ময়মনসিংহের গৌরীপুরে মৃত্যুর তিন বছর এক মাস ১৩ দিন পর আদালতের নির্দেশে কবর থেকে রোকনুজ্জামান খান চপল (৩০) নামের এক ব্যক্তির লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। বুধবার (৭ মে) দুপুরে উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের কলতাপাড়া গ্রামের পারিবারিক কবরস্থান থেকে লাশ উত্তোলন করে সিআইডি পুলিশ।
চপল ওই গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে এবং পেশায় একজন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ছিলেন।
জানা গেছে, ২০২২ সালের মার্চ মাসে বাড়ির পাশের পুকুরে সেচ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে চপলের মৃত্যু হয় বলে দাবি করেছিলেন স্বজনরা। তখন স্থানীয়ভাবে তার মরদেহ উদ্ধার করে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। তবে মৃত্যুর কিছুদিন পর চপলের দ্বিতীয় স্ত্রী শাহিদা আক্তার রুমা অভিযোগ তোলেন, তার স্বামী বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যাননি—বরং তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি চপলের বড় ভাই বিপ্লব হাসান খানকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করেন।
এ অভিযোগের ভিত্তিতে রুমা আদালতে মামলা করেন। আদালত মামলাটির তদন্তভার সিআইডিকে প্রদান করেন। পরে আদালতের নির্দেশে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উদঘাটনে চপলের লাশ উত্তোলন করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এম সাজ্জাদুল হাসান, সিআইডি পরিদর্শক সাদেকুজ্জামান এবং থানা পুলিশ।
সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক সাদেকুজ্জামান জানান, “বিচারিক আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ধারণের চেষ্টা চলছে।”
বাদী শাহিদা আক্তার রুমা জানান, তার স্বামীর মাছের খামার ও এনজিও কার্যক্রম নিয়ে পরিবারের কয়েকজন সদস্য এবং স্থানীয়দের সঙ্গে বিরোধ চলছিল। চপলের মৃত্যুর পর সন্তানসহ তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বর্তমানে তিন সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন বলে দাবি করেন রুমা।
গৌরীপুর ইউএনও এম সাজ্জাদুল হাসান বলেন, “আদালতের নির্দেশে আমরা লাশ উত্তোলনের কার্যক্রম সম্পন্ন করেছি। পরবর্তী আইনগত প্রক্রিয়া সিআইডি বাস্তবায়ন করবে।”
একুশে সংবাদ/ম.প্র/এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :