AB Bank
  • ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০৮ মে, ২০২৫, ২৫ বৈশাখ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

চাঁদপুরে বিবাহ বিচ্ছেদের হার বেড়েছে প্রতিদিন তালাক হচ্ছে ২১টি করে



চাঁদপুরে বিবাহ বিচ্ছেদের হার বেড়েছে প্রতিদিন তালাক হচ্ছে ২১টি করে

চাঁদপুর জেলায় তালাক বা বিবাহ বিচ্ছেদের হার বেড়েছে। এর কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক, অপরিণত বয়সে বিয়ে, দাম্পত্যজীবনে বনিবনার অভাব, যৌতুক ও তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ প্রবাহকে দায়ী করেছেন। গত এক বছরে জেলায় যতগুলো বিয়ে নিবন্ধন হয়েছে সেই সংখ্যার অনুপাতে ৪৮ শতাংশ বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে। তাই পারিবারিক সচেতনতা বাড়ানো, ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষার ওপর জোর দিতে বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

সরকারি পরিসংখ্যানে চাঁদপুরে গড়ে প্রতিদিন তালাক হচ্ছে ২১টি করে। ব্যাপক হারে সংসার ভেঙ্গে যাওয়ার কারণ হিসেবে যে চিত্র উঠে এসেছে তার মধ্যে অন্যতম হলো অল্প বয়েসে বিয়ে, নারী নিযাতন, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক বা পরকীয়া, সামজিক মূল্যবোধের অভাব, পারিবারিক বন্ধনের ঘাটতি, যৌন অক্ষমতা আর সোস্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার।

জেলা রেজিস্ট্রার অফিসের তথ্য বলছে, গেলো এক বছরে চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়েছে ১৪৪৬৫টি। একই সময়ে তালাক বা বিচ্ছেদ হয়েছ ৭৮৯১টি, যা দিনের হিসেবে গড়ে ২১টিরও বেশি। বিবাহ বিচ্ছেদের হাড় বাড়ার হারকে আশঙ্কাজনক বলছেন বিবাহ ও নিকাহ রেজিস্ট্রাররা। তারা জানালেন, মুখে মুখে করা বিয়ে এবং কাজী ছাড়া অপ্রাপ্ত ছেলে মেয়েদের রেজিস্ট্রেশনবিহীন বিয়েগুলো বেশি ভাঙছে।

জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে যেমন বাড়ছে বিয়ে, পাশাপাশি আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে তালাক বা বিয়ে বিচ্ছেদ। সোনালী স্বপ্ন নিয়ে শুরু হওয়া সংসার ভেঙ্গে যাচ্ছে তুচ্ছ কারণেই। বিবাহ বিচ্ছেদের সংখ্যা বৃদ্ধির হারকে লাগাম টানা যাচ্ছে না কোনোভাবেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যখন চরমভাবে বিরোধ দেখা দেয়, মিলেমিশে শান্তিপূর্ণভাবে জীবনযাপন অসম্ভব হয়ে পড়ে, তখন মধুর সম্পর্ক তালাক বা বিবাহ বিচ্ছেদের মাধ্যমে ছিন্ন করা হয়। জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিবাহ বিচ্ছেদের পেছনে বড় কারণগুলো হলো, পরকীয়ার মতো অবৈধ সম্পর্ক, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে নিজেদের সিদ্ধান্তে বিয়ে, দাম্পত্যজীবনে বনিবনার অভাব, যৌতুক, বাল্যবিবাহ অন্যতম। অনেকে নিজে নিজে বিয়ে করলেও পরিবার শেষ পর্যন্ত সম্মতি না দেওয়ায় পারিবারিক কলহ বাড়ছে। এছাড়া কমছে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও অনুশাসন মানার প্রবণতা।

চাঁদপুরের বেশ কয়েকজন কাজী জানিয়েছেন, আগে তালাকের প্রধান কারণ ছিল দরিদ্রতা বা পারিবারিক ব্যয়বহনের অক্ষমতা। সেই সঙ্গে শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে দ্বন্দ্বের জের ধরে পারিবারিক অশান্তি থেকে তালাক। এছাড়া ছিল নানা কলহ-বিবাদের জেরে স্ত্রীকে নির্যাতন। এই সমস্যাগুলো যেসব এলাকায় অভাব-দারিদ্র্য বেশি সেসব এলাকায় বেশি হতো। অনেক ক্ষেত্রে গ্রামের দরিদ্র বাবা-মায়ের সন্তান লালনপালনের সক্ষমতা কম থাকায় মেয়ে একটু বড় হলেই বিয়ে দিয়ে দিতেন। তুলনামূলক অনেক বেশি বয়সের স্বামীর ঘর করতে না পারায় হতো তালাক। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধর্মীয় অনুশাসন কমে গিয়ে নৈতিক অবক্ষয় বেড়ে যাওয়া, অবাধ তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক স্থাপনের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় তালাক বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি বিবাহ বিচ্ছেদ হয় বোঝাপড়ার অভাবে।

চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনালের স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট শিরিন সুলতানা মুক্তা বলেন, তালাক বা বিচ্ছেদ হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় মেয়ে ও পরিবারের শিশু সন্তানরা। ক্রমাগত মানুষ হয়ে উঠছে অসহিষ্ণু, অমানবিক। বিচ্ছেদের আবেদনের পর দাম্পত্য সম্পর্ক ফিরে পেতে সমঝোতা হয়েছে নগন্য। নির্যাতন-পীড়ন থেকে আনেক নারী তালাকে খুঁজছেন মুক্তি। অনেকে আত্মহণনের পথকে বেছে নিয়েছেন। আবার সংসার টিকিয়ে রাখার শেষ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে তালাক দিচ্ছেন অনেক পুরুষ, জানালেন এই আইনজীবী।

চাঁদপুর পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব জানান, বিবাহ বিচ্ছেদে প্রবাসীও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অনেক প্রবাসীর স্ত্রী অন্যের হাত ধরে পালিয়ে যায়। পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় নিখোঁজ জিডি ও মামলা হলেও পরবর্তীতে সত্যতা পাওয়া যায় না। দেখায় প্রাপ্তবয়স্ক নারী স্বেচ্ছায় ঘর ছেড়েছেন। এ জন্য সচেতনতার বিকল্প নেই বলে জানালেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
 

একুশে সংবাদ/চাঁ.প্র/এ.জে

Shwapno
Link copied!