নাটোরের লালপুরে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) সেচ প্রকল্পের সুফলে বদলে যাচ্ছে কৃষকের ভাগ্য। শুষ্ক মৌসুমে অল্প খরচে নিরবচ্ছিন্ন সেচ সুবিধা পাওয়ায় এক ফসলি জমি এখন দ্বি-ফসলি ও তিন ফসলিতে রূপ নিচ্ছে। এতে কৃষকের আয় ও জীবনযাত্রার মান উন্নত হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, বিএডিসি প্রকল্পের মাধ্যমে এবারের বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ ও সময়মতো সেচ দেওয়ার ফলে ধানের শীষ ছিল স্বাস্থ্যবান এবং রোগবালাইও ছিল তুলনামূলকভাবে কম।
দিলালপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক ও আব্দুল বারী বলেন, “ব্যক্তিগত ডিপ টিউবওয়েল ব্যবহার করলে সেচ খরচ অনেক বেশি পড়ত। এবার সরকারি সেচ সুবিধার কারণে অল্প খরচে বেশি জমিতে ধান চাষ করতে পেরেছি। অকেজো ১৪টি গভীর নলকূপ পুনরায় চালু হলে আরও কৃষক উপকৃত হবেন।”
উপজেলা কৃষি অফিস ও বিএডিসি সূত্র জানায়, লালপুর উপজেলায় বিএডিসি ও বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় ২৭টি এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন ১৯৫টি বিদ্যুৎচালিত পাম্পের মাধ্যমে জমিতে সেচ সরবরাহ করা হচ্ছে। এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে।
চলতি মৌসুমে ১,০৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও বাস্তবে ১,০৬৫ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এতে প্রায় ৬,৩৩০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।
বড়াইগ্রাম জোনের বিএডিসি সহকারী প্রকৌশলী জিয়াউল হক বলেন, “সেচ প্রকল্পটি কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। সরকারিভাবে নিয়মিত মনিটরিং ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। আগামী মৌসুমে নতুন এলাকাকেও এই প্রকল্পের আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রীতম কুমার হোড় বলেন, “সেচ সুবিধার পাশাপাশি কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি, সার প্রয়োগ ও কীটনাশক ব্যবহারে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিয়েছেন, যার ফলে ফলন বেড়েছে।”
কৃষকদের প্রত্যাশা—সেচ সুবিধা আরও সম্প্রসারিত হলে পুরো উপজেলাজুড়েই কৃষির উৎপাদন ও কৃষকের আয় আরও বাড়বে।
একুশে সংবাদ/না.প্র/এ.জে