বাবার চালের ব্যবসা দেখাশোনা করতেন আব্দুল্লাহ আল মামুন। কৃষক পরিবারের সন্তান হওয়ায় ছোটবেলা থেকেই তার ছিল কৃষির প্রতি মারাত্মক ঝোঁক। সবসময় স্বপ্ন দেখতেন কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার। তাই তো দোকানে বসে ব্যবসা করার পাশাপাশি ইউটিউব দেখে দেখে কৃষির প্রতি মায়ায় জড়িয়ে যান মামুন।
কৃষি উদ্যোক্তা`র সেই স্বপ্নপূরণে ব্যবসা করার পাশাপাশি ২০২০ সাল থেকে নিজেদের জমিতে পারিবারিক কৃষি চাহিদা মেটানোর জন্য শুরু করেন বিভিন্ন সবজির চাষ। পাশাপাশি দেশের বৃহত্তম হাকালুকি হাওরে নিজেদের পতিত জমিতে শুরু করেন সূর্যমুখী ও সরিষার চাষ। পরে হাওরে সাথি ফসল হিসেবে বিভিন্ন সবজির চাষও শুরু করেন তিনি। এছাড়া বাড়ীর পাশের নিজেদের ফেলে রাখা জমিতে ইউটিউব দেখে দেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে ভালো জাতের চারা সংগ্রহ করে বর্তমানে টমেটো, তরমুজ, আলু, কচু ও শশাসহ বিভিন্ন জাতের ফসল ফলানোর মাধ্যমে বর্তমানে তিনি একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। তাঁর কৃষি জমিতে কাজ করে অনেকের যেমন কর্মসংস্থান হয়েছে তেমনি স্থানীয় উপজেলায় সাধারণ মানুষের সবজির চাহিদা মেটাতে পেরে খুশি মামুন।
কৃষির প্রতি টান দেখে উপজেলা কৃষি অফিস সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে করে দিয়েছেন গ্রীন হাউস প্রকল্প। মামুন এখন গ্রীন হাউস পদ্ধতিতে চাষের মাধ্যমে অসময়েও সব্জির জোগান বেশি রাখতে পারছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ৫ একর আয়তনের জমিতে কয়েক ভাগে তিনি টমেটো, তরমুজ, আলু, কচু ও শশাসহ বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করেছেন। প্রতিদিন মামুন নিজেদের ব্যবসা দেখাশোনা করার পাশাপাশি কাজ করেন কৃষি জমিতে। মামুনের কৃষি সাফল্য দেখে আশে পাশের এলাকার অনেকেই স্বপ্ন বুনছে কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেকেই আসেন তাঁর কৃষি প্রজেক্ট দেখার জন্য।
কৃষি উদ্যোক্তা মামুন জানান, ছোটবেলা থেকে কৃষির প্রতি একটা টান ছিল। বাবার ব্যবসা দেখাশোনার পাশাপাশি ইউটিউব দেখে কৃষি কাজের প্রতি আকৃষ্ট হই। বর্তমানে কৃষি অফিসের সহায়তায় গ্রিনহাউজ প্রকল্পের মাধ্যমে অসময়ে সবজি চাষ করছি। এছাড়া বাড়ীর পাশের ৫ একর আয়তনের জমিতে কয়েক ভাগে টমেটো, তরমুজ, আলু, কচু ও শশাসহ বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করেছি। দিন দিন কৃষির পরিধি বাড়াতে পারায় অনেক ভালো লাগছে। যুবক ও বেকারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, প্রথমে অল্প অল্প করে চাষ করে ধীরে ধীরে এগোতে হবে। একসময় কৃষির মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্য বদলের পাশাপাশি এলাকার খাদ্য ঘাটতির পূরণে যুবকরাই পারে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহমুদুল আলম খান বলেন, মামুন একজন তরুণ উদ্যমী কৃষক। কৃষির প্রতি টান দেখে তাকে আমরা উপজেলা থেকে পলি নেট হাউস দিয়েছে। তার আগ্রহ দেখে এলাকার অনেক কৃষক অনাবাদি জমি চাষের আওতায় আনছে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

