চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার সুটিয়া-শ্রীরামপুর সড়কের পূর্ব পাশে বিস্তৃত চেচোগাড়ি বিল একসময় অতিথি পাখির নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিচিত ছিল। হাসাদাহ, সুটিয়া ও শ্রীরামপুর এই তিন গ্রামের সংযোগে গড়ে ওঠা বিলটি অতীতে প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর থাকলেও বর্তমানে প্রায় মৃতপ্রায়। অধিকাংশ জায়গায় ধান চাষ হয় এবং বছরের বেশিরভাগ সময় পানি থাকে না। যদিও সামান্য অংশে পানি থাকলেও বিলের প্রাকৃতিক পরিবেশে নির্ভরশীল মাছ ও স্থানীয় পাখির আনাগোনা আগে চোখে পড়ার মতো ছিল।
তবে দীর্ঘদিন ধরে নির্বিচারে পাখি শিকারের কারণে বিলটি আজ প্রায় পাখিশূন্য হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা জানায়, সুটিয়া গ্রামের মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে রেজাউল শীত শীতকালীন তিন মাস ধরে বিলের বিভিন্ন স্থানে কারেন্ট জাল পেতে পাখি শিকার করেন। জালের পাশে তিনি সাদা পলিথিন দিয়ে অস্থায়ী তাবু বানিয়ে নিয়মিত শিকার কাজে অবস্থান করেন। এসব জালে স্থানীয় উপকারী পাখি যেমন ফিঙ্গেরাজা, শালিকসহ অসংখ্য প্রজাতির পাখি আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে। এর ফলে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।
পরিবেশবিদরা বলেন, পাখি শুধু জীববৈচিত্র্যের অংশই নয়, কৃষির জন্যও অত্যন্ত উপকারী। দেশের খালে-বিলে অতিথি পাখির আগমন গ্রামীণ পরিবেশের সৌন্দর্য ও প্রাণবন্ততা বৃদ্ধি করে।
সচেতন মহল দাবি জানাচ্ছে, চেচোগাড়ি বিলে এ ধরনের শিকার বন্ধে স্থানীয় প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর এবং বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগকে দ্রুত সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে বিল পরিদর্শন করে অবৈধ জাল সংগ্রহ ও ধ্বংস, শিকারিদের আইনের আওতায় আনা এবং ভবিষ্যতে এমন কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে নিয়মিত মনিটরিংসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি।
তারা সতর্ক করেন, পাখি ও প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষা করতে না পারলে চেচোগাড়ি বিল হারিয়ে যাবে এলাকার এক মূল্যবান পরিবেশগত সম্পদ।
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

