রাজশাহীর তানোর উপজেলার তালন্দ ইউনিয়নের লালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা আগুন লাগিয়ে আসবাবপত্র ও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পুড়িয়ে দিয়েছে। বুধবার দিবাগত রাত বা বৃহস্পতিবার ভোরের কোনো এক সময় এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম। তিনি জানান, এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার দুপুরে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
স্থানীয় শিক্ষক ও এলাকাবাসীর ধারণা, এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা। উদ্দেশ্য হতে পারে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ লোপাট করা। আগুনের ঘটনার পেছনে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ রয়েছে নৈশ প্রহরী আব্দুল হাকিমের বিরুদ্ধেও, যিনি একটি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে স্কুলের আয়া অফিস কক্ষ খুলে দেখতে পান সেখানে আগুনের ধোঁয়া এবং পোড়া গন্ধ। এরপর তিনি স্থানীয়দের খবর দেন। আগুনে অফিসের আসবাবপত্র—স্টাফ টেবিল, চারটি চেয়ার, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং ওয়ালের কিছু অংশ পুড়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে ৪০-৫০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
অফিস কক্ষে তালা মারা থাকলেও জানালার ছিটকি খুলে ভেতরে আগুন দেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রধান শিক্ষক একে ‘পরিকল্পিত আগুন’ বলে উল্লেখ করেন।
স্থানীয়রা জানান, লালপুর গ্রামের নৈশ প্রহরী আব্দুল হাকিম ক্ষমতাসীন দলের পরিচয়ে অতীত সরকার আমলে প্রভাব খাটিয়ে চাকরি নেন এবং নিয়মিত দায়িত্ব পালন না করলেও তার বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পেত না। তিনি ইউপি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেম্বার আবুল হাসানের ভাই, যিনি নিজেও একাধিক মামলার আসামি।
অভিযোগ রয়েছে, আবুল হাসান স্কুল পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি থাকাকালে আটটি পদে নিয়োগ দিয়ে প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। এছাড়াও স্কুল ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমিতে অবৈধভাবে দোকান নির্মাণ, পুকুরের লিজের অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম করেছেন বলে জানান স্থানীয়রা।
নৈশ প্রহরী আব্দুল হাকিম দাবি করেন, “আমি নিয়মিত ডিউটি করি। ঘটনার দিনও রাতে স্কুলে ছিলাম। ফজরের নামাজের সময় বাড়িতে যাই। এ সময়ের মধ্যেই আগুন লাগানো হয়েছে।”
তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন বলেন, “ঘটনার বিষয়ে প্রধান শিক্ষক একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
একুশে সংবাদ/রা.প্র /এ.জে