কুমিল্লার তিতাসে ভবনের পানি নিষ্কাশন নিয়ে দু’পক্ষের বাকবিতণ্ডার ঘটনায় এক প্রবাসী যুবকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চাঁদাবাজির অভিযোগে মিথ্যা স্ট্যাটাসের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কলাকান্দি ইউনিয়নের কাউনিয়ার চর গ্রামে।
জানা গেছে, কাউনিয়ার চর গ্রামের বাসিন্দা বিল্লাল মুন্সি তার নিজ জায়গায় একটি বিল্ডিং নির্মাণের কাজ করছেন। কাজ চলমান থাকায় বৃষ্টির পানি ছাদে জমে থাকায় সেটির নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় একই গ্রামের প্রতিবেশী মোঃ জলিল মিয়ার জায়গার সীমানার অংশে পানি চলে আসে। এ নিয়ে জলিল মিয়ার স্ত্রী মোসাঃ মনোয়ারা বেগমের সঙ্গে বিল্লাল মুন্সি ও তার বড় ভাই মোঃ হানিফ মুন্সির বাকবিতণ্ডা হয়। দু’পক্ষের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছুদিন আগে ভাইরাল হয়।
ঘটনাকে কেন্দ্র করে জলিল মিয়ার নাতী, একই ইউনিয়নের মাছিমপুর মধ্যপাড়া গ্রামের প্রবাসী মোঃ হাসান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিল্লাল মুন্সি, হানিফ মুন্সি ও তাদের পরিবারসহ স্থানীয় এলাকার যুবকদের জড়িয়ে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কার্যকলাপ এবং এলাকায় অশান্তি সৃষ্টির অভিযোগ তুলে বিভ্রান্তিকর ও মানহানিকর মিথ্যা স্ট্যাটাস দেন। এ নিয়ে স্থানীয় সচেতন মহল তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
স্থানীয় সচেতন মহলের প্রবীণ ব্যক্তিবর্গ ও যুবকরা সাংবাদিকদের জানান, বিল্লাল এবং তার বড় ভাই হানিফ মুন্সির সঙ্গে জলিল মিয়ার স্ত্রীর মধ্যে বিল্ডিংয়ের পানি নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়েছে। তবে দু’পক্ষই সমস্যার সমাধানের জন্য সামাজিকভাবে কাউকে অবহিত করেননি।
উপরোক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে জলিল মিয়ার নাতী হাসান বিদেশ থেকে ফেসবুকে লিখেছেন, “কাউনিয়ার চর গ্রামের যুবকরা চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী। বিল্লাল ও তার ভাই হানিফ মুন্সি এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালান।” তবে এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
স্থানীয়রা বলছেন, তাদের দুই পরিবারের মধ্যে সমস্যার প্রেক্ষাপটে বাইরের লোকজনকে জড়িয়ে মিথ্যা অভিযোগ তুলে গ্রামের সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে। তারা এ ধরনের মিথ্যা তথ্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন এবং সুষ্ঠু বিচার কামনা করছেন।
এ বিষয়ে হানিফ মুন্সি বলেন, “জলিল মিয়া ৩০ বছর যাবত আমার জায়গার ওপর দিয়ে পাইপলাইন ব্যবহার করে আমার পুকুরে তার বাড়ির বিল্ডিংয়ের পানি ফেলে আসছেন এবং সিমানায় ময়লা আবর্জনা জমিয়ে রেখেছেন। ধৈর্য ধরে বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করছি। আমার ছোট ভাই বিল্লাল একটি নতুন বিল্ডিং নির্মাণ করছেন, যার পানি নিষ্কাশনের পাইপলাইন এখনও স্থাপিত হয়নি। তাই বৃষ্টির পানি জমে জলিল মিয়ার জায়গায় চলে গেছে। এ নিয়ে জলিল মিয়ার স্ত্রীর সঙ্গে আমার ভাই বিল্লালের বাকবিতণ্ডা হয়। আমি গিয়ে দু’জনকে থামাই, কিন্তু জলিল মিয়ার স্ত্রী নানা খারাপ ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। পরে জানতে পারি, স্থানীয় গ্রামবাসীকে জড়িয়ে আমার এবং আমার পরিবারের ওপর মিথ্যা অভিযোগ ফেসবুকে দেওয়া হয়েছে। আমি এ মিথ্যা পোস্টের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং স্থানীয় সমাজ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সুষ্ঠু বিচার চাই।”
জলিল মিয়ার পরিবার অবশ্য বলেছে, “আমার স্ত্রীর সঙ্গে বিল্লালের বিল্ডিংয়ের পানি আমাদের জায়গায় পড়া নিয়ে সামান্য কথাকাটি হয়েছে। কোনো হাতাহাতি বা মারামারি ঘটেনি। আমার নাতী বিদেশে থাকায় রাগে না ভেবেই ফেসবুকে এসব লিখেছেন। আমাদের কাছে কেউ চাঁদা দাবি করেনি।”
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

