ভিজিএফ সহায়তা থেকে বাদ পড়ার প্রতিবাদে রাজবাড়ী সদর উপজেলার শতাধিক কার্ডধারী জেলে সোমবার (২৬ মে) দুপুরে জেলা মৎস্য অফিসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন। তারা অভিযোগ করেন, বৈধ কার্ডধারী হয়েও তাদের নাম এবারের তালিকায় নেই, যা তাদের জন্য মারাত্মক আর্থিক আঘাত।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া জেলেরা জানান, গত বছর তারা সরকারি বরাদ্দের চাল পেয়েছেন, কিন্তু এবার অজ্ঞাত কারণে তাদের নাম তালিকায় নেই। “প্রকৃত জেলে হয়েও চাল পাচ্ছি না” স্লোগানে তারা মুখর হন এবং দ্রুত তালিকা সংশোধনের দাবি জানান।
সরকার প্রতিবছর জাটকা আহরণ নিষিদ্ধকালীন সময়ে নিবন্ধিত জেলেদের ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় দুই দফায় মোট ১৬০ কেজি চাল বিতরণ করে থাকে। তবে এবার বরাদ্দ কমে যাওয়ায় অনেক পুরনো ও বৈধ কার্ডধারী জেলে এই সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
ভবানীপুর গ্রামের জেলে কমল বিশ্বাস বলেন, “গত বছর চাল পেয়েছি, বৈধ কার্ডও আছে। এবার তালিকায় নাম নেই। আমরা বংশপরম্পরায় মাছ ধরে খাই—এটা আমাদের জন্য চরম অবহেলা।”
লক্ষীকোল গ্রামের জেলে সালাম মণ্ডল অভিযোগ করেন, “নদীতে মাছ ধরতে দেওয়া হয় না, আবার সরকারি সহায়তাও বন্ধ। অথচ যারা পেশাদার জেলে না, যেমন ভ্যানচালক বা মুদি দোকানদার, তারাই চাল পাচ্ছেন।”
জেলেদের অভিযোগ, তালিকা তৈরিতে অনিয়ম ও রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। তারা বলেন, প্রকৃত জেলেদের বাদ দিয়ে অপ্রয়োজনীয় ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রাজবাড়ী সদর উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা হালিমা সরদার জানান, “গত বছর ২,১০০ জন জেলে চাল পেয়েছিলেন। এবার বরাদ্দ কমে ১,৪০০ জনে নেমে এসেছে। ফলে অনেকে বাদ পড়েছেন।” তিনি জানান, তালিকা স্থানীয়ভাবে নয়, কেন্দ্রীয়ভাবে নির্ধারণ করা হয় এবং এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
বিক্ষুব্ধ জেলেরা জানান, তাদের দাবি না মানা হলে তারা পরবর্তী সময়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদানসহ আরও বড় পরিসরে আন্দোলনে যাবেন।
একুশে সংবাদ/রা.প্র/এ.জে