নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ইলেকট্রিশিয়ান পারভেজ হাসান (৩৫) হত্যাকাণ্ডের রহস্য একদিনের মধ্যেই উদঘাটন করেছে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ। তদন্তে উঠে এসেছে—সমকামী সম্পর্ক ও সেই সম্পর্ক ঘিরে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব থেকেই সংঘটিত হয়েছে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড।
নিহতের পরিবার বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ তদন্তে নামে। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রোববার (৬ জুলাই) রাতে রূপগঞ্জের তারাবো এবং কুমিল্লা থেকে দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃতরা হলেন—কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের কোষাধ্যক্ষ মেহেদী হাসান ইমন এবং ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আরমান হোসেন।
তদন্তে জানা যায়, নিহত পারভেজের সঙ্গে মেহেদী হাসান ইমনের সমকামী সম্পর্ক ছিল। একইসঙ্গে পারভেজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে ডা. আরমান হোসেনেরও। এ সম্পর্কজটিলতা থেকে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়, যার জের ধরে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়।
পুলিশ জানায়, গত ২ জুলাই রাতে রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের আমলাবো এলাকার গিয়াসউদ্দিন মোল্লার পাঁচতলা ভবনের ছাদে পারভেজকে ডেকে নিয়ে যায় মেহেদী হাসান ইমন। সেখানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে ফেলে রেখে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর ওই ভবনের এক ফ্ল্যাটে বসবাসকারী কিশোর সিয়াম (১৪) ছাদে খেলতে গিয়ে পারভেজকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে এবং তাৎক্ষণিকভাবে পরিবারের সদস্যদের জানায়।
পরে স্থানীয়রা পারভেজকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে তিনি মারা যান।
নিহত পারভেজ পাবনা সদর উপজেলার সুপচর এলাকার মজিদ সরকারের ছেলে। তিনি গিয়াসউদ্দিন মোল্লার পাঁচতলা ভবনের একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদের রিমান্ডে নিতে আদালতে আবেদন করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/না.প্র/এ.জে