পাবনার ফরিদপুর উপজেলা চলনবিলবিধৌত একটি জনপদ, যার ভৌগোলিক অবস্থান সাপে কামড়ানোর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। এ অঞ্চলে সাপের উপস্থিতি অন্যান্য অনেক এলাকার তুলনায় বেশি হওয়ায় সাপে কাটা একটি সাধারণ এবং পুনরাবৃত্তি হওয়া ঘটনা হয়ে উঠেছে।
সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিনে খোঁজ নিয়েছে একুশে সংবাদ। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখানে সাপে কামড়ানো রোগী নিয়মিত না এলেও মাঝেমধ্যে এমন রোগী পাওয়া যায়।
গত ৩ আগস্ট গোপালনগর বাজার এলাকার বাসিন্দা আলতাব হোসেনের মেয়ে আঁখি সাপে কামড়ের শিকার হন। তাকে তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নিশ্চিত হন—এটি ছিল নির্বিষ সাপের কামড়। ফলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আঁখিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
আঁখির বাবা আলতাব হোসেন বলেন, “মেয়েকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার আপা খুব ভালোভাবে দেখে ওষুধ লিখে দিছেন। আপা বলছিলেন, যে সাপ কামড়াইছে, সেটা বিষধর না।”
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রিয়াঙ্কা চক্রবর্তীর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, “শুধুমাত্র বিষধর সাপ কামড়ালে ঝুঁকি থাকে এবং তার চিকিৎসা অপেক্ষাকৃত জটিল। তবে আমাদের কমপ্লেক্সে যতটুকু সুযোগ-সুবিধা আছে, তা দিয়ে আমরা আহতদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দেওয়ার চেষ্টা করি।”
তিনি আরও জানান, ফরিদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে ২০ ভায়াল অ্যান্টিভেনম সংরক্ষিত আছে। এটি যথেষ্ট কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “অ্যান্টিভেনমের ভায়ালগুলো অত্যন্ত মূল্যবান ও সংবেদনশীল। বেশি পরিমাণ মজুদ রাখলে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে সরকারি অর্থের অপচয় হতে পারে। তবে বর্তমানে যা মজুদ আছে, তা দিয়ে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব।”
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে প্রতি বছর সাপের কামড়ে গড়ে প্রতিদিন ১৭ থেকে ২১ জন মানুষ মারা যায়। বর্ষাকালে এই হার আরও বেড়ে যায়, কারণ এই সময় সাপের চলাচল এবং মানুষের সংস্পর্শের হার বৃদ্ধি পায়।
সচেতন মহল মনে করেন, বর্ষাকালে সাপে কাটা রোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। পাশাপাশি সাপে কাটা রোগীকে দ্রুত চিকিৎসা কেন্দ্রে নেওয়া হলে প্রাণহানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।
একুশে সংবাদ/পা.প্র/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

