যশোরের কেশবপুর উপজেলার ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম আনিছুর রহমানের অফিসকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় বিএনপি ও তাদের সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। শনিবার (৩১ মে) দুপুর একটার দিকে তাঁকে “আওয়ামী লীগের দোসর” আখ্যা দিয়ে এই কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা। একইসঙ্গে তাঁর অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলও করে স্থানীয় বিএনপি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আনিছুর রহমান ২০২২ সালের ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হলেও রাজনৈতিকভাবে তিনি আওয়ামী লীগঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। এর আগে ২০১৬ সালের নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা নিয়ে জয়লাভ করেছিলেন। তবে গত বছরের ৫ আগস্ট বিএনপির ঘোষিত “সরকার পতনের” আন্দোলনের সময়ও তিনি ইউপি কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন, যা স্থানীয় বিএনপি নেতাদের অসন্তুষ্টির কারণ হয়।
শনিবারের কর্মসূচিতে অংশ নেন উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও সাতবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শামছুল আলম বুলবুল, ত্রিমোহিনী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আকরাম হোসেন, ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক অহিদুর রহমানসহ বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের একাধিক নেতা।
আকরাম হোসেন বলেন,“আনিছুর রহমান আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে পরিচিত। তাঁকে অবিলম্বে অপসারণ করে ত্রিমোহিনী ইউনিয়নে প্রশাসক নিয়োগ দিতে হবে। আমরা কক্ষে তালা লাগিয়ে এর চাবি স্মারকলিপিসহ উপজেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করব।”
অভিযোগ প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান এস এম আনিছুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন,“আমি জনগণের ভোটে নির্বাচিত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান। জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। আজ ছুটির দিন থাকায় অফিসে কেউ ছিল না। সেই সুযোগে তারা কক্ষের তালা ভেঙে সেখানে নতুন তালা লাগিয়েছে।”
কেশবপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খান শরিফুল ইসলাম বলেন,“পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। পরিস্থিতি এখন শান্ত। তবে চেয়ারম্যানের অফিসে নতুন করে তালা লাগানো হয়েছে।”
উল্লেখ্য, কেশবপুর উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়ন—সাগরদাঁড়ি, পাজিয়া, সুফলাকাটি, গৌরিঘোনা, বিদ্যানন্দকাটি ও হাসানপুরে এরই মধ্যে নির্বাচিত চেয়ারম্যানদের অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোকসানা খাতুন বলেন,“বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
একুশে সংবাদ / য.প্র/এ.জে