চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে হত্যা করার ঘটনায় দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ মাস পর আদালতের নির্দেশে কবর থেকে উত্তোলন করা হলো চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার সেনেরহুদা গ্রামের গাফফার আলী আকাশের মরদেহ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সামিউল আজম ও পিবিআইয়ের পরিদর্শক মনিরুজ্জামানের উপস্থিতিতে মরদেহ উত্তোলন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ২১ মে বিকেলে অফিস শেষে চুয়াডাঙ্গা রেলস্টেশন থেকে খুলনাগামী ডাউন ৭১৬ কপোতাক্ষ এক্সপ্রেস ট্রেনের ‘ঙ’ কোচে চড়ে বাড়ি ফিরছিলেন চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মচারী সেনেরহুদা গ্রামের গাফফার আলী ওরফে আকাশ। দর্শনা হল্ট স্টেশনে নেমে সড়ক পথে বাড়ি ফেরার কথা ছিল তার। কিন্তু জয়রামপুর রেলস্টেশনের অদূরে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।
রেললাইনের পাশে রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা তার পকেটে থাকা ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করে ফেসবুকে পোস্ট দেন। প্রথমে ধারণা করা হয়, আকাশ অসাবধানতাবশত ট্রেন থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। শান্ত-ভদ্র স্বভাবের হওয়ায় কেউ ভাবেনি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হতে পারে।
পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় ওই রাতেই রেলওয়ে পুলিশ মরদেহ হস্তান্তর করে। পরদিন সকালে জানাজা শেষে তাকে সেনেরহুদা জান্নাতুল খাদরা কবরস্থানে দাফন করা হয়।
তবে পরে ঘটনাটি ভিন্ন মোড় নেয়। ট্রেনে থাকা কয়েকজন যাত্রীর মাধ্যমে জানা যায়, এটি দুর্ঘটনা নয়—আকাশকে পরিকল্পিতভাবে ট্রেন থেকে ফেলে হত্যা করা হয়েছে।
ঘটনার পর নিহতের পিতা জিন্নাত আলী বাদী হয়ে ২৬ মে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা আমলী আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় অভিযুক্ত করা হয়—ওইদিন ডাউন কপোতাক্ষ এক্সপ্রেসে দায়িত্বে থাকা জুনিয়র টিটিই লালন চক্রবর্তী (৪২), জিআরপির এসআই পারভেজ (৩৬), কনস্টেবল কাদের (৪০), অ্যাটেনডেন্ট মিলন (৩৭) ও সোহাগ মিয়াসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪–৫ জনকে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ট্রেনে বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা আদায় ও এর প্রতিবাদ করায় আকাশের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে উল্লিখিত আসামিসহ আরও কয়েকজন মিলে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে তাকে হত্যা করে।
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

