AB Bank
  • ঢাকা
  • শনিবার, ১৯ জুলাই, ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

অল্প পুজি লাগিয়ে স্বল্প লাভে সিঙ্গাড়া বিক্রি করে সফল কোটচাঁদপুরের মনিরুল ইসলাম



অল্প পুজি লাগিয়ে স্বল্প লাভে সিঙ্গাড়া বিক্রি করে সফল কোটচাঁদপুরের মনিরুল ইসলাম

অল্প পুজি লাগিয়ে স্বল্প লাভে সিঙ্গাড়া বিক্রি করে সফল হয়েছেন ব্যবসায় মনিরুল ইসলাম (৩৫)। উচ্চমূল্যের বাজারে আজও বিক্রি করছেন দুই টাকায় একটি সিংঙ্গাড়া। কোটচাঁদপুর সরকারি কলেজ সড়কের দোকানটিতে পাওয়া যায় ওই স্বপ্লমূল্যের সিঙ্গাড়া। এ ব্যবসা হতে পারে অনেক বেকার যুবকের অনুপ্রেরণার উৎস, এমনটাই জানিয়েছেন অনেকে।

কোটচাঁদপুর কলেজ বাসস্ট্যান্ড পাড়ার বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম (৩৫)। জীবনের অর্ধেক সময় তিনি ব্যয় করেছেন সিঙ্গাড়ার ব্যবসা করে। অল্প পুঁজি লাগিয়ে স্বল্প লাভ করে তিনি হয়েছেন সফল। প্রথমে নিজেই বানাতেন সিঙ্গাড়া। এরপর তা নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতেন ট্রেনে। এভাবে কাটিয়ে দিয়েছেন জীবনের ১৪ বছর। আয়-রোজগার করে কিনেছেন জমি, গড়ে তুলেছেন বাড়ি। করেছেন সংসার। এখন দুই সন্তানের জনক তিনি।

মনিরুল ইসলাম এখন আর ট্রেনে সিঙ্গাড়া বিক্রি করেন না। গেল ২ মাস হলো কোটচাঁদপুর কলেজ বাসস্ট্যান্ড থেকে কলেজ সড়কে নিয়েছেন একটি পাকা দোকান। সেখানে তিনি করছেন সিঙ্গাড়ার ব্যবসা। রীতিমতো সাইনবোর্ড লাগিয়ে উচ্চমূল্যের এই বাজারে দুই টাকা দরে বিক্রি করছেন সিঙ্গাড়া। দোকানে বিক্রিও ভালো। এই স্বল্পমূল্যের সিঙ্গাড়া কিনতে পেরে যেমন খুশি ক্রেতা, তেমনি স্বল্প লাভে বিক্রি করে তৃপ্তিতে আছেন ওই ব্যবসায়ী। বর্তমানে তিনি প্রতিদিন ৫ কেজি ময়দা ৫ কেজি আলু ও ৪ কেজি তেল দিয়ে ১ হাজার পিচ সিঙ্গাড়া বানান। যা বিক্রি করেন ২ হাজার টাকায়। আর এ টাকা থেকে পরের দিনের মালমালের টাকা রাখেন। এরপর তিনি বাকিটা ব্যয় করেন সংসারে।

এই দোকান প্রতিদিন শুরু হয় সকাল ৮টার সময় আর  শেষ হয় বেলা ৩টায়। তিনি কলেজ পাড়ার নুরুল ইসলামের ছেলে।

গুড়পাড়া গ্রামের সিঙ্গাড়া ক্রেতা রোকনুজ্জামান বলেন, এমন উচ্চমূল্যের বাজার দরে তিনি যে দুই টাকা সিঙ্গাড়া বিক্রি করছেন, এটা ভাববার ব্যাপার। তিনি এ স্বপ্লমূল্যের সিঙ্গাড়া পেয়ে বেশ খুশি।
একই কথা বলেন, কোটচাঁদপুর কলেজ বাসস্ট্যান্ড পাড়ার রেজাউল ইসলাম। তিনি বলেন, বেশ কয়েকদিন হলো দোকানটি হয়েছে দেখলাম। বেচা-কেনাও ভালো। অল্প দামের সিঙ্গাড়া হওয়ায় মাঝে মধ্যে কেনা হয় ওই দোকান থেকে। আর খেতেও সুস্বাদু বলে জানিয়েছেন তিনি।

সিঙ্গাড়া ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম বলেন, নিজে থেকেই ব্যবসাটির প্রতি আগ্রহ ছিল আমার। আর সিঙ্গাড়া বানানো শেখাটাও ছিল নিজে থেকেই।

তিনি বলেন, ২০১০ সালের দিকে এই ব্যবসা শুরু করি আমি। প্রথম দিন ১ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে বাজারে যাই। কিনে আনি সিঙ্গাড়া বানানোর জন্য ময়দা, তেল, আলুসহ আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্র। এরপর সিঙ্গাড়া  তৈরি করে বিক্রি করতে যাই ট্রেনে। আর এভাবে চলে আমার ১৪ বছর। তবে এরমধ্যে বিয়ে হয় আমার। সংসার জীবনে আমি এখন দুই সন্তানের জনক।

তিনি আরও বলেন, এখন আর আমি ট্রেনে সিঙ্গাড়া বিক্রি করতে যাই না। কয়েক মাস হলো কোটচাঁদপুর কলেজ বাসস্ট্যান্ডের অদূরে সরকারি কলেজ সড়কে একটি দোকান নিয়েছি। ওই দোকানেই বানানো হয় সিঙ্গাড়া। তবে এখন আর তিনি একা বানান না। সঙ্গী হিসেবে নিজের স্ত্রীও সহায়তা করেন ওই ব্যবসায়। তিনিই সিঙ্গাড়া বানানোর সব কাজ করেন বলে জানিয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। উচ্চমূল্যের বাজারে আপনি কম দামে সিঙ্গাড়া বিক্রি করে কিভাবে চলেন আর কি করেছেন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আগে ট্রেনে ৫ টাকা করে সিঙ্গাড়া বিক্রি করতাম। সে সময় লাভ বেশি হত। এখন ২ টাকায় সিঙ্গাড়া বিক্রি শুরু করেছি। এতে আমার লাভ কম। তবে বিক্রি বেশি। মানুষও অল্প দামে সিঙ্গাড়া পেয়ে খুশি। আর আমি তৃপ্তি পাচ্ছি মানুষের স্বল্পমূল্যের সিঙ্গাড়া খাইয়ে।

মনিরুল ইসলাম বলেন, এই ব্যবসা করে সংসার চালিয়ে ৫ শতক জমি কিনেছি। বাড়ি বানিয়েছি। ছেলের লেখা পড়া শিখিয়ে বিয়ে দিয়েছি। আর এখন এই দোকানটি নিয়ে সিঙ্গাড়ার দোকানটি করেছি।

কেউ যদি ব্যবসাটি করতে চান, সে ব্যাপারে আপনার  পরমর্শ কি, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যবসা করতে তেমন পুঁজি লাগে না। কেউ চাইলে যে কোনো সময় যে কোনো একটা পুঁজি নিয়ে শুরু করতে পারেন। তবে তার জন্য দরকার পরিশ্রম।

মনিরুল ইসলামের স্ত্রী আসমা খাতুন বলেন, আমার বিয়ের পর থেকে দেখি আমার স্বামী সিঙ্গাড়া বানিয়ে ট্রেনে বিক্রি করেন। সেই থেকে আমি আমার সংসারের কাজ করে তার সহযোগিতা করি। এতে যা আয় রোজগার হয়, তাতে খেয়ে পরে ভালোই আছি।

এ দিকে এ ব্যবসা হতে পারে অনেক বেকার যুবকের অনুপ্রেরণার উৎস এমনটাই জানিয়েছেন অনেকে। 
 

একুশে সংবাদ/ঝি.প্র/এ.জে

সর্বোচ্চ পঠিত - সারাবাংলা

Link copied!