জুলাই আন্দোলনকে পণ্ড করতে ও শিক্ষার্থীদের ওপর নানা ছক আঁকতে বিতর্কিত হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ‘আলো আসবেই’-তে সক্রিয় ভুমিকা পালন করেন অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি। বিগত সরকারের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠা এই অভিনেত্রীর শনির দশা লাগতে থাকে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর। বলা বাহুল্য, এখন একেবারে কোণঠাসা অবস্থায় আছেন জ্যোতি; পদে পদে হারাচ্ছেন বিভিন্ন জায়গা থেকে নিজের অবস্থান।
‘আলো আসবেই’ নামের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের চ্যাট ফাঁস হাওয়ার পর ওই গ্রুপে থাকা শিল্পীরা সামাজিকভাবে অগ্রহণযোগ্য হয়ে পড়ছেন। তাদেরই একজন অভিনেত্রী জ্যোতিকা জ্যোতি। শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে ছিল ঘনিষ্ঠতা। আওয়ামী লীগের দলীয় পদেও আছেন তিনি। এসব কারণেই ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে ছিলেন কোণঠাসা। হারান বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির গবেষণা ও প্রকাশনা বিভাগের পরিচালকের পদও।
তারপর থেকে খেসারত দিয়ে যেতে হচ্ছে তাকে। সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতে পারছেন না, সিনেমা থেকে বাদ পড়েছেন, বাড়িওয়ালা একদিনের নোটিশে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন। ফেরত দেননি দুই মাসের অগ্রিম ভাড়া। সামাজিক মাধ্যমে এভাবেই নিজের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন জ্যোতি।
চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়ায় আফসোস নেই উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) নিজের ফেসবুকে জ্যোতি লেখেন, এক সিনেমায় কাস্টিং করল, পরিচালক বাসায় এসে গল্প শোনালেন, জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে শুটিং। চরিত্র নিয়ে ভাবনা শুরু হলো, অনেকদিন পর শুটিং করব, ভালোলাগা শুরু হলো। অফিসিয়াল ফরমালিটিস কমপ্লিট করতে হবে এমন কথা হলো, তার ৩ দিন পরই পত্রিকায় দেখলাম এক বিদেশি অভিনেত্রীকে কাস্টিং করা হয়েছে আমার জায়গায়!
এরপর লেখেন, ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল হবে,সেখানে কোনো না কোনো দায়িত্বে থাকার কথা ছিল। আগেও ছিলাম।পরে শুনলাম দায়িত্ব তো দূরের কথা, ফেস্টিভ্যালে আমি না গেলেই নাকি ভালো! এক আপার মেয়ের বিয়ে। গায়ে হলুদ, রং খেলা, বিয়ে, বউভাত। কতশত প্ল্যান! আরেক আমন্ত্রিত অভিনেত্রী গেস্ট বললেন জ্যোতিকা জ্যোতি এলে তিনি আসবেন না!
জ্যোতির কথায়, এপ্রিলে এক নতুন বাসায় শিফট করলাম। আমার কুকুর আছে বলে নিলাম। তিনি আমাকে আশ্বস্ত করলেন কোনো সমস্যা নেই। বরং আমার পরিচয় তার বাসার ভাড়াটিয়া হিসেবে তাকে আরও গর্বিত করবে বলে জানালেন। জুলাইয়ে যখন দেশে তুমুল গণ্ডগোল তখন বাড়িওয়ালা বললেন আমার নিরাপত্তার দায়িত্ব তার। আগস্টের ৬ তারিখ জানালেন, আমাকে নিয়ে সমস্যা হচ্ছে তাই আমি যেন কুকুর নিয়ে বাসার নিচে না যাই। তবে তার কথায় মনে হলো বাসা ছেড়ে দিলেই ভালো।
অবশেষে বাড়িওয়ালা একদিনের নোটিশে বের করে দিলেন উল্লেখ করে জ্যোতি লেখেন, ১৬ আগস্ট আমাকে ফোন করে বললেন আমি যেন আগামীকালই বাসা ছেড়ে দিই। তিনি কোনোকিছুতেই আমাকে সময় দিতে রাজি না। এক দিনের মধ্যে ওই বাসায় মালপত্র রেখে আমি আমার কুকুর নিয়ে একটি গেস্ট হাউজে প্রায় ১৩ দিন থেকে নতুন বাসা নিলাম। আমার এক বন্ধুকে পাঠিয়ে মালপত্র সরালাম দিন দশেক পর। কিন্তু তিনি আমার ২ মাসের এডভান্স ফেরত দিলেন না।
সবশেষে প্রশ্ন রেখে জ্যোতি লিখেছেন, এগুলো আসলে কী? ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না! এসব পোহাতে হবে কতদিন?
একুশে সংবাদ/ এস কে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

