ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় তুচ্ছ ঘটনায় দুই দল গ্রামবাসীর মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১৫ জন লোক আহত হয়েছেন। শনিবার দুপুরে ভাঙ্গা উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের খাপুরা গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয় গ্রুপই বিএনপি`র সমর্থক বলে দাবি করেন
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, খাপুরা গ্রামে গতকাল শুক্রবার মিরাজ শিকদার ও বিপক্ষ গ্রুপের সাদু মাতুব্বর দলের আজিম ফকিরকে মারধর করে। সেই জের ধরে সাদু মাতুব্বরের লোকজন প্রতিশোধ নিতে মিরাজকে খুঁজতে থাকে। শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে মিরাজ শিকদার বাজারে গেলে সাদুর লোকজন তাকে(মিরাজকে) ধাওয়া করে।
তখন উভয় গ্রুপ সঙ্গবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ঢাল শরকি টেটা ইট সহ পাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তখন এরা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চালায়। ঘন্টাখানে সময় পর্যন্ত চলে সংঘর্ষ। খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
ততক্ষণে উভয় গ্রুপের ১৫ জন সমর্থকরা আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে মিরাজ শিকদার দলের তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন এরা হচ্ছে- শিপন সিকদার(২৬),নুরু সেখ(৫০) ও বিপ্লব ফকির(৪০)। গুরুতর আহতদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্য আহতদের মধ্যে চারজনকে ভাঙ্গা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন এবং অন্যরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এ ঘটনায় মিরাজ শিকদারের স্ত্রী হামিরদী ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার নাজমা বেগম জানান, আমরা গ্রামে নির্যাতিত ও নিষ্পেষিতভাবে জীবন যাপন করছি এই সাধু মাতুব্বরের অত্যাচারে, তাকে চাদা না দিয়ে গ্রামে থাকা যায় না। তিনি নিক্সন চৌধুরীর দাপটে ১৫ বছর শাসন করে চলেছেন। আজিম ফকির নামের একটি ছেলে আমার স্বামী (মিরাজ শিকদারকে) ধাক্কা দেয়, আবার ছেলেটি বলে তোকে ধাক্কা দিলে কি হবে? এ নিয়েই সংঘর্ষের সূত্রপাত। মিরাজ শিকদার দাবি করেন তিনি শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ন আহ্বায়ক।
এদিকে অন্য দলের নেতা সাধু মাতুব্বর বলেন, আমরা বিএনপি`র লোক, ১৫টি বছর ধরে মিরাজ শিকদার কাজী জাফরউল্লার সাথে মিশে আমাদেরকে হয়রানি করে আসছে, আমাদেরকে বিগত ১৫ বছর কোনঠাসা করে রেখেছে, কয়েকদিন আগে আমার এক ভাতিজা আজিমকে মারধর করে মিরাজ শিকদার। আমরা সালিশের দিকে তাকিয়ে আছি মীমাংসা করতে, কিন্তু মিরাজ মীমাংসা না করে আমার আরেক ভাতিজা বাবুকে শনিবার সকালে বাজারে একা পেয়ে তাকে মারধর করে, তখন আমরা সংঘর্ষে লিপ্ত হই। আমাদের গ্রুপের সাত, আট জন আহত হয়েছে।
এ বিষয়ে ভাংগা থানার অফিসার ইনচার্জ মোকসেদুর রহমান জানান, খাপুরা গ্রামে দুই গ্রুপের মাঝে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে সংঘর্ষে কয়েকজন আহত হয়, খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে, বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে, এখন পর্যন্ত কোন পক্ষের অভিযোগ পাইনি, পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধারণ ডায়েরি করে রেখেছি।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :