সিলেট শহরে গত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা নগরবাসীকে অন্ধকারে কাটাতে হচ্ছে। কুমারগাঁও ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্রের আওতাধীন ২৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পাওয়ার স্টেশনটি টানা ১০ দিন ধরে বন্ধ থাকায় সারা নগরীতে লোডশেডিং দেখা দিয়েছে। ফলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয়রা।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সূত্রে জানা গেছে, পাওয়ার স্টেশনের একটি ট্রান্সফরমার পুড়ে যাওয়ায় সেটি বন্ধ রাখা হয়েছে। যেহেতু যন্ত্রাংশ বিদেশ থেকে আনতে হয়, তাই কবে নাগাদ এটি মেরামত হয়ে পুনরায় চালু হবে—তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
বিউবো সিলেট অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির বলেন, "সিলেটে আমাদের নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যত নেই। পুরোপুরি জাতীয় গ্রিডের ওপর নির্ভর করতে হয়। তার ওপর লো-ভোল্টেজ সমস্যাও যুক্ত হয়েছে।" তবে পাওয়ার স্টেশন বন্ধের প্রকৃত কারণ নিয়ে রয়েছে বিভ্রান্তি। কেউ বলছেন যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এটি বন্ধ, আবার কেউ বলছেন এটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্যই বন্ধ রাখা হয়েছে। এক প্রকৌশলী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “পাওয়ার স্টেশনে বড় কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি নেই, এটি মূলত রক্ষণাবেক্ষণের কারণেই বন্ধ রয়েছে।”
এদিকে সিলেট মহানগরীর পাঁচটি বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন ১৩টি সাবস্টেশন অতিরিক্ত চাপে পড়েছে। গরম বেড়ে যাওয়ায় ফিউজ ও বৈদ্যুতিক তার ছিঁড়ে যাওয়ার ঘটনা বাড়ছে এবং দেখা দিচ্ছে ভোল্টেজ ড্রপের সমস্যাও।
বিউবো কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার সিলেট অঞ্চলে বিদ্যুৎ ঘাটতি ছিল প্রায় ৩৩ শতাংশ। সিলেট বিতরণ বিভাগ-২-এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামস-ই-আরেফিন বলেন, “আমাদের হাতে বিদ্যুৎ নেই। ঢাকা থেকে যখন-তখন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। এতে পুরো সিস্টেমে ফ্রিকোয়েন্সি ডাউন হয়। ঢাকার সিদ্ধান্ত সিলেটের বাস্তবতায় ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে।”
বিদ্যুৎ পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক না হলে সংকট আরও তীব্র হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন ভুক্তভোগীরা। কেউ কেউ ক্ষোভে বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের ফোনে দুর্ব্যবহার করছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
একুশে সংবাদ/সি.প্র/এ.জে