রাজধানীর উপকণ্ঠ পূর্বাচল এখন ভোজনরসিকদের কাছে নতুন আকর্ষণ। প্রতিদিন সন্ধ্যা নামলেই ৩০০ ফিট সড়ক ও আশপাশের এলাকায় হাঁসের মাংস, পিঠা ও রুমালি রুটি খেতে উপচে পড়া ভিড় দেখা যায়। ঢাকার নানা প্রান্ত থেকে পরিবার-পরিজন, তরুণ-তরুণী এমনকি বিদেশফেরত অতিথিরাও ছুটে আসছেন পূর্বাচলে।
ধোঁয়া ওঠা হাঁসের মাংসের ঝোল, গরম রুমালি রুটি আর চিতল পিঠার ঘ্রাণে সরগরম থাকে এলাকা। অনেকেই শুধু খাওয়ার জন্য নয়, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা ও ভ্রমণের অংশ হিসেবেও পূর্বাচলকে বেছে নিচ্ছেন।
কিছু দিন আগে মিডিয়ায় ক্রিয়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীবের বক্তব্য আরও উৎসাহ জাগায় ভোজনরসিকদের। তিনি বলেন, গভীর রাতে বন্ধুবান্ধব নিয়ে পূর্বাচলে হাঁসের মাংস খেতে আসেন। তার এ মন্তব্য প্রচারের পর ব্যবসায়ীরা জানান, ক্রেতার সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে গেছে।
রাজধানীর মিরপুর থেকে আসা ক্রেতা রাশেদ বলেন, “শুনেছিলাম এখানে হাঁসের মাংস দারুণ হয়। আজ পরিবার নিয়ে এলাম, সত্যিই চমৎকার স্বাদ। এখন থেকে নিয়মিত আসব।
গাজীপুরের ব্যবসায়ী কামরুল হাসান বলেন, রাত জেগে ড্রাইভ করে আসার পর গরম রুমালি রুটি আর হাঁসের কালিয়া খাওয়ার মজা অন্যরকম।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে দিনে গড়ে ১০০–১৫০ জন ক্রেতা এলেও এখন প্রতিদিন কয়েকশ মানুষ খাবার খেতে আসছেন। দৈনিক বিক্রি হচ্ছে কয়েকশ কেজি মাংস। বিশেষ করে শুক্রবার ও সরকারি ছুটির দিনে ভিড় কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
মোল্লা রেস্টুরেন্টের মালিক কাউছার মোল্লা জানান, উপদেষ্টা সজীব ভাই প্রায় আমার দোকানে খেতে আসতো বন্ধু বান্ধব নিয়ে এসে আমার দোকানে হাসের মাংশ রোমালি রুটি খেতো। ভাইয়ের বক্তব্যের পর থেকে প্রতিদিন রাত ১২টা–১টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখতে হয়। ক্রেতাদের অনেক সময় বসার জায়গা না থাকায় দাঁড়িয়েই খেতে হয়।
ভোজনরসিকদের এ ভিড় স্থানীয় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে তুলেছে। হাঁস খামারিদের বিক্রি বেড়েছে, অস্থায়ী দোকানদাররা লাভবান হচ্ছেন, এমনকি রিকশা ও ভ্যানচালকদেরও আয় বাড়ছে।
খাদ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পূর্বাচলে হাঁসের মাংসকে ঘিরে এক ধরনের ফুড ট্যুরিজম তৈরি হচ্ছে। সঠিক পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনা থাকলে এটি ঢাকার অন্যতম খাদ্য গন্তব্য হয়ে উঠতে পারে।
হাঁসের মাংস, পিঠা ও রুমালি রুটি এখন পূর্বাচলের পরিচয়ের অংশ হয়ে উঠেছে। এটি শুধু ভোজনরসিকদের মিলনমেলাই নয়, বরং স্থানীয় অর্থনীতি ও সংস্কৃতির জন্যও নতুন সম্ভাবনা তৈরি করছে।
একুশে সংবাদ/না.প্র/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

