কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর–ভেড়ামারা) আসনে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মহাসড়কে শুয়ে অবরোধ করেছেন সাবেক তিনবারের এমপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব অধ্যাপক শহীদুল ইসলামের সমর্থকরা। রোববার বিকেলে মিরপুর উপজেলার বহলবাড়ীয়া বাজারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
বেলা সাড়ে তিনটার দিকে কুষ্টিয়া–রাজশাহী মহাসড়কের বহলবাড়ীয়া বাজার এলাকায় নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের বিভিন্ন ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা দুই ধারে অবস্থান নেন। মহাসড়ক অবরোধ করে তাঁরা প্রায় এক ঘণ্টা ধরে মিছিল, স্লোগান ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে তাঁরা সড়কের মাঝখানে শুয়ে প্রতিবাদ জানান।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার রাগিব রউফ চৌধুরীকে। তিনি রাজনীতির মাঠে নতুন এবং বিগত আন্দোলন-সংগ্রামে তাঁকে কখনও মাঠে দেখা যায়নি। আইনজীবী পেশার কারণে তিনি বেশির ভাগ সময় ঢাকায় অবস্থান করেছেন, তৃণমূল নেতা-কর্মী কিংবা সাধারণ মানুষের সঙ্গে তাঁর তেমন যোগাযোগ নেই। এ কারণে তৃণমূলে তাঁর প্রতি ‘আস্থাহীনতা’ তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তাঁরা।
মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীরা বলেন, সাবেক তিনবারের সংসদ সদস্য অধ্যাপক শহীদুল ইসলামকে উপেক্ষা করে অরাজনৈতিক ব্যক্তিকে প্রার্থী করায় সংগঠনে ভাঙন, কর্মীদের হতাশা এবং নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তাঁদের ভাষ্য, যারা বছরের পর বছর মামলা–হামলা মোকাবিলা করেছেন, লাঠির সামনে দাঁড়িয়েছেন, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন—সেসব কঠিন সময়ে অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম ঢাল হয়ে তৃণমূলের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তাই কুষ্টিয়া-২ আসনের প্রার্থী হওয়ার অধিকার তাঁরই।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমরা যে নেতাকে চিনি, যিনি দীর্ঘদিন ধরে দলের পক্ষে কাজ করেছেন, সেই ত্যাগী নেতা অধ্যাপক শহীদুল ইসলামকে বাদ দিয়ে মনোনয়ন দিলে তৃণমূল সেটা কখনো মেনে নেবে না। আমরা দল ভাঙতে চাই না, কিন্তু তৃণমূলের ঘাম–রক্ত–ত্যাগের মূল্যায়ন না হলে কর্মীরা হতাশ ও ক্ষুব্ধ হবেন।”
কর্মসূচির সময় মহাসড়ক অবরোধ থাকায় কুষ্টিয়া–রাজশাহী সড়কে কয়েক কিলোমিটারজুড়ে যানজট সৃষ্টি হয়। বিক্ষোভ শেষে নেতা-কর্মীরা ঘোষণা দেন, বর্তমান প্রার্থীর মনোনয়ন দ্রুত প্রত্যাহার করে অধ্যাপক শহীদুল ইসলামকে প্রার্থী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করা হলে তাঁদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পৌর বিএনপির সভাপতি আব্দুর রশিদ, উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক বাবু, উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি আজাদুর রহমান আজাদ, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক সুলতান আলী, জেলা যুবদলের সহসভাপতি এমাদুল হক এমদাদ, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মালেক ও মনোয়ার হোসেন, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক সংগ্রাম খান জিল্লু, যুগ্ম আহ্বায়ক নাসিরুজ্জামান রানা, বহলবাড়ীয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহজামাল মল্লিক, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম হারছেন, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক এনা বিশ্বাস, ধুবইল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি বিল্লাল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তার, উপজেলা ছাত্রনেতা ফরিদুল ইসলাম প্রমুখ।
একুশে সংবাদ//এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

