AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৬ মে, ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

পঞ্চগড়ে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে হত্যা করা হয় টাবুলকে, ইজিবাইক ছিনতাইয়ে ভায়রাকে হত্যা!


Ekushey Sangbad
ডিজার হোসেন বাদশা, পঞ্চগড়
০৬:২৪ পিএম, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
পঞ্চগড়ে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে হত্যা করা হয় টাবুলকে, ইজিবাইক ছিনতাইয়ে ভায়রাকে হত্যা!

মাত্র ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে খুনী ভাড়া করে পঞ্চগড়ের সদর উপজেলার কৃষক টাবুল বর্মনকে কুড়াল দিয়ে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে হত্যা করেন পরকীয়া প্রেমিকা ললিতা রানী। অপরদিকে জেলার বোদা উপজেলায় ইজিবাইক ছিনতাইয়ের জন্য ভায়রা ইজিবাইক চালক নুরুল ইসলামকে সহযোগীদের নিয়ে হাতপা বেধেঁ শ্বাসরোধে হত্যা করেন ভায়রা জালাল। 

শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় পঞ্চগড়ে উদ্ধার হওয়া দুইটি মরদেহের হত্যাকান্ড নিয়ে শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গত ৩১ জানুয়ারি মাগুরা ইউনিয়নের লাখেরাঘুমটি গ্রামের মৃত ভগিরাম বর্মনের ছেলে টাবুল বর্মন নিখোঁজ হয়। এর পর তার ছোট ভাই গোবিন্দ চন্দ্র বর্মন নিখোঁজ সংক্রান্তে গত ০১ ফেব্রুয়ারি পঞ্চগড় সদর থানায় একটি সাধারন ডাইরী (সাধারন ডাইরী নং-২৮, তারিখ-০১/০২/২০২৪ খ্রিঃ) করেন। এর পর পুলিশ তদন্ত শুরু করলে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ও বিভিন্ন উৎস থেকে ভিকটিমের সর্বশেষ অবস্থান হাড়িভাসা এলাকায় পাওয়া যায়। এবং ভিকটিমের সাথে প্রতিবেশী (পরকিয়া প্রেমীকা) মন্টু বর্মনের স্ত্রী ললিতা বর্মন (৪০) ও তার মেয়ে মনিকা রানী বর্মন (২০) এবং হাড়িভাসা এলাকার তুলেন চন্দ্রের ছেলে জামাই প্রভাত চন্দ্র রায়ের (৩৩) মোবাইল নম্বরের সংশ্লিষ্ঠতা থাকায় তাদেরকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর মাঝে ভিকটিম টাবুলের নিখোঁজের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায় পুলিশ। জানা যায়, টাবুল দীর্ঘদিন যাবৎ প্রতিবেশী ললিতার সাথে গোপন সম্পর্ক রাখে (পরকিয়া)। একপর্যায়ে ললিতাকে গোপন একটি মোবাইল ও সীম কিনে দেয় এবং যোগাযোগ অব্যাহত রাখে। কিন্তু ছেলে মেয়ে বড় হয়ে যাওয়ায় সম্মানের দিকে তাকিয়ে ললিতা এই অবৈধ সম্পর্ক চালিয়ে যেতে না চাইলেও টাবুল সম্পর্ক অব্যাহত রাখে। একপর্যায়ে ললিতা ক্ষুব্ধ হয়ে তার পুরুষাঙ্গ কেটে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। ললিতা বিষয়টি পরিচিত রফিকুল ইসলাম ও মোন্তাজকে অবগ করে টাবুলকে হত্যার জন্য ৩০ হাজার টাকার চুক্তি করে ললিতা। পরবর্তীতে ললিতা বর্মন ৩ দফায় মোন্তাজ ও রফিকুল ইসলামকে ১৮ হাজার টাকা দেয়। ঘটনার দিন পরিকল্পনামতে (৩১ জানুয়ারি) ললিতা ভিকটিমকে ফোনে হাড়িভাসা জয়গুন মার্কেট এলাকায় ডেকে নিয়ে জামাতা প্রভাসের মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে চাকলারহাট ডোলোপাড়া গ্রামে ঘটনাস্থলে নিয়ে মোন্তাজ ও রফিকুলের মাধ্যমে ধারালো ছোট কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে মাটি চাপা দেয়। গ্রেফতারের পর ললিতার দেয়া তথ্যমতে ঘটনাস্থল থেকে মাটি খুড়ে লাশ উত্তোলন করা হয় এবং হত্যার কাজে ব্যবহৃত কুড়ালটি উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়।

এদিকে, গত ২৭ জানুয়ারি জেলার বোদা উপজেলার কাউয়াখাল গ্রামের মৃত ইয়াছিন আলীর ছেলে নুরুল ইসলাম নিজ বাড়ী থেকে ব্যাটারি চালিত অটোগাড়ি নিয়ে বের হয়। এবং গভির রাত হওয়ায় নুরুল বাড়িতে না ফেরায় বোদা থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করা করে পরিবার (জিডি নং-১৬৬৩, তারিখ: ২৮/০১/২০২৪)। এর পর থানা পুলিশ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তায় দেবীগঞ্জের দেবীডোবা ইউপির সুলতানপুর ছলিপাড়া ধামের সামনে পরিত্যাক্ত অবস্থায় ভিকটিমের ব্যবহৃত ব্যাটারী চলিত অটোরিকশা উদ্ধার করে। এর পরেও ভিকটিমের কোন সন্ধান না পাওয়ায় নুরুলের স্ত্রী শেফালী বেগম বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করলে (বোদা থানার মামলা নং-৩৩, তারিখ ৩০/০১/২০২৪, ধারা-৩৮৬/৩৬৫/৩৪ পেনাল কোড-১৮৬০) মামলার প্রাথমিক তদন্তে প্রযুক্তিগত সহায়তায় মামলার ঘটনার সাথে সন্দিগ্ধ আসামী কুমারপাড়া গ্রামের মৃত ওমর আলীর ছেলে আলমকে (২৪) গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। 

জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আসামী আলম তার ৩/৪ জন সহযোগীসহ একটি অটো ছিনতাই করার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনামত গত ২৭ জানুয়ারি রাতে ৩/৪ জন সহযোগীসহ মাড়েয়া বাজার এলাকা থেকে সাওতালপাড়া ঘাট এলাকায় যাওয়ার জন্য নূরুল ইসলামের অটো ভাড়া করে। নূরুল ইসলাম মাড়েয়া বাজার থেকে সাওতালপাড়া ঘাট এলাকার পৈাছালে আসামী আলমসহ তার সহযোগীরা মিলে ভিকটিম নূরুল ইসলামকে হত্যা করে হাত-পা বেধে করতোয়া নদীতে ফেলে দেয়। পরে শুক্রবার বিকেলে একই এলাকা থেকে নুরুলের ভাসমান মরদেহ স্থানীয়দের মাধ্যমে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে পুলিশ।

এসময় পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এসএম শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অবস্) কনক কুমার দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আমিরুল্লাহ, সদর থানার ওসি প্রদীপ কুমার রায়, বোদা থানার ওসি মোজাম্মেল হক সহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা আরো বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা তদন্ত সাপেক্ষে মরদেহ উদ্ধারসহ এর সাথে জড়িতদের শনাক্ত করেছি। ইতিমধ্যে কয়েক জনকে আটক হলেও পৃথক দুই ঘটনার সাথে আরো জড়িত আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি তাদের সবাইকে অতি দ্রুত গ্রেফতার করতে আমরা সক্ষম হোব।

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

Link copied!