সকালের মৃদু রোদে স্নাত সরকারি মুকসুদপুর কলেজ। গেটে বেলুনের মালা, আকাশে উড়ছে রঙিন ফেস্টুন। তার ভেতর দিয়েই প্রবেশ করছে নতুন মুখগুলো। চোখে বিস্ময়, মনে উচ্ছ্বাস। কেউ প্রথমবার ক্যাম্পাসের আঙিনায়, কেউ মঞ্চের দিকে তাকিয়ে ভবিষ্যতের কোনো স্বপ্ন দেখছে।
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) কলেজ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় নবীনবরণ ২০২৫, পুরস্কার বিতরণ ও বার্ষিক সাহিত্য-সাংস্কৃতিক উৎসব।
এ যেন শিক্ষার্থীদের জন্য এক রঙিন উৎসবের দিন। হাসি, আলাপ, সেলফি আর বন্ধুদের কোলাহলে পুরো ক্যাম্পাস পরিণত হয় এক প্রাণচঞ্চল অঙ্গনে।
প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ লুৎফর রহমান। তাঁর কণ্ঠে ছিল গভীর অনুপ্রেরণার সুর, "শিক্ষার আলো শুধু জ্ঞানের পথ দেখায় না, এটি মানুষকে গড়ে তোলে আলোকিত নাগরিক হিসেবে। তোমরাই আগামী দিনের বাংলাদেশ, তোমাদের হাতেই এই জাতির ভবিষ্যৎ।"

উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক তাপস কুমার কর্মকারের সভাপতিত্বে এবং প্রভাষক কবি মাহবুব হাসান বাবরের সঞ্চালনায় বক্তৃতা করেন মুকসুদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তফা কামাল, প্রভাষক ড. কবির উদ্দিন আহম্মেদ, একাদশ শ্রেণী ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম, সরকারি মুকসুদপুর কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মেহেদী মুন্সী, সাধারণ সম্পাদক মহসিন মোল্যা সহ আরও অনেকে।
সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। কবিতা, গল্প, আবৃত্তি, গান ও নৃত্যের মনোমুগ্ধকর পরিবেশনায় মুগ্ধ হন দর্শক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থী সবাই। প্রতিটি পরিবেশনায় ফুটে ওঠে তারুণ্যের সৃজনশীলতা আর উদ্যম।
বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় পুরস্কার বিতরণী। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা। মঞ্চে উঠেই কেউ হাসছে, কেউ আবেগে কেঁপে উঠছে। তাদের চোখে সাফল্যের দীপ্তি, মুখে আত্মবিশ্বাসের আলো।
প্রভাষক কবি মাহবুব হাসান বাবরের সঞ্চালনায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কলেজের শিক্ষার্থীরা তখন পুরো প্রাঙ্গণ জুড়ে ছড়িয়ে দেয় উচ্ছ্বাসের তরঙ্গ। গানের সুর, নাচের ছন্দ আর তালি-ধ্বনিতে মুখর হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস।
এই উৎসব শুধু নতুন শিক্ষার্থীদের বরণ নয়, বরং এটি একটি প্রজন্মের নবজাগরণের প্রতীক। শিক্ষার্থীদের চোখে স্বপ্ন, মনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা—জ্ঞান, সৃজনশীলতা ও মানবিকতার পথে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার।
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

