কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে চুরির ঘটনা বেড়েই চলেছে। গত কয়েক মাসে একের পর এক চুরির ঘটনায় গ্রামবাসির মধ্যে চরম উদ্বেগ বিরাজ করছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ওই গ্রামের মানুষ। কখন যেন নিজের কষ্টে অর্জিত সম্পদ চুরি হয়ে যায়—এমন আশঙ্কায় দিন পার করছেন তারা।
গ্রামবাসি সূত্রে জানা গেছে, গভীর রাতে বসতবাড়ির ঘর থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র ও গবাদি পশু পর্যন্ত চুরি হচ্ছে। রাত হলেই গ্রামে চোরের আতঙ্ক নেমে আসে।
সম্প্রতি এলাকায় একাধিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। মেছবাহুল আলম নামে এক ব্যক্তির গরু, সেচ পাম্প ও বাইসাইকেল চুরি হয়েছে। বাদশা মিয়ার বাড়ি ফাঁকা থাকায় রাইস কুকার ও ফ্যান চুরি যায়। মুক্তার আলীর একটি ছাগল এবং ছাত্তার আলীর পানির মোটরও চুরি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, বাদশা মিয়ার চুরি হওয়া রাইস কুকারটি তার প্রতিবেশি আবুবকর নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে পাওয়া যায়। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, রাইস কুকারটি একই এলাকার আমিনুর রহমানের মাদকাসক্ত ছেলে সজিব মিয়ার কাছ থেকে কিনেছেন। পরে এগুলো সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও গ্রাম পুলিশের হেফাজতে রাখা হয়েছে।
গত ১৮ অক্টোবর (শনিবার) রাতে পাইকেরছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক সরকারের উপস্থিতিতে গ্রাম্য সালিশি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সালিশে উপস্থিত একাধিক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ওই বৈঠকে সজিব মিয়া চুরির কথা স্বীকার করেন। তবে বৈঠকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ায় কোনো মীমাংসা করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তী ২৪ অক্টোবর নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হলেও সেই সালিশ অনুষ্ঠিত হয়নি। পুনরায় গত ২৬ অক্টোবর (রবিবার) রাতে সালিশের কথা থাকলেও রহস্যজনক কারণে সেটিও বাতিল হয়।
ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে। তারা অভিযোগ করেছেন, বারবার চুরির ঘটনা ঘটলেও দোষীদের বিরুদ্ধে এখনো পর্যন্ত কোনো আইনি ব্যবস্থা বা স্থানীয় পর্যায়ে কার্যকর বিচার হয়নি। এতে সংঘবদ্ধ চোরদের দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে যাচ্ছে।
প্রশাসনের প্রতি এলাকাবাসির দাবি, এই সংঘবদ্ধ চোরচক্রকে দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক, যাতে এলাকাবাসির মাঝে স্বস্তি ফিরে আসে।
এ বিষয়ে পাইকেরছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল হেলাল মাহমুদ বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

