বাগেরহাটের উপকূলীয় উপজেলা মোরেলগঞ্জের পানগুছি নদীতে চলছে চিংড়ির রেণু ও পোনা ধরার মৌসুম। ভাটার সময় নদীর বুক চিরে জাল টানেন কিশোর থেকে শুরু করে বয়স্ক জেলেরা। ছোট ছোট নেট জালে ধরা পড়ে গলদা ও বাগদা চিংড়ির অতি ক্ষুদ্র রেণু পোনা। খালি চোখে যেগুলো আলাদাভাবে শনাক্ত করাই কঠিন। তবে জীবিকার প্রয়োজনে প্রতিদিনই এসব সংগ্রহে নদীতে নামেন স্থানীয়রা।
রোববার (১৮ মে) বিকেলে মোরেলগঞ্জ ফেরিঘাট এলাকায় এমন দৃশ্য দেখা গেছে। নদীর দুই তীরজুড়ে শতাধিক জেলে মগ্ন ছিলেন রেণু পোনা ধরায়। তীরে অপেক্ষমাণ নারীরা সংগ্রহ করা রেণুগুলো প্লাস্টিকের গামলায় সংরক্ষণ করছিলেন।
মোরেলগঞ্জের খাওলিয়া, বহরবুনিয়া, পঞ্চকরন ও বারইখালী ইউনিয়নের শতাধিক পরিবারের সংসার চলছে এই রেণু পোনা আহরণের ওপর ভর করে। নদীর জোয়ার-ভাটার গতিপথ অনুযায়ী তাদের দিন চলে।
স্থানীয় জেলে রফিকুল ইসলাম (৫০) জানান,“ভাটার শুরুতেই আমরা নদীতে নামি। শেষ পর্যন্ত জাল টেনে গলদা ও বাগদার রেণু তুলি। পাইকাররা এসে কিনে নিয়ে যায়, কিন্তু ন্যায্য দাম পাই না।”
তিনি আরও বলেন,“সকালে কখনও আবার রাতের বেলাতেও নদীতে নামতে হয়। এর ওপরই নির্ভর করে সংসার চালাই, মাঝে মাঝে কৃষিকাজও করি।”
এ প্রসঙ্গে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রনজিৎ কুমার বলেন,“এই রেণু আহরণকারী জেলেদের জন্য আলাদা কোনো সরকারি সহায়তা নেই। তবে মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় জনপ্রতি বছরে ১৬০ কেজি করে ভিজিএফ চাল দেওয়া হয়।”
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে রেণু পোনা আহরণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক রয়েছে। কারণ এতে অনেক ক্ষেত্রে অন্যান্য প্রজাতির মাছের পোনা এবং নদীর স্বাভাবিক জীববৈচিত্র্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে জীবিকার তাগিদে হাজারো জেলে পরিবার এখনও এই পেশার সঙ্গে জড়িত।
একুশে সংবাদ/বা.প্র/এ.জে