চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) হাতে তিন দিনের ব্যবধানে দুই বাংলাদেশি হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। এখনও নিখোঁজ রয়েছেন আরও কয়েকজন। শনিবার দুপুরে পদ্মা নদী থেকে শফিকুল ইসলাম শফিক নামে এক ব্যক্তির অ্যাসিডে পোড়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের তারাপুর হঠাৎপাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
পরিবার ও স্থানীয়দের অভিযোগ, হত্যাকাণ্ডের দায় এড়াতে মরদেহ অ্যাসিড দিয়ে পুড়িয়ে নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিহতের ভগ্নিপতি ও মনাকষা ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য সমির উদ্দিন জানান, গত বৃহস্পতিবার গরু আনার জন্য সীমান্তে যান শফিকুল, এরপর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন। শনিবার পদ্মা নদীতে মরদেহ ভেসে থাকতে দেখে খবর দেওয়া হলে সেটি শনাক্ত করা হয়। তার ভাষ্য, “পুরো শরীর অ্যাসিডে ঝলসে গিয়েছিল।”
স্থানীয়দের দাবি, বিএসএফ সদস্যরা হত্যাকাণ্ড লুকাতে কৌশল পরিবর্তন করেছে। তারা নির্যাতন করে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দিচ্ছে, যেন প্রমাণ লোপাট করা যায়।
এর আগে গত সোমবার মনোহরপুর সীমান্ত দিয়ে গরু নিয়ে ফেরার পথে বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন পাঁকা ইউনিয়নের দশরশিয়া গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে সৈয়বুর আলী। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন তার সঙ্গী রুহুল আলী।
এছাড়া গত ২৪ জুলাই শিবগঞ্জ উপজেলার শিংনগর সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন দুই বাংলাদেশি যুবক সেলিম (২৫) ও সুমন (২৮)। এরও আগে, ১৯ জুলাই সদর উপজেলার নারায়ণপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে গরু আনতে গিয়ে নিখোঁজ হন মোহাম্মদ লাল চাঁদ নামের আরেক বাংলাদেশি।
৫৩ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ রিংকু বলেন, “লাশ উদ্ধারের জন্য থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে, তবে মৃত্যুর কারণ এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।”
শিবগঞ্জ থানার ওসি গোলাম কিবরিয়া জানান, “বিজিবির দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।”
একুশে সংবাদ/চাঁ.প্র/এ.জে