ঈদুল-আজহা সামনে রেখে কোরবানির পশুর চামড়া যথাযথভাবে সংরক্ষণের লক্ষ্যে রাজশাহীতে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে রাজশাহী জেলা ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বিনামূল্যে লবণ বিতরণ করছে জেলা প্রশাসন।
জানা গেছে, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় রাজশাহী জেলার ৯টি উপজেলা ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায় তালিকাভুক্ত মসজিদ, মাদরাসা, ইয়াতিমখানা ও লিল্লাহ বোর্ডিংগুলোতে চামড়া সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় লবণ সরবরাহ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এসব প্রতিষ্ঠানের তালিকা তৈরি করে লবণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মির্জা ইমাম উদ্দিন জানান, ‘চামড়া সংরক্ষণের জন্য এই বরাদ্দ ঈদের আগেই বিতরণ করা হচ্ছে। এলাকাভিত্তিক উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ এই বিতরণ ও তদারকির দায়িত্বে রয়েছেন এবং পুরো কার্যক্রমটি শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন।’
এবার রাজশাহী জেলা ও সিটি কর্পোরেশনে মোট ২৬৩.৩ মেট্রিক টন লবণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই লবণ প্রায় ১৩৫টি এতিমখানা, মাদরাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে।
উপজেলাভিত্তিক লবণ বরাদ্দের চিত্র নিম্নরূপ:গোদাগাড়ী : ৯ মে. টন, বাঘা : ৫৮.৩ মে. টন, চারঘাট : ৯ মে. টন, পুঠিয়া : ১৩.৫ মে. টন, দুর্গাপুর : ১৩ মে. টন, তানোর : ৬ মে. টন ,বাগমারা : ২০ মে. টন, পবা : ৬৪.৯ মে. টন, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন : ৪২.৬ মে. টন ।
গোদাগাড়ী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে তালিকা তৈরি করে বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেছি এবং চামড়া সংরক্ষণের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঠিক নির্দেশনাও দিয়েছি। আশা করি এবার চামড়া ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন।’
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার বলেন, ‘চামড়া শিল্পের প্রতি এবার সরকারের বিশেষ নজর রয়েছে। বিগত কয়েক বছরে মসজিদ-মাদরাসা ও এতিমখানাগুলো চামড়া সংগ্রহে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তাই সরকার বিনামূল্যে লবণ বরাদ্দ দিয়ে চামড়া শিল্পকে রুট লেভেল থেকে পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগ নিয়েছে।’
তিনি আরও জানান, ‘ঈদের পরের ১০ দিন চামড়া জেলার বাইরে না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সারা দেশের ৬৪ জেলায় এই নির্দেশনা কার্যকর থাকবে, যাতে স্থানীয়ভাবে চামড়া সংরক্ষণ ও পর্যায়ক্রমে বাজারজাত করা সম্ভব হয়। ফলে ব্যবসায়ীরা অযথা ক্ষতির সম্মুখীন হবেন না ‘
চামড়া শিল্পের টিকে থাকা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কোরবানির মৌসুমে দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে- এমনটাই প্রত্যাশা সংশ্লিষ্ট সকলের।
একুশে সংবাদ/ রা.প্র/এ.জে