সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের ছোট আরিয়া মোহন গ্রামে এক তরুণ মোতালেব হোসেনের (২২) হঠাৎ আর্থিক উত্থান নিয়ে এলাকায় তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, ২১/২২ বছর বয়সী এই যুবক (মোতালেব) অল্প কিছুদিন আগেও সাধারণ পরিবারের সদস্য হিসেবে পরিচিত ছিল। রিক্সাচালক বাবা আর ভাইয়ের ইনকামেই চলত সংসার। আর মোতালেব কাজ করতেন স্থানীয় ডিস লাইনের বিল উত্তোলনকারী হিসেবে।
মোতালেবের এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায় একটি তিন তলা নির্মানাধীন বাড়ি আর হঠাৎ চলাফেরার পরিবর্তন। অল্প সময়ের ব্যাবধানে বিপুল সম্পদের উৎস হিসেবে এলাকাবাসী জানান, গত কয়েক মাসের ব্যবধানে ওই যুবকের পরিবারের আর্থিক অবস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা গেছে। প্রায় অল্প কিছু দিনেই পারিবারিকভাবে বিপুল পরিমাণ জমির মালিকানা, তিনতলা ভবনের নির্মাণকাজ, ব্যয়বহুল মোবাইলফোন (আইফোন), মোটরসাইকেলসহ যেন আলাদিনের যাদুর চেরাগ পাওয়ার মতো অবস্থা। তাইতো এলাকাজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে মোতালেবের পরিবার।
এলাকাবাসীর মনে একটাই প্রশ্ন: এত টাকার উৎস কোথায়!
এ বিষয়ে মোতালেবের মায়ের সাথে কথা বলে জানা যায়, এতো সবকিছু ঋণ আর জমানো অর্থের মাধ্যমেই করা হয়েছে। যদিও মোতালেবের ভাইয়ের দাবী জমি বিক্রির টাকাতেই তাদের এ পরিবর্তন। যা দুজনের কথাই অসংলগ্ন।
এলাকার কেও কেও বলছেন মোতালেবের হঠাৎ পরিবর্তনের পিছনে আছে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের ইন্ধন। নাম না প্রকাশ করা শর্তে একজন বলেন, বিগত ১ বছরে দুই থেকে তিনবার বিদেশি নাগরিকের আনাগোনা দেখা গিয়েছে মোতালেবের বাড়িতে এবং মোতালেবও বিদেশ ভ্রমণ করেছে একাধিকবার।
তবে সাধারণ পরিবার থেকে আসা এই তরুণ কীভাবে এত অল্প সময়ে বিপুল সম্পদের মালিক হলেন—এ নিয়ে এলাকায় নানা গুঞ্জন ও কৌতূহল ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ দাবি করেন, তিনি অনলাইনে কাজ করেন। তবে তাঁর প্রকৃত আয়ের উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত করে কেউ কিছু বলতে পারেননি।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, আগে তো ছেলেটি ডিস বিল তুলত। এখন হঠাৎ করে এত টাকার উৎস কোথায়, আমরা বুঝতে পারছি না। এখন জমি কেনা, বাড়ি তোলা—সব মিলিয়ে বিষয়টা রহস্যজনক লাগছে।
এ বিষয়ে মোতালেবের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানান, অনলাইনে সফটওয়্যার ডেভলপার হিসেবে কাজ করেন তিনি, সেখান থেকে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা বেতন পান। হঠাৎ পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন এ বিষয়ে তার বাবা মা ভালো জানেন।
এতো গুঞ্জন, কিন্তু নেই নির্ভরযোগ্য আয়ের উৎস, এলাকাবাসীর বক্তব্যে উঠে এসেছে নানা ধরনের কথা, তবে কোনো তথ্যই নিশ্চিত নয়। কেউ কেউ বিষয়টি স্বাভাবিকভাবে দেখছেন, আবার অনেকে আয়ের উৎস নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন।
তাইতো প্রশাসনের নজরে আনার দাবি জানিয়ে স্থানীয়রা বলছেন, হঠাৎ অস্বাভাবিক সম্পদের উৎস স্পষ্ট করা জরুরি। এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্তের দাবি তাদের।
একুশে সংবাদ/ সাএ



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

