লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে বৈদ্যুতিক শকে দগ্ধ হয়ে শিপন আহমেদ (২৯) নামে এক তরুণ ব্যবসায়ী মারা গেছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত বাড়ির মালিক দম্পতি আলম ও লিপি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।
রোববার (২৪ আগস্ট) সকালে ঢাকা থেকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে নিহতের লাশ বাড়িতে আনার পর পরিবার ও এলাকাবাসী মরদেহ দাফন না করে বিচারের দাবিতে বালুয়া চৌমুহনী বাজারে লাশ নিয়ে বিক্ষোভ করেন। তাদের অভিযোগ, এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়; পরিকল্পিতভাবে শিপনকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
গত বুধবার (২০ আগস্ট) উপজেলার উত্তর দরবেশপুর এলাকায় আলম ও লিপি দম্পতির বসতবাড়িতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। চার দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শিপন মারা যান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শিপন ওই বাড়ির মালিকানাধীন দোকান ভাড়া নিয়ে এসএস (স্টেশনারি) ব্যবসা করতেন। সম্প্রতি দোকান ছাড়ার হুমকি দিয়ে তাকে বাড়ির ছাদে নির্মাণকাজে বাধ্য করা হয়। তবে সেখানে ১১ হাজার ভোল্টেজের বৈদ্যুতিক তার থাকায় তিনি প্রথমে রাজি হননি। পরে জোরপূর্বক কাজ করানোর সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারাত্মক দগ্ধ হন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কাজের স্থানটির ঠিক ওপরেই বৈদ্যুতিক লাইন ছিল, অথচ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়নি।
শিপনের এক আত্মীয় মিরাজ হোসেন বলেন, কাজের জন্য অন্য মিস্ত্রিদের ডাকা হলেও তারা রাজি না হওয়ায় শিপনকে বাধ্য করা হয়। বাজারের ব্যবসায়ী কালু মিয়াও জানান, শিপন তাকে আগেই বলেছিলেন যে মালিকরা জোর করছেন।
শিপনের স্ত্রী মিতু আক্তার বলেন, “আমার স্বামীকে জোর করে কাজ করানো হয়েছিল। আমার একটি ছোট সন্তান আছে, আমি আবার আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এখন আমি কী করব?”
দুর্ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত আলম ও লিপি পলাতক রয়েছেন। স্থানীয় সাংবাদিকরা আলমের বাড়িতে গেলে তার ভাইয়ের স্ত্রী দাবি করেন, শিপন নিজেই বলেছিলেন তিনি কাজ করতে পারবেন।
রামগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল বারী বলেন, “ঘটনাটি আমরা অবগত আছি, পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
একুশে সংবাদ/ল.প্র/এ.জে