শেরপুর সদরের কামারেরচর ইউনিয়নের পয়স্তিরচর, গুচ্ছগ্রাম, ৬ ও ৭ নম্বর চরাঞ্চলে চলছে শুকনো মরিচ উৎপাদনের ব্যস্ততা। চরাঞ্চলের প্রতিটি বাড়ি যেন এখন মরিচ শুকানোর ছোট ছোট কারখানা। চলতি বছর মরিচের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকদের মুখে হাসি, তবে বাজারে ন্যায্য দাম না পেলে লাভ আশঙ্কায় দিন পার করছেন অনেকেই।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, পাকা মরিচ তুলে আনা হচ্ছে খেত থেকে। নারী-পুরুষ সবাই মিলে উঠানে বিছিয়ে দিচ্ছেন লাল মরিচ। চারদিকে শুকানো মরিচের ঝাঁজ আর কর্মচাঞ্চল্যে উৎসবমুখর পরিবেশ।
কৃষকরা জানান, চরাঞ্চলের জমিতে প্রতি বছর বন্যার পর পলি পড়ে জমি উর্বর হয়। সেই জমিতে উৎপাদিত হয় শত শত টন কাঁচামরিচ। এর এক অংশ বাজারে কাঁচা অবস্থায় বিক্রি হলেও বেশিরভাগই পাকিয়ে শুকিয়ে বিক্রি হয় দ্বিগুণ দামে।
পয়স্তিরচরের কৃষাণী তাসলিমা আক্তার বলেন, “এখন কাঁচামরিচ ৩০-৩৫ টাকা কেজি, এতে আমাদের খরচ উঠে না। তাই খেতে পাকিয়ে পরে শুকিয়ে বিক্রি করি। তখন শুকনো মরিচ ২২০-২৪০ টাকা কেজি দামে বিক্রি হয়। এতে কিছুটা লাভ হয়।”
৬ নম্বর চরের কৃষক জামাল উদ্দিন জানান, “বিঘাপ্রতি ৩০-৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়। সেচ, সার, কীটনাশক বাদ দিয়ে প্রায় ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ আসে। চরাঞ্চলের মাটি মরিচ চাষে খুবই উপযোগী।”
গুচ্ছগ্রামের কৃষক হাসমত আলী বলেন,“মণপ্রতি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকায়, আর শুকনো মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৮-৯ হাজার টাকা মণে। তাই আমরা শুকনো মরিচেই ভরসা রাখছি।”
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “চরাঞ্চলের কৃষকদের মরিচ চাষে আরও আগ্রহী করতে আমরা নিয়মিত পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছি। লাভজনক হওয়ায় শুকনো মরিচ উৎপাদনে দিন দিন আগ্রহ বাড়ছে।”
এদিকে কৃষকরা অভিযোগ করছেন, ন্যায্য দাম নিশ্চিত না হলে লাভে বাঁধা পড়বে। উন্নত জাতের বীজ ও সরকারি সহায়তা পেলে আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশেই চাহিদা মেটানো সম্ভব বলে মনে করছেন তারা।
একুশে সংবাদ/শে.প্র/এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :