কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ ৯ বছর বয়সী শিশু ফারিয়া রহমান নীহার মরদেহ ১৯ ঘণ্টা পর উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। শনিবার (১২ জুলাই) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে ভেসে ওঠা মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
এর আগে শুক্রবার (১১ জুলাই) বিকেলে পাকুন্দিয়া উপজেলার চরফরাদী ইউনিয়নের দক্ষিণ চরটেকি বেড়িবাঁধ এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদে নৌকা ভ্রমণের সময় হঠাৎ নৌকাটি ডুবে যায়। তখন ঘটনাস্থলেই মারা যান ফারিয়ার বড় বোন কাশ্মীরা রহমান নীলা (১৭)।
দুই বোনই কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার চৌদ্দশত ইউনিয়নের জালুয়াপাড়া গ্রামের আবদুর রহমান ও নীপা আক্তারের মেয়ে। ফারিয়া কটিয়াদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং কাশ্মীরা ছিলেন গুরুদয়াল সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, পরিবার নিয়ে বেড়াতে গিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে নির্মিত বেড়িবাঁধ এলাকায় একটি ডিঙ্গি নৌকায় ওঠেন তারা। আনন্দঘন সেই সময়টি মুহূর্তেই মর্মান্তিক ঘটনায় রূপ নেয়। দুর্ঘটনার পর স্থানীয়দের সহায়তায় বাবা আবদুর রহমান ও মা নীপা বেগমকে জীবিত উদ্ধার করা গেলেও দুই মেয়ের একজন ঘটনাস্থলে মারা যান, অন্যজন নিখোঁজ ছিলেন।
খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল উদ্ধার অভিযান শুরু করে। প্রথম দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত তল্লাশি চালানোর পর শনিবার সকাল থেকে আবারও অভিযান শুরু হয়। দুপুরে নদীর ভেতর প্রায় ৫০০ গজ দূরে ফারিয়ার মরদেহ ভেসে ওঠে।
ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আব্দুল্লাহ খালিদ বলেন, “খবর পাওয়ার পর থেকেই আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে গেছি। শেষ পর্যন্ত শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা গেছে।”
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, “এটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক একটি ঘটনা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসন প্রয়োজনীয় সহায়তা করছে।”
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়দের অনেকেই জানান, বেড়িবাঁধ এলাকাটি পরিবার নিয়ে ভ্রমণের জনপ্রিয় স্থান হয়ে উঠেছে। কিন্তু নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাব এবং নিয়ন্ত্রণহীন নৌকা চলাচলের কারণে এমন হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে যাচ্ছে।
একুশে সংবাদ/কি.প্র/এ.জে