পরীক্ষা শেষে ফলাফল শোনার অপেক্ষায় ছিলেন আরফান মুন্সি (১৫)। কিন্তু তার আগেই না-ফেরার দেশে চলে গেলেন অষ্টম শ্রেণির এ শিক্ষার্থী। ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কাউলিবেড়া ইউনিয়নের চাড়াভিটা গ্রামে সোমবার (৭ জুলাই) দিবাগত রাতে ঘুমের মধ্যে অজ্ঞাত বিষাক্ত প্রাণীর কামড়ে তার মৃত্যু হয়।
নিহত আরফান মুন্সি ওই গ্রামের গার্মেন্টসকর্মী হাতেম মুন্সির ছেলে এবং কাউলিবেড়া কাজী ওয়ালিউল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
আরফানের মা-বাবা জানিয়েছেন, তিনি একটি পোষা বিড়াল ছানা লালন করতেন। সোমবার রাতে খাবার খেয়ে নয়টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়েন। মধ্যরাতে হঠাৎ অসুস্থতা অনুভব করলে বাম হাতে কামড়ের দাগ ও রক্তক্ষরণ দেখে চিৎকার দিয়ে মাকে ডাকেন এবং জানান, পোষা বিড়াল কামড় দিয়েছে।
তার মা নার্গিস বেগম বিষয়টিকে সাধারণ বিড়ালের কামড় মনে করে হাতে তেল-হলুদ মালিশ করেন। কিন্তু ধীরে ধীরে আরফান নিস্তেজ হয়ে পড়লে তার চাচা ইমারত হোসেন তাকে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তানসিফ জুবায়ের বলেন, “রোগী হাসপাতালে আসার আগেই মারা যায়। পরিবারের লোকজন জানিয়েছেন, সম্ভবত সাপে কামড়েছে। বাম হাতে ক্ষতচিহ্ন থাকলেও সুনিশ্চিতভাবে বলা যায়নি এটি সাপের কামড় কি না। আমাদের হাসপাতালে যথেষ্ট অ্যান্টিভেনম রয়েছে, তবে সাপে কাটার পর দ্রুত হাসপাতালে আনা হলে অনেক সময় জীবন রক্ষা করা সম্ভব।”
নিহতের বাবা হাতেম মুন্সি বলেন, “আমার ছেলে পরীক্ষার সময় গভীর রাত পর্যন্ত পড়ত। গতকালও খুশি মনে পরীক্ষার শেষ দিন ছিল। ঘুমের মধ্যে আমাদের ডেকে বলেছিল বিড়াল কামড়েছে। কিন্তু পরে বুঝতে পারি, সেটা বিড়ালের কামড় ছিল না। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার ছেলেটা চলে গেল।”
কাজী ওয়ালিউল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেজবাহউদ্দিন বলেন, “আরফান ছিল ভদ্র, নম্র ও পড়াশোনায় আগ্রহী ছাত্র। কয়েক মাস হলো আমাদের বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিল। সবগুলো পরীক্ষাই দিয়েছে। ফলাফল জানার আগেই চলে গেল। তার স্মৃতি আমাদের মনে রয়ে গেল।”
একুশে সংবাদ/ফ.প্র/এ.জে