দিয়ে আগে রোগ নির্ণয় করুন।আমরা সবকিছু করতে প্রস্তুত। এখানেও খুব একটা উন্নতির আলামত মেলেনি। তবে জ্বর এবং প্রেশার কমছে অনেকটা, টানা কয়েক ঘন্টা অক্সিজেন দেয়ার পর অক্সিজেশন সেচুরেশরও বাদছে, কিন্তু সেন্স ফেরেনি। এমন কোনো টেস্ট নেই যে টেস্ট করায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রায় ৩৭ ঘন্টা পর আব্বার সেন্স ফিরে। জ্ঞান ফেরার পর আব্বা বললেন, আমি কোনানো? নামাজ অজু....এরপর আবার সেন্স লেস। এদিন হাসপাতালে আব্বাকে  দেখতে গিয়েছিলেন তালতো ভাই লুৎফুর রহমান জাকারিয়া, বোন জামাতা মুফতি মাহমুদ, ভগ্নিপতি মাওলানা আশরাফ আলী, মাওলানা জিয়া উদ্দিন, মাওলানা আবু বকর, নজরুল মামা, বড় মামা মুজিবুর রহমান, মামাতো ভাই হাফেজ কাওছার প্রমুখ। এরপর আরও দুুই ঘন্টা পর আবার জ্ঞান ফেরে। এসময় আম্মা আব্বাকে বলছিলেন ‍‍`গালিব এরা আইছইন, তখন আব্বা সেলাইন লাগানো হাত আর নাকে অক্সিজেন লাগানো অবস্থায় আমার পুত্র গালিবকে টেনে নিলেন, আর আমার আহলিয়াসহ আরও দুুইজনের নাম ধরে ডাকলেন, তবে তারা কেউ হাসাতালে ছিলেন না। আম্মা বললেন তারা বাসাত, নাতীরা আছে। এসময় আব্বা ওঠতে চাইলেন, গোসল করে আবার নামাজ পড়ার কথা বললেন, মেজু ভাই, আম্মা, আমি আর ছোট আপা বারণ করলাম এই অবস্থায় বিছানা থেকে ওঠা যাবে না। এসময় আমার মুহতারাম শশুর, জাকারিয়া ভাইসহ আলেমরা দোয়া করলেন আব্বার পাশে বসে, তারা দোয়া চাইলেন আব্বাও চাইলেন। এরপর আব্বার চোখে ঘুম আসলো। হাসপাতালে রাতের পর রাত ঘুমহীন থেকে তাঁর সামান্য চোখ মেলার অপেক্ষা করতাম। সামান্য নড়লেচড়লে মনে হতো প্রাণ ফিরেছে আমারও দেহে। মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় আব্বা কয়েকবার পানি চাইলেন, তখন কথা ছিল অস্পষ্ট। এর আগে গত তিন দিন থেকে কোনো খানি পানি নেই। ডাক্তাররা না করার পরও আমি আম্মাকে বললাম বোতলের পানির মুুখ দিয়ে এক মুুখ পানি দেয়ার জন্য, দিলেন আম্মা। আবার চাইলেন দিলাম। এরপর থেকে আব্বা কয়েক মিনিটে মুখ নড়াচড়া করে শব্দ করে ‍‍`আল্লাহ-আল্লাহ, আল্লাহ, জিকির পড়ে ঘুমিয়ে পড়লেন। আর আমরা (আমি, মেজু ভাই, বড় ভাই, আম্মা, ছোট আপা আব্বার বেডের পাশে বসে দোয়া, দরুদ, তাসবিহ, কালিমার তালকিন, কুরআন তেলাওয়াত করছি। 


রাত ২টা থেকে আব্বার অবস্থা আরও অবনতির দিকে যায়। ধীরে ধীরে অক্সিজেশন সেচুরেশন কমতে শুরু করে, হাত পা শরীর ঠাণ্ডা হয়ে হচ্ছে, ডাক্তাররা বললেন আমাদের চিকিৎসা শেষ, এখন আল্লাহর কাছে দয়া আর সাহায্য চান। 


আমরা বুঝতে পেরেছি যে, আব্বার ‍‍`সাকরাতুল মাওত‍‍` শুরু। আমরা সবাই আব্বার পাশে বসে ইয়াসিন, কালিমা, তাসবিহ পড়ছি, রাত ৩টা থেকে আব্বার শ্বাসকষ্ট বেড়ে ৩টা ২০ মিনিটে সিলেটের নর্থইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ‍‍`আল্লাহ‍‍` জিকির বলা অবস্থায় আল্লাহর ডাকে সাড়া দেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আব্বার (রহ.) জানাযা বুধবার (৭ ডিসেম্বর, ২০২২ খ্রি.) বেলা ২টায় শ্রীমঙ্গল কালিঘাট রোডস্থ বায়তুল আমান জামে মসজিদ ঈদগাহ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। জানাযা পূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মোঃ মহসিন মিয়া মধু, শ্রীমঙ্গলের জামেয়া ইসলামিয়া বালক-বালিকা টাইটেল মাদরাসার শায়খুল হাদিস মাওলানা রফিকুল ইসলাম ভানুগাছি, কমলগঞ্জের মুন্সিবাজার ধর্মপুর উম্মাহাতুল মুমিনীন মহিলা মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা শায়খ আব্দুর রহমান ধর্মপুরী, মাধবপুর নোয়াগাঁও তালিমুল কুরআন মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা নুরুল মুত্তাকিন জুনাইদ সাহেবজাদায়ে মাধবপুরী, শ্রীমঙ্গলের জামেয়া হাসানিয়া খাসগাঁও মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আব্দুস সালাম, জামেয়া লুৎফিয়া আনোয়ারুল উলুম হামিদনগর বরুণা টাইটেল মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা আব্দুল গফুর কবির, সিন্দুরখান কুঞ্জবন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ডা. একরামুল কবীর, বোন জামাতা মুফতি মাহমুদুল হাসান। জানাযায় ইমামতি করেন মেজো ভাই রাজনগর জামিউল উলুম বছিরমহল মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা এনামুল হক নোমান। এসময় উপস্থিত ছিলেন বড় ভাই ইমদাদুল হক হেলাল, আমার বোন জামাতা বাহুবল চলিতাতলা মারাসার শিক্ষক মাওলানা আসআদ আহমদ ও শ্রীমঙ্গলের মঈনুস সুন্নাহ রেলগেইট মারকাজ মাদরাসার শিক্ষাসচিব মাওলানা আশরাফ আহমদ। জানাযায় অংশগ্রহণ করেন শ্রীমঙ্গল পৌরসভার কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-৭ মীর এম এ সালাম, জামেয়া ইসলামিয়া বালক বালিকা টাইটেল মাদরাসা শ্রীমঙ্গলের প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুশ শাকুর, মাদরাসার মঈনে মুহতামিম মুফতি মনির উদ্দিন, জামেয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস ও শ্রীমঙ্গল উপজেলাকেন্দ্রীয় জামে মসজিদের ইমাম-খতিব মাওলানা ফেরদাউস আহমদ মাধবপুরী, শ্রীমঙ্গল মঈনুস সুন্নাহ রেলগেট মারকাজ মাদরাসার মুহতামিম মুফতি সিরাজুল ইসলাম, আশিদ্রোন জামিউল উলুম হাফিজিয়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আব্দুল মালিক, ষাড়েরগঞ্জ ইসলামিয়া হাফিজিয়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা নুরুল ইসলাম, আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার আমীর মাওলানা শায়খ ফজলুল রহমান মৌলভীচকী, শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মুফতি হিফজুর রহমান হেলালী, শ্রীমঙ্গল মঈনুস সুন্নাহ রেলগেট মারকাজ মাদরাসার সাবেক শিক্ষক মাওলানা আব্দুল মজিদ মিরপুরী, শ্রীমঙ্গল সরকারি হাসপাতাল মসজিদের ইমাম মাওলানা আছগর হোসাইন, রাজনগর জামিউল উলুম বছিরমহল মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আব্দুস সালাম তালুকদার, মৌলভীবাজার নুরুল কুরআন মাদরাসার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা জিয়া উদ্দিন ইউসুফ, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি সাংবাদিক ইসমাইল মাহমুদ, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসন সোহেল, কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ ছায়েদ আহমদ, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মামুন আহমেদ, আজকের বিজনেস বাংলাদেশ শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি মিজানুর রহমান আলম, সাপ্তাহিক প্রতিক্ষণ এর সম্পাদক আমজাদ হোসেন বাচ্চু, দৈনিক করতোয়ার শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি নুর মোহাম্মদ সাগর, দৈনিক দেশ রুপান্তরের শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি আহমেদ এহসান সুমন, দৈনিক আমাদের কণ্ঠের শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি সাকির আহমদ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা সোহাইল আহমদ, প্রাক্তন মৌলভীবাজার জেলা সভাপতি মাওলানা সৈয়দ সাইফুর রহমান, মাওলানা মুহাম্মদ ফরহাদ সাইফুল্লাহ, সাবেক মৌলভীবাজার শহর সেক্রেটারি হাফেজ হাসান আহমদ চৌধুরী, সাবেক জেলা সেক্রেটারি মুফতি ইবরাহিম খলিল, খেলাফত মজলিস শ্রীমঙ্গল উপজেলা সভাপতি মাওলানা আয়াত আলী, বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন এর মৌলভীবাজার জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান, মুন্সিবাজার ধর্মপুর উম্মাহাতুল মুমিনীন মহিলা মাদরাসার শিক্ষাসচিব মাওলানা লুৎফুর রহমান জাকারিয়া তফাদার, বায়তুল আমান জামে মসজিদের ছানি ইমাম হাফেজ মাওলানা আবু মুছা, নতুন বাজার জামে মসজিদের ছানী ইমাম হাফেজ মুজাম্মিল হোসাইন মিলাদ, মুসলিমবাগ আল মদীনা জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা আব্দুর রহমান, বায়তুল ফালাহ জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা শাফায়েত উল্লাহ, সিন্দুরখান রোড এলাহী জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব মাওলানা নুরুল আনোয়ারসহ শ্রীঙ্গল উপজেলার বিভিন্ন মসজিদের ইমাম, মাদরাসা, স্কুল, কলেজের শিক্ষকবৃন্দ এবং নানা শ্রেণি পেশার বিপুল সংখ্যক মানুষ। জানাযা শেষে আব্বাকে কালিঘাট রোডের বাইতুল আমান জামে মসজিদ সংলগ্ন কবরস্থানে দাফন করা হয়।


শোক প্রকাশ :
আব্বার মৃত্যুতে বিভিন্ন মহল থেকে গভীর শোক জানিয়ে বার্তা পাঠানো হয়েছে। শোক প্রকাশ করেছেন শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মোঃ মহসিন মিয়া মধু। তিনি বলেন, সাইটুলা মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রিন্সিপাল মাওলানা মোজাহিরুল হক ছিলেন উপজেলার প্রবিণ আলেম। তিনি র্দীঘদিন মাদরাসা এবং মসজিদের খেদমতের পাশাপাশি বহুমুখি দ্বীনের খেদমতে করে গেছেন। তিনি ছিলেন প্রচারবিমুখ সহজ সরল একজন সজ্জন আলেম। তাঁর আদর্শ নীতি এবং কর্মকান্ডের মাধ্যমে তিনি মরেও আমাদের মাঝে অমর থাকবেন। শ্রীমঙ্গল ইমাম মুয়াজ্জিন পরিষদ এর সহ-সভাপতি, শ্রীমঙ্গল উপজেলা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ এর ইমাম ও খতিব মাওলানা হাফেজ ফেরদাউস আহমদ বলেন, সাইটুলা মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মোজাহিরুল হক ছিলেন প্রকৃত আকাবির। মুখলেছ বুযুর্গ আলেমদের মধ্যে অন্যতম এক বুযুর্গ আলেম তিনি। তাঁর দ্বীনি খেদমাতের পরিধি অনেক ব্যাপক। তার ইন্তেকালে জাতি একজন ন্যায়-নীতির ধারক বাহক ও নিষ্ঠাবান আলেমকে হারালো। তার এই শূন্যতা অপূরণীয়। বরুণার পীর শায়খুল হাদিস আল্লামা মুফতি রশিদুর রহমান ফারুক বর্ণভীর বড় ছেলে, আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় কমিটির নায়েবে আমীর ও শেখবাড়ি জামিয়ার ভাইস প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ আহমদ আফজল বর্ণভী শোক প্রকাশ করে বলেন, সাইটুলা মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রিন্সিপাল মাওলানা মোজাহিরুল হক ছিলেন উপজেলার প্রবিণ আলেম। তিনি জীবনভর দ্বীনের খেদমত কওে গেছেন। তাঁর জীবনের নেকআমলসমূহ কবুল করে তাকে জান্নাতুল ফেরদাউসে স্থান দান করার জন্য তিনি মহান আল্লাহর নিকট দোয়া করেন এবং তার শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে বলেন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা তাদেরকে এ শোকে ধৈর্য ধারণ করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহ তাআলা তাঁকে রহমতের মেঘমালা দিয়ে আবৃত করুন এবং জান্নাতের প্রশস্ত বাগিচায় স্থান দান করুন। বরুণা মাদরাসার সদরে নায়েবে মুহতামিম মাওলানা শেখ নুরে আলম হামিদী শোক প্রকাশ করে বলেন, প্রবীণ আলেমদের এভাবে চলে যাওয়া খুবই বেদনাদায়ক। ধাপে ধাপে ইলম ও আমলদার আলেমদের উঠিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে মূলত ইলম উঠিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এই আলেম মনীষীর ইন্তেকালে আমি গভীরভাবে শোকাহত। আমি তার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, ছাত্র-মুরিদ ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমদেনা প্রকাশ করছি। নুরুল কুরআন মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আহমদ বেলাল বলেন, দীনি শিক্ষার বিস্তার ও প্রসারে মাওলানা মোজাহিরুল হকের বিরাট অবদান রয়েছে। আমি তার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, ছাত্র-মুরিদ ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমদেনা প্রকাশ করছি। বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মিসেস মনোয়ারা খাতুর ভুইয়া ও কেন্দ্রী মহাসচিব মিজানুর রহমান সরকার শোকবার্তায় বলেন-সাইটুলা মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রিন্সিপাল মাওলানা মোজাহিরুল হক ছিলেন আদর্শ মানুষ গড়ার কারিগর। তিনি আজীবন কুরআন-হাদিস চর্চায় কাটিয়েছেন। জীবনে বহু ছাত্র তৈরি করেছেন। তাঁর দ্বীনি খেদমত এর ওসিলায় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থান বরাদ্দ করুন। শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সভাপতি বিশ্বজ্যোতি চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন সোহেল শোক প্রকাশ করে বিবৃতিতে বলেন, মরহুম মাওলানা মোজাহিরুল হক ধর্মের বাণী প্রচারে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। তিনি তাঁর ভালো কাজের বিনিময়ে সৃষ্টিকর্তা তাকে জান্নাত দান করুন। বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন মৌলভীবাজার জেলা সেক্রেটারি মনিরুল ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান শোক প্রকাশ করে বলেন, মাওলানা মোজাহিরুল হক ছিলেন মুখলিছ আলেম। উপজেলায় দ্বীনি শিক্ষা বিস্তারে তিনি বিশাল অবদান রেখেছেন। মসজিদ এবং মাদরাসার খেদমতে তিনি ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। আজীবন ইসলামের কাজ করে গেছেন। আল্লাহ তাঁরত্রুটি-বিচ্যুতি মাফ করে জান্নাতে উচ্চ আসনে স্থান দিন। এছাড়াও শোকপ্রকাশ করেছে আঞ্জুমানে হেফাজতে ইসলাম, উলামা পলিষদ. খেলাফত মজলিস, ছাত্র মজলিস, ব্যবসায়ী সমিতি, মৌলভীবাজার অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম, ইকরামুল মুসলিমীন মৌলভীবাজার, আবাবিল সাংস্কৃতিক ফোরাম মৌলভীবাজার, কিন্ডারগার্টেন শিক্ষক ঐক্য পরিষদ শ্রীমঙ্গল, বাংলাদেশ কিন্ডার এসোসিয়েশন শ্রীমঙ্গলসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সামাজিক সংগঠন। মাওলানা মোজাহিরুল হক ১৯৫৩ সালের ৮ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। পাকিস্তানের করাচি মাদরাসা থেকে ১৯৭০ সালে দাওরায়ে হাদিস কৃতিত্বের সাথে সম্পন্ন করেন। পাকিস্তানের হাফিজুল হাদিস আল্লামা আব্দুল্লাহ দরখাস্তি রহ. এর কাছে শিক্ষা এবং বাইয়াতগ্রহণ করেন। ইলমে দ্বীনের সর্বোচ্চ ডিগ্রি সম্পন্ন করে দেশে এসে প্রথমে হবিগঞ্জের একটি মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। এরপর সত্তর দশকে শ্রীমঙ্গলের জুলেখা নগর চা বাগান মসজিদে ইমামতি পদে যোগদেন। ১৯৮৯ সালে শায়খে গহরপুরী রহ. এর নির্দেশে শ্রীমঙ্গল উপজেলার সিন্দুরখান ইউনিয়নের সাইটুলা গ্রামে ইসলামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম মাদরাসা প্রতিষ্ঠা কনের তিনি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি মুহতামি (প্রিন্সিপাল) পদে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যুকালে আব্বা ৩ ছেলে ও ৬ মেয়েসহ নাতী-নাতনী, বহু ছাত্র ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৬৯।


আব্বার অসুস্থতার পর যারা যেভাবে খোঁজখবর নিয়েছেন, দোয়া করেছেন, জানাযা, দাফনসহ নানাভাবে এগিয়ে এসেছেন সবার প্রতি অশেষ কৃতজ্ঞতা আদায় করছি। প্লিজ, সবাই আব্বার জন্য দোয়া করবেন, মহান আল্লাহ যেনো জান্নাতুল ফেরদাউস দাান করুন।

 

লেখক : এহসান বিন মুজাহির, শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি, একুশে সংবাদ ডটকম

 

একুশে সংবাদ/এনএস

 

Link copied!