AB Bank
  • ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৫, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

চরভদ্রাসনে মুড়িকাঠা পেঁয়াজ আবাদের ধুম, গুটি পেঁয়াজের চড়া দামে কৃষকরা হতাশ



চরভদ্রাসনে মুড়িকাঠা পেঁয়াজ আবাদের ধুম, গুটি পেঁয়াজের চড়া দামে কৃষকরা হতাশ

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পেঁয়াজ উৎপাদনের জন্য খ্যাত। পদ্মা নদী বেষ্টিত এ উপজেলার পললভূমিতে পেঁয়াজের বাম্পার ফলন হয়ে থাকে। তাই প্রতি বছরের ন্যায় এবারও রবি মৌসুমে মুড়িকাঠা পেঁয়াজ আবাদের ধুম লেগেছে প্রতিটি কৃষক পরিবারে। তবে এ বছর গুটি পেঁয়াজের চড়া মূল্যের কারণে কৃষকরা হতাশা প্রকাশ করলেও থেমে নেই আবাদ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার চারটি ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার কৃষক পরিবার চলতি মৌসুমে গুটি পেঁয়াজ রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছে। আবাদি জমি সাজানো, বাজার থেকে গুটি পেঁয়াজ সংগ্রহ, সার ও মজুর কিনে এনে জমিতে রোপণসহ সেচকার্যে দিনরাত ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কিষাণ-কিষাণীরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় প্রায় ১ হাজার ৫০০ একর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হচ্ছে। এর মধ্যে চরভদ্রাসন সদর ইউনিয়নে প্রায় ৪২০ একর, গাজীরটেক ইউনিয়নে প্রায় ৪১০ একর, চরহরিরামপুর ইউনিয়নে প্রায় ৪০০ একর এবং চরঝাউকান্দা ইউনিয়নে প্রায় ২৭০ একর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হচ্ছে। তবে বাজারে গুটি পেঁয়াজের উচ্চমূল্যের কারণে অনেকেই পেঁয়াজ আবাদে আগ্রহ হারাচ্ছেন।

মঙ্গলবার উপজেলার চরহরিরামপুর ইউনিয়নের চরশালেপুর গ্রামের পেঁয়াজ চাষি সালাম ফকির (৫৮) জানান, “বাজারে এক মন গুটি পেঁয়াজ প্রায় ৪ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক বিঘাত (৩৩ শতাংশ) জমিতে মুড়িকাঠা পেঁয়াজের আবাদ করতে প্রায় ১০ মন গুটি পেঁয়াজ লাগে। সেই সঙ্গে জমি সাজানো, সার, সেচ ও মজুর মিলিয়ে প্রায় ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়।”
তিনি আরও জানান, “এ বছর পেঁয়াজ চাষিরা ডিএপি সার সংকটে ভুগছেন। সরকারি বরাদ্দ কম হওয়ায় ডিলারদের কাছে ডিএপি সার পাওয়া যায় না। তাই কৃষকরা বাধ্য হয়ে ১০৫০ টাকা দরের প্রতি বস্তা সার বাইরে থেকে ১৮০০ টাকা দিয়ে কিনে এনে পেঁয়াজের আবাদ করছেন।”

উপজেলা সদর বাজার ঘুরে জানা যায়, প্রতি মন মোটা গুটি পেঁয়াজ বীজ ৩ হাজার ৮০০ টাকা এবং চিকন গুটি পেঁয়াজ প্রায় ৫ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অনেক দূর-দূরান্ত থেকে কৃষক ও পাইকাররা এসে এ বাজার থেকে গুটি পেঁয়াজ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

উপজেলার চরঝাউকান্দা ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের কৃষক আবজাল বিশ্বাস (৪২) বলেন, “মৌসুমে পেঁয়াজ আবাদ করতে খরচ যাই হোক, বাপ-দাদার পেশা বলে জমি অনাবাদি রাখা যাবে না।”
তিনি আরও জানান, “পদ্মার চরের এক বিঘাত (৩৩ শতাংশ) জমিতে কমপক্ষে ১২০ মন পেঁয়াজ উৎপাদন হবে। উৎপাদন মৌসুমে বাজারদর ঠিক থাকলে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে লোকসানের সম্ভাবনা নেই।”

একই দিন আরেক কৃষক আলম মিয়া (৫০) বলেন, “যেসব কৃষকের ঘরে গুটি পেঁয়াজ মজুদ আছে এবং মাঠে নিজেরা কাজ করতে পারে, কেবলমাত্র তারাই পেঁয়াজ আবাদ করে প্রচুর লাভবান হতে পারবে।”

তবে প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও এ বছর উপজেলার কৃষকরা পেঁয়াজ আবাদে থেমে নেই। নিজেদের সর্বস্ব বিনিয়োগ করে তারা জমিতে মুড়িকাঠা পেঁয়াজের আবাদ করে চলেছেন। উপজেলার বেশিরভাগ আবাদি জমি পদ্মা নদীর আশপাশের হওয়ায় পললবাহিত মাটিতে পেঁয়াজ উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত উপযোগী বলে জানা গেছে।

 

একুশে সংবাদ//এ.জে

Link copied!