কুমিল্লার তিতাসে ছাত্রদল-যুবদল নেতা ও তাদের অনুসারীরা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের কোটি টাকার জমি রাতের আঁধারে বালু দিয়ে ভরাট করে দখল করলেও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব অপকর্ম বাস্তবায়নে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের একটি অংশ ও এলাকার প্রভাবশালী মহল জড়িত থাকলেও কর্তৃপক্ষ কার্যত কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
জানা যায়, উপজেলার গৌরীপুর-হোমনা আঞ্চলিক সড়কের কড়িকান্দি বাজার সংলগ্ন পশ্চিম অংশে সওজের জমি বালু দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। ওই জমির সঙ্গেই আঞ্চলিক সড়ক এবং দীর্ঘদিন ধরে সেখানে অবৈধ স্থাপনা ও দোকানপাট গড়ে ব্যবসা চালিয়ে আসছে একটি প্রভাবশালী মহল।
এছাড়া প্রতিনিয়ত গৌরীপুর-হোমনা আঞ্চলিক সড়কের জিয়ারকান্দি থেকে বাতাকান্দি এলাকা পর্যন্ত সওজের জমি দখল করে নতুন নতুন স্থাপনা গড়ে তোলা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সওজ কর্মকর্তাদের দায়িত্বহীনতা, গাফিলতি এবং অবৈধ লেনদেনের কারণে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে না। ফলে এসব জমি দখলমুক্ত করতে কার্যত ব্যর্থ হচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এমনকি দখল হওয়া জমি মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে হাতবদল হয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে প্রভাবশালী মহল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আল-আমিন হক বাবু, কড়িকান্দি ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বাদশা মোল্লা ও তাদের অনুসারীদের নেতৃত্বে করৈয়াকান্দি মৌজার প্রায় ২৫ শতক সওজের খাস জমি রাতের আঁধারে বালু দিয়ে ভরাট করা হয়। যদিও এই জমি অতীতে স্থানীয় পরিবারের দখলে ছিল, পরে সেটি সওজের রেকর্ডভুক্ত হয়।
আইন অনুযায়ী, কোনো সড়ক বা মহাসড়কের ৩০ ফুটের মধ্যে স্থাপনা নির্মাণ নিষিদ্ধ। কিন্তু জিয়ারকান্দি থেকে কড়িকান্দি বাজার, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকা এবং বাতাকান্দি বাজার পর্যন্ত শতাধিক অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা আল-আমিন হক বাবু বলেন, “এটি আমার ফুফুদের ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া জমি। আমার বাবার মামাতো ভাই জায়গাটি ভরাট করছেন, আমি জড়িত নই।” তবে অনুমতির বিষয়ে তিনি স্পষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারেননি।
অন্যদিকে যুবদল নেতা বাদশা মোল্লা দায় অস্বীকার করে বলেন, “আমি জায়গা ভরাট করিনি। যারা ওয়ারিশ সূত্রে মালিক, তারাই ভরাট করছেন।”
তিতাস উপজেলার গৌরীপুর শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মনির বলেন, “এ ব্যাপারে আমরা অবগত নই। সওজের জমি হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কড়িকান্দি বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে দখল হওয়া সওজের জমি উদ্ধারে শিগগিরই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।”
একুশে সংবাদ/কু.প্র/এ.জে