AB Bank
  • ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

খেলার মাঠ নেই তরুণরা ঝুঁকছে মুঠোফোনে



খেলার মাঠ নেই তরুণরা ঝুঁকছে মুঠোফোনে

রাজীবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নে সরকারী ২৫ টি সরকারী প্রথমিক বিদ্যালয়,মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে ২ টি এবং একটি মাদ্রাসা আছে। এসব প্রতিষ্ঠানে হাজারো শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে কিন্তু এগুলোতে নেই কোন খেলার মাঠ।

মাঠ না থাকায় স্কুলের অবসর সময়ে শিক্ষার্থীরা খেলাধূলা করার সুযোগ পায় না। স্কুল পরবর্তী সময়ে বিকেলে বা বন্ধের দিনেও মাঠ না থাকায়  খেলাধূলার সুযোগ বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের মাঝে  স্মার্টফোন ব্যবহার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। 

এক গবেষণায় দেখা গেছে বাংলাদেশের শিশুরা প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩ ঘণ্টা স্মার্টফোন ব্যবহার করে, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক সুপারিশকৃত সর্বোচ্চ সময়ের প্রায় ৩ গুণ। সম্প্রতি বাংলাদেশে শিশুদের ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশের প্রায় ৮৬ শতাংশ প্রি-স্কুল শিশু স্মার্টফোনে আসক্ত। এদের মধ্যে ২৯ শতাংশের মারাত্মক স্মার্টফোন আসক্তি রয়েছে। অন্যদিকে মাত্র ১৪ শতাংশ শিশু অধ্যয়নের উদ্দেশ্যে স্মার্টফোন ব্যবহার করে। আরও দেখা গেছে, প্রতি ১০ জন মায়ের ৪ জনই সন্তানের স্মার্টফোন আসক্তি সম্পর্কে অবগত নন।

মোহনগঞ্জ ইউনিয়নটি নদী বেষ্টিত এবং ভাঙ্গনকবলিত । প্রায় ৪০ হাজার মানুষের বসবাস করে এবং প্রায় ৭০ ভাগ এলাকা চরাঅঞ্চল। নেই কোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্র। প্রায় প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে কোন না কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যায়।নতুন করে আবারও অন্য জায়গায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন হলেও জায়গা সংকুলান না হওয়ায় খেলার মাঠ থাকে না। বর্ষায় নৌকা আর শুষ্ক মৌসুমে বালুচর ভেঙে যাতায়াত এই জনপদের মানুষের। 

নাফিউল আজম জুয়েল নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, এখানে খেলাধুলার জন্য একটি মাঠও নেই। তাই তরুণরা বিপথে যাচ্ছে। যদি একটি খেলার মাঠ থাকত, তাহলে তাদের খেলার প্রতি উৎসাহ দেওয়া যেত। আমরা চাই যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এখানকার জন্য একটি মাঠ বরাদ্দ দিক, যাতে তরুণরা খেলাধুলা করে শারিরিক ও মানসিক বিকাশ করতে পারে।

স্থানীয় বাসিন্দা মেহেদী হাসান সোহাগ বলেন, “এই এলাকায় ভালো কোনো স্কুল নেই। চিকিৎসার জন্য  স্বাস্থ্যকেন্দ্রও নেই, নেই উপজেলা সদরের সঙ্গে কোনো রাস্তার সংযোগ। অধিকাংশ মানুষ দারিদ্র। কোন রকমে স্কুলে যায় আসে। স্কুলে খেলার মাঠের নেই এবং কোন উপকরণও নেই।ফলে অবসর সময়ে তারা পিতা মাতার বা নিজের মোবাইল ফোনে সময় কাটায়। ইন্টারনেট থাকায় অনেকেই অনলাইন জুয়া সহ নানা অপরাধ এবং নৈতিক অবক্ষয় জনিত কাজে জড়িয়ে পরছে।

৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী আশরাফুল ইসলাম জানায়, আমরা স্কুলে টিফিনের সময় খেলতে পারি না। বিকেলেও স্কুল থেকে ফিরেও কোথাও খেলার জায়গা নেই অবসর সময়টুকু মোবাইলেই কাটাই। আমাদের এখানে খেলার মাঠ থাকলে অবসর সময়টুকু খেলাধূলাতে কেটে যেত। 

মোহনগঞ্জ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, নদী ভাঙ্গনের জন্য স্কুল স্থানান্তরিত হলে নতুন জায়গায় সামান্য একটু জায়গা নিয়ে শুধু স্কুল ভবন করা হয়। মাঠের জন্য কোন জায়গা থাকে না। মাঠ না থাকায় শিক্ষার্থীরা খেলাধূলা করতে পারে না। সচেতনতার অভাবে এবং নানা কারনে শিক্ষার্থীরা  মোবাইল আসক্ত হয়ে পড়ছে বলেও জানান তিনি। 

স্থানীয় সূত্রে আরও জানাগেছে, যোগাযোগ, শিক্ষা, চিকিৎসা সবক্ষেত্রেই পিছিয়ে এই জনপদের মানুষ।   তরুণ প্রজন্মের মাঝে স্মার্টফোনের আসক্তি ব্যাপক। খেলার মাঠের অভাবে তারা সময় কাটাচ্ছে মোবাইল গেম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এদের মধ্যে অনেকেই আসক্ত হয়ে পড়ছে অনলাইন জুয়ায়। এতে নৈতিক ও আর্থিক ক্ষতি সহ নানা অবক্ষয় হচ্ছে তরুণ প্রজন্মের।

রাজীবপুর উপজেলার সাবেক ক্রিকেটার ও ফুটবলার রেজাউল করিম লিটন বলেন, শারীরিক ও মানসিক বিকাশে পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধূলাও করতে হয়। একটি ইউনিয়নে যদি খেলার মাঠ না থাকে বিষয়টি উদ্বেগজনক। মাদক, অনলাইন গেম ও জুয়া থেকে তরুণ সমাজকে ফেরাতে চাইলে খেলাধুলার বিকল্প নেই। মোহনগঞ্জ ইউনিয়নে একটি মাঠ অত্যন্ত প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।

রাজীবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে এলাহী বলেন, যদিও এটি উপজেলা প্রশাসনের সরাসরি দায়িত্ব নয়, তবে যদি কোনো খাস জমি পাওয়া যায়, সেটিকে খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।

 

একুশে সংবাদ/কু.প্র/এ.জে

Link copied!