গাজীপুরের প্রতিটি এলাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বড় সমস্যা বিদ্যমান। গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) ড. চৌধুরী যাবের সাদেক বলেন, “বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে বড় উদ্যোক্তা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। সরকারি পর্যায়ে যা হচ্ছে বা হচ্ছে না, সেটা না দেখেই কেন নিজের উদ্যোগ নিচ্ছেন না? বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উদ্যোক্তা হওয়া খুব ভালো একটি এরিয়া। পরিবেশ ধ্বংসকারী যেকোন অপরাধমূলক কার্যক্রমের খবর পেলে বা কেউ আমাদের তথ্য দিলে আমরা অবশ্যই আইনের ব্যবস্থা গ্রহণ করব। পুলিশ প্রশাসন পরিবেশ রক্ষার যে কোনো উদ্যোগের সাথে সব সময় পাশে থাকবে।”
তিনি এসব কথা বলেন বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুর ২টায় শ্রীপুর উপজেলা নদী পরিব্রাজক দলের আয়োজনে “পরিবেশ বিপর্যয় রোধে করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায়।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক অতিরিক্ত সচিব (বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়) মাহমুদ হাসান মুকুল বলেন, “দেশের প্রায় ১ লাখ ৭৮ হাজার একর বনভূমি মানুষের দখলে। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা এটি রেকর্ড করেছেন। পরিবেশ রক্ষা করতে সকলের অংশগ্রহণ, নিজস্ব অঙ্গীকার ও আন্তরিকতা প্রয়োজন। আমাদের অদক্ষতায় বনের ভিতরে বিল্ডিং তৈরি হয়েছে।”
বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, “পরিবেশ বিপর্যয় রক্ষায় প্রয়োগ ও সচেতনতা কাজে লাগাতে হবে। আইনগুলো প্রয়োগ করতে হবে। জনগণ, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সাংবাদিক ও পুলিশসহ সকলকে পরিবেশ রক্ষায় সচেতন হতে হবে। সারা দেশের প্রায় ৬৭টি নদী পুনরুদ্ধার করবে সরকার। ইতোমধ্যে শ্রীপুরের লবণদহ নদী পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। নাগরিকরা যতক্ষণ পর্যন্ত নদীকে নিজের মনে না করবে, ততক্ষণ নদী রক্ষা ও পরিবেশ সংরক্ষণ সম্ভব নয়।”
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ব্যারিস্টার সজিব আহমেদ বলেন, “শ্রীপুর উপজেলায় শিল্প প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ৫০০। জনসংখ্যা প্রায় ১৩ লাখ। সবচেয়ে বড় ইস্যু হলো বর্জ্য। বর্জ্য অপসারণের স্থায়ী স্থাপনা তৈরি থাকলেও কার্যক্রম চলমান নেই। আগে জেলায় নদী রক্ষা কমিটির মিটিং হতো পাঁচ মিনিট, এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিটিং হল নদী রক্ষা কমিশনের। জেলা প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, এসপি এই মিটিংয়ে উপস্থিত থাকেন। নদী দখল ও দূষণ রোধে প্রতিটি ইস্যুতে আপডেট নেওয়া হচ্ছে। জলাবদ্ধতা দূরীকরণে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো সহযোগিতা করছে এবং সরকারের সঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক।”
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ব্যারিস্টার সজিব আহমেদের সভাপতিত্বে এবং নদী পরিব্রাজক দলের সভাপতি সাঈদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম, পরিবেশ অধিদপ্তরের গাজীপুরের উপ-পরিচালক আরেফিন বাদল, শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আব্দুল বারিক। বিশেষ আলোচক ছিলেন সহকারি পুলিশ সুপার (কালিয়াকৈর সার্কেল) মেরাজুল ইসলাম, ইনসা গ্রুপের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইরাফিল খান, শ্রীপুর সাহিত্য পরিষদের সভাপতি রানা মাসুদ, রিভার এন্ড নেচার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম ও সাংবাদিক রাতুল মন্ডল।
আলোচনা সভায় আবেদ আলী গার্লস স্কুল এ্যান্ড কলেজ, ইকবাল সিদ্দিকী স্কুল এ্যান্ড কলেজ, ল্যাবরেটরি স্কুল এ্যান্ড কলেজ, হিলফুল এডুকেশন একাডেমি, শামসুদ্দিন মাস্টার একাডেমি, ইকরা প্রি-ক্যাডেট হাই স্কুল এ্যান্ড কলেজ, আল আমিন একাডেমিক স্কুল, আমজাদ হোসেন আইডিয়াল স্কুল এ্যান্ড কলেজ, শ্রীপুর পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও শ্রীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
একুশে সংবাদ/গা.প্র/এ.জে