AB Bank
  • ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ অক্টোবর, ২০২৫, ২১ আশ্বিন ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, প্লাবিত নিম্নাঞ্চল


Ekushey Sangbad
জেলা প্রতিনিধি,নীলফামারী
১১:৫৮ এএম, ৬ অক্টোবর, ২০২৫

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, প্লাবিত নিম্নাঞ্চল

উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিতে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল ৬টায় সেখানে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২৫ মিটার, যা বিপৎসীমার (৫২.১৫ মিটার) ১০ সেন্টিমিটার ওপরে। পরিস্থিতি বিবেচনায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) রেড অ্যালার্ট জারি করে নদীপাড়ের মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে মাইকিং করেছে।

পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন নিচু এলাকা এবং নদীতীরবর্তী বসতভিটা, রাস্তা ও কৃষিজমি প্লাবিত হয়েছে।

স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, গত দুই দিনে পানির প্রবাহ ক্রমাগত বাড়ছে। সকাল থেকে নয় ঘণ্টার ব্যবধানে তিস্তার পানি ৭০ সেন্টিমিটার বেড়েছে। বিকেল ৩টার দিকে ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার সামান্য নিচে নেমে এলেও পানি বৃদ্ধির ধারা অব্যাহত আছে। চরাঞ্চলের বহু পরিবার এখন পানিবন্দি হয়ে পড়েছে; মাছের ঘের, আমন ধান ও সবজির ক্ষেত তলিয়ে গেছে। কোথাও কোথাও গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে, নৌকা ও কলার ভেলায় চলছে মানুষের যাতায়াত।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্যমতে, সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত অন্তত ১২ ঘণ্টা তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে ছিল। এতে চার জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

অন্যদিকে, রোববার সন্ধ্যায় কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানির স্তর ছিল বিপৎসীমার ৮০ সেন্টিমিটার নিচে, যা সোমবার সকালে বেড়ে ২৫ সেন্টিমিটার নিচে দাঁড়ায়। একই সময় ধরলা নদীর শিমুলবাড়ি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৮০ সেন্টিমিটার নিচ থেকে বেড়ে মাত্র ৩ সেন্টিমিটার নিচে পৌঁছেছে।

আদিতমারী উপজেলার গোবর্দ্ধন গ্রামের বাসিন্দা শিউলী বেগম বলেন, “রাস্তাঘাট ডুবে গেছে, পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। রাতে বাড়ির ভেতরেও পানি ঢুকেছে। সারারাত গরু-ছাগল নিয়ে কষ্টে কাটিয়েছি। এখন কোমরসমান পানি ঘরে। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলে এই দুর্ভোগ শেষ হবে না।”

সিন্দুর্না এলাকার শামসুল ইসলাম জানান, “গতকাল দুপুর থেকে পানি বাড়ছে। বাড়িঘর ডুবে গেছে, আমরা পানিবন্দি। গত দুই মাসে বারবার পানি ঢুকে আবার নেমে গেছে— এতে ভীষণ কষ্টে আছি।”

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. শায়খুল আরিফিন বলেন, “তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় এখন রোপা আমন, চিনাবাদাম ও বিভিন্ন সবজির চাষ চলছে। পানি যদি তিন থেকে চার দিন স্থায়ী হয়, তাহলে কৃষকরা বড় ক্ষতির মুখে পড়বেন। তবে এক-দুই দিনের মধ্যে পানি নামলে ক্ষতি তুলনামূলক কম হবে।”

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনিল কুমার বলেন, “ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলের প্রভাবে তিস্তার পানি বাড়ছে। আমরা সার্বক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। নদীপাড়ের মানুষকে সতর্ক থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে এবং মাইকিংয়ের মাধ্যমে জানানো হচ্ছে।”

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনোনীত দাস জানান, “উজান ও দেশের ভেতরের বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। বন্যা মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসন সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে।”

 

একুশে সংবাদ/এ.জে

সর্বোচ্চ পঠিত - সারাবাংলা

Link copied!