দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে গ্রীন ফোর্স বাংলাদেশ মোংলায় আয়োজন করে “দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে করণীয়” শীর্ষক এক মতবিনিময় সভা। মোংলা প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এ সভায় উপস্থিত বক্তারা দুর্নীতিকে জাতীয় অগ্রগতির প্রধান অন্তরায় হিসেবে চিহ্নিত করে এর বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গ্রীন ফোর্স বাংলাদেশের ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর ডা. এস এম হক। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের উন্নয়নকে যদি টেকসই করতে চাই, তাহলে আগে দুর্নীতিকে পরাজিত করতে হবে। দুর্নীতি এখন আর ব্যক্তি বা দপ্তরের সীমায় নেই—এটি একটি সাংগঠনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক চক্রে পরিণত হয়েছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই শুধু নীতি-কথার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না, মাঠে নামতে হবে, প্রতিরোধ গড়তে হবে।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গ্রীন ফোর্স বাংলাদেশের ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর জাহিদুল ইসলাম বলেন, “আমরা বিশ্বাস করি—দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিটি মানুষকেই সোচ্চার হতে হবে। দুর্নীতিকে যারা প্রশ্রয় দেয়, যারা চুপ থেকে উপকৃত হয়, তারাও এই অন্যায়ের অংশীদার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নৈতিক শিক্ষা, প্রশাসনে স্বচ্ছতা, বিচার ব্যবস্থায় নিরপেক্ষতা—এই তিন খাতেই আমাদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দিতে হবে।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন মোংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আহসান হাবিব হাসান। তিনি বলেন, “সাংবাদিক সমাজ সবসময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছে, ভবিষ্যতেও বলবে। তবে এখন প্রয়োজন মিডিয়া, নাগরিক সমাজ ও সংগঠনের মধ্যে একটি শক্তিশালী সংহতি গড়ে তোলা, যাতে দুর্নীতিবাজরা আর পার না পায়।”
এ সময় ‘গ্রীন ফোর্স বাংলাদেশ’-এর পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দুর্নীতিবিরোধী অঙ্গীকার তুলে ধরা হয়।
এক. সরকারি সেবায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো।
দুই. ঘুষ লেনদেনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ ও দুদককে স্বাধীনতা দেওয়া।
তিন. শিক্ষা খাতে ভর্তি বাণিজ্য, প্রশ্নফাঁস, নিয়োগে অনিয়মের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স।
চার. স্বাস্থ্য খাতে ই-টেন্ডারিং বাধ্যতামূলক করা এবং বেসরকারি ক্লিনিকের অনিয়ম বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা।
পাঁচ. দুর্নীতিবিরোধী গণসচেতনতা তৈরিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নৈতিক শিক্ষা চালু ও মিডিয়ার সক্রিয় অংশগ্রহণ।
গ্রীন ফোর্স বাংলাদেশ মনে করে, দুর্নীতিকে নিয়তি হিসেবে মেনে নেওয়ার দিন শেষ। এই সংগঠন শুধু একটি ব্যানার নয়, এটি শুদ্ধতা, জবাবদিহিতা ও সাহসিকতার প্রতীক।
দেশবাসীর উদ্দেশে আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, “এ সংগ্রাম কোনো একটি সংগঠনের একার নয়, এটি ১৮ কোটি মানুষের অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম। আসুন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে দল-মত নির্বিশেষে এক কাতারে দাঁড়াই।
একুশে সংবাদ/বা.প্র/এ.জে