বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকিট কাউন্টারে অতিরিক্ত টাকা আদায়, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ মজুতসহ নানা অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) দুপুরে অভিযান পরিচালনা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বাগেরহাট জেলা কার্যালয়।
জানা গেছে, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ৫০ শয্যার এ হাসপাতালটি দীর্ঘদিন ধরে সেবা দিয়ে আসছে। সরকার প্রতিবছর কোটি টাকার ওষুধ সরবরাহ করলেও ভর্তি রোগীরা মাত্র ২-৪ ধরনের ওষুধ পাচ্ছেন। অ্যান্টিবায়োটিক, সেফট্রিয়াক্সোন, ওমেপ্রাজল ইনজেকশন ও কলেরা স্যালাইনসহ বেশিরভাগ ওষুধ কিনতে হচ্ছে বাইরে থেকে। এতে আর্থিক সংকটে থাকা অনেক রোগী চিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছেন।
অন্তঃবিভাগে ৩৫ প্রকারের ওষুধের তালিকা থাকলেও চিকিৎসকরা অনেক সময় কোম্পানির প্রতিনিধিদের স্বার্থে গ্রুপ পরিবর্তন করে ওষুধ প্রেসক্রাইব করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। বহির্বিভাগে খুচরা টাকার অজুহাতে ৩ টাকার টিকিটের জন্য রোগীদের ৫ টাকা দিতে হচ্ছে। এছাড়া রোগীদের খাবারের মান ও পরিমাপ নিয়েও অনিয়মের প্রমাণ মেলে—সকালের নাস্তা দেয়া হচ্ছে সকাল ১০টার পর, দুপুরের খাবারে পরিমাপ ছাড়াই কখনো পাঙ্গাস মাছ, কখনো পোল্ট্রি মুরগি পরিবেশন করা হচ্ছে।
এইসব অনিয়ম নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রাসেল রনির নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের দল অভিযান চালায়। এসময় হাসপাতালের ওষুধ সংরক্ষণাগার থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ উদ্ধার করা হয়। টিকিট কাউন্টারে দায়িত্বে থাকা মনির হোসেনের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের লিখিত স্বীকারোক্তি নেয়া হয় এবং তাকে সতর্ক করা হয়। এছাড়া নির্দিষ্ট সময়ে ডিজিটাল হাজিরা না দেয়া তিনজন মেডিকেল অফিসারসহ মোট ছয়জনের কাছ থেকেও লিখিত অঙ্গীকারনামা নেয়া হয়।
দুদকের সহকারী পরিচালক রাসেল রনি বলেন, “হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়ম চলছে। টিকিট কাউন্টারে অতিরিক্ত টাকা আদায় ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ মজুতের প্রমাণ মিলেছে। সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হয়েছে, ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
একুশে সংবাদ/বা.প্র/এ.জে