পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের চর রায়সাহেব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বিগত ২৫ বছরেও সংস্কার না হওয়ায় এখন মৃত্যুপর্যায়ের ঝুঁকিতে রয়েছে। জরাজীর্ণ ভবনের নিচে প্রতিদিন প্রাণভয়ে ক্লাস করছে ১৯২ জন কোমলমতি শিক্ষার্থী।
উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের ২৩০ নং চর রায়সাহেব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ২০০০ সালে নির্মিত হয় চার কক্ষের একতলা একটি ভবন। দীর্ঘ দুই যুগে কোনো সংস্কার বা রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় ভবনের অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। ফলে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভবনের দেয়ালে বিস্তীর্ণ ফাটল, ছাদের পলেস্তারার টুকরো খসে পড়ছে, বিভিন্ন স্থানে বেরিয়ে এসেছে মরিচাধরা রড। সামান্য নড়াচড়ায় পুরো ভবন দুলে ওঠে, শ্রেণিকক্ষের দরজায় ধাক্কা লাগলেই দোদুল্যমান হয়। বর্ষায় ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে, বই-খাতা ভিজে যায়, হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি জমে বিদ্যালয় মাঠেও চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
শিক্ষার্থী সাইমুন ও লামিম জানায়, “আমরা সব সময় ভয় পাই, কখন ছাদের প্লাস্টার মাথায় পড়ে যাবে।”
সহকারী শিক্ষক রিফাত মীন বলেন, “দেয়ালের প্লাস্টার খসে পড়ছে, ছাদ চুইয়ে পানি পড়ছে। শিক্ষার্থীদের নিয়ে আতঙ্কের মধ্যেই ক্লাস নিতে হয়।”
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা জানান, “বর্ষাকালে ক্লাসরুমে পানি জমে গেলে পাঠদান প্রায় অচল হয়ে যায়।”
অভিভাবকরা জানান, সন্তানদের এমন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠানো মানেই প্রতিনিয়ত প্রাণ হাতে নিয়ে স্কুলে পাঠানো। তাই দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানান তারা।
প্রধান শিক্ষিকা কলি আক্তার বলেন, “বিদ্যালয়ের নাজুক অবস্থা সম্পর্কে ইতোমধ্যে উপজেলা শিক্ষা অফিসে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। বড় ধরনের মেরামতের আশ্বাস দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।”
উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা কালাম হোসেন জানান, “বিদ্যালয়ের জন্য নতুন ভবনের প্রস্তাব শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি আগামী মার্চ বা এপ্রিল মাসেই নতুন ভবনের কাজ শুরু হবে।”
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

