চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে সৈয়দ খালের ওপর নির্মিত কাঠের বিকল্প সেতুটি ভেঙে পড়ায় শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ও চরণদ্বীপ ইউনিয়নের মধ্যে যোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দুই ইউনিয়নের হাজারো মানুষ।
জানা যায়, শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ও চরণদ্বীপ ইউনিয়নকে যুক্ত করতে সৈয়দ খালের ওপর ৪৩ মিটার দীর্ঘ একটি সেতু নির্মাণের কাজ শুরু করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। নির্মাণকাজ চলাকালে পারাপারের জন্য পাশেই কাঠের একটি বিকল্প সাঁকো তৈরি করে দেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন জানান, এই সেতুই ছিল এলাকার মানুষের একমাত্র ভরসা। এখন হাসপাতালে যাওয়া, বাজার করা বা জরুরি প্রয়োজনে যাতায়াত করা একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
সূত্রে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে কালুরঘাট-ভান্ডালজুড়ি সড়কের কেরানী বাজার এলাকায় এই সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়, যা ২০২২ সালের অক্টোবরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। প্রথমে ‘ACNT-JV’ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকায় কাজের দায়িত্ব দেওয়া হলেও নির্মাণসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে তারা কাজ অসমাপ্ত রেখে সরে যায়। পরে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে নতুন করে মেসার্স নুর সিন্ডিকেটকে প্রায় ৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকায় কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়, কিন্তু জুন পর্যন্ত অগ্রগতি মাত্র ৪৫ শতাংশ।
এদিকে দীর্ঘদিন ধরে মূল সেতুর কাজ শেষ না হওয়ায় পাশে তৈরি করা কাঠের সাঁকোও জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছিল, যা শেষ পর্যন্ত ভেঙে গিয়ে পুরোপুরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. হাসান চৌধুরী বলেন, “কাঠের সেতুটি ভেঙে পড়ায় মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বোয়ালখালী উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. ফারুক হোসেন বলেন, “জোয়ারের পানির চাপে কাঠের বিকল্প সেতুর একপাশ ভেঙে গেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সহায়তায় অতি দ্রুত মেরামতের কাজ শুরু করা হবে।”
দুই ইউনিয়নের বাসিন্দাদের প্রত্যাশা—অবিলম্বে মূল সেতুর নির্মাণ শেষ হলে এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলবে।
একুশে সংবাদ/চ.প্র/এ.জে