AB Bank
  • ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৫, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

সাতক্ষীরা-১ আসনে জামায়াতের হেভিওয়েট প্রার্থী অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহকে হারানো অসম্ভব



সাতক্ষীরা-১ আসনে জামায়াতের হেভিওয়েট প্রার্থী অধ্যক্ষ ইজ্জত উল্লাহকে হারানো অসম্ভব

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সীমান্তবর্তী উপজেলা তালা ও কলারোয়া নিয়ে গঠিত সাতক্ষীরা-১ আসনে নির্বাচনী উত্তাপ তীব্র রূপ ধারণ করেছে। চার মাস আগে জামায়াত সম্ভাব্য প্রার্থী ঘোষণা করলে মাঠ ইতিমধ্যেই গরম হয়ে গেছে।

জামায়াতের ঘাঁটি হিসাবে পরিচিত সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ মনোনয়ন পাওয়ায় তৃণমূলের কর্মীরা উচ্ছ্বসিত ও উজ্জীবিত।

স্থানীয়রা বলছেন, রাস্তাঘাট, জলাবদ্ধতা, কর্মসংস্থান, মাদক দমন এবং শিক্ষার উন্নয়নই এবারের নির্বাচনের মূল দাবি। সবকিছু মিলিয়ে সাতক্ষীরা-১ আসন আবারও জেলার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসন হিসেবে উদীয়মান।

এবার মাঠে সবচেয়ে বেশি আলোচনা চলছে অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ কে নিয়ে। এলাকাজুড়ে তার প্রচারণা এবং নির্বাচনী কার্যক্রম এখন ভোটারদের মূল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। অধ্যক্ষ নিজে রাজনৈতিক পরিচয়, অতীত কাজ এবং এলাকার উন্নয়ন পরিকল্পনা তুলে ধরে ভোটারদের কাছে নিজের যোগ্যতা প্রমাণে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সাতক্ষীরা-১ আসনের রাজনৈতিক ইতিহাসও বেশ সমৃদ্ধ। তালা, কলারোয়া ও পাটকেলঘাটা অঞ্চল নিয়ে গঠিত এই আসনে রয়েছে ২৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা। এবারের নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ ৯৩ হাজার, যা পূর্ববর্তী নির্বাচনের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ আসনটি সবসময়ই হাতবদল হয়েছে বড় দলের মধ্যে—কখনো আওয়ামী লীগ, কখনো বিএনপি, কখনো জামায়াত, আবার কখনো জাতীয় পার্টি। গত চার দশকে এই আসনের নির্বাচনী ইতিহাসে বহু ওঠানামা ঘটেছে। ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগের সৈয়দ কামাল বখত সাকী, ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির সৈয়দ দিদার বখত, ১৯৯১ সালে জামায়াতের আনসার আলী, ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিএনপির হাবিবুল ইসলাম হাবিব, জুনে আওয়ামী লীগের সৈয়দ কামাল বখত সাকী নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের বি. এম. নজরুল ইসলাম, ২০০১ সালে বিএনপির হাবিবুল ইসলাম হাবিব, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের শেখ মুজিবুর রহমান, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে ওয়ার্কার্স পার্টির মুস্তফা লুৎফুল্লাহ, সর্বশেষ ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগের ফিরোজ আহমেদ স্বপন নির্বাচিত হন।

বিগত চার দশকের এই ওঠানামা প্রমাণ করে, সাতক্ষীরা-১ সবসময়ই প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং গুরুত্বপূর্ণ। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন—আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি প্রার্থীর মাঠে নেই, যা পুরো নির্বাচনী পরিস্থিতি বদলে দিয়েছে।

অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ বলেন, “তালা-কলারোয়ায় জলাবদ্ধতা ভয়াবহ। এটি নিরসনের জন্য বড় ধরনের প্রকল্প একমাত্র সমাধান। রাস্তাঘাটের বেহাল দশা, অবকাঠামোবিহীন স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা, হাসপাতালের সীমিত সেবা—এসব উন্নয়ন করাই আমার পরিকল্পনা।”

জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ইজ্জত উল্লাহ দীর্ঘ রাজনৈতিক পথ অতিক্রম করে দলটির শীর্ষ পর্যায়ে পৌঁছেছেন। ১৯৭৫ সালে ইসলামী সাহিত্য পড়া শুরু করে ইসলামী রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৮০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের সদস্য হন। পরবর্তীতে জেলা সেক্রেটারি, জেলা আমীর ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্যসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২০ সাল থেকে তিনি কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য। ব্যক্তিগতভাবে তিনি কলারোয়া উপজেলার ফয়জুল্লাহপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার পরিবারে একজন ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে।

অধ্যক্ষ বলেন, “৫ আগস্টের পরও একদল সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও দখলদার সাধারণ মানুষের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। মানুষ যাতে নিরাপদে থাকতে পারে—এটাই নির্বাচিত হলে আমার প্রথম লক্ষ্য। শান্তিতে ঘুমাতে পারবে, ব্যবসা করতে পারবে—এটাই চাই।”

নির্বাচনী মাঠে দুই প্রার্থীর অতীত, অভিজ্ঞতা ও উন্নয়ন-দর্শন ঘিরে ভোটারদের মধ্যে তুমুল আলোচনা চলছে। এই আসনের লড়াই হবে শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন বনাম দীর্ঘ রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা—এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় ভোটাররা।

 

একুশে সংবাদ//এ.জে

Link copied!