দেড় বছর আগে যে জায়গাটিতে ছিল শুধু ফুলের বাগান। গত দেড় বছরে সেখানেই বইপ্রেমীদের আড্ডায় মুখরিত থাকতে দেখা গেছে। প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশে স্থাপিত এই লাইব্রেরি এরই মধ্যে বই প্রেমীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। ছোট-বড় সব বয়সী পাঠক লাইব্রেরিতে এসে নিজেদের পছন্দের বই পড়ছে।
মানুষকে বই পড়তে উদ্বুদ্ধ করতে ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান`র উদ্যোগে এ উন্মুক্ত লাইব্রেরি নির্মাণ করা হয়। লাইব্রেরির নামকরণ করা হয় ‘নির্ঝরিণী’।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা পরিষদের শিশু পার্কটির চারদিকে সবুজের সমারোহ। বিকেল হলেই সময় কাটাতে আসেন নানা বয়সী মানুষ। সবুজে ঘেরা প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশে স্থাপন করা হয়েছে উন্মুক্ত লাইব্রেরি `নির্ঝরিণী`।
এলাকায় গণপাঠাগার থাকলেও পার্কের ভেতরে উপজেলার উন্মুক্ত লাইব্রেরি এটিই প্রথম। উন্মুক্ত লাইব্রেরিতে রয়েছে চার তাকওয়ালা বুকশেলফ, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন লেখকের গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, ইতিহাস, সংস্কৃতি, শিশুতোষ ও ধর্মীয়সহ পাঁচ শতাধিক বই। অসাধারণ নির্মাণশৈলীর উন্মুক্ত এ লাইব্রেরি দেখে মুগ্ধ হচ্ছে দর্শনার্থীরা। রাতের বেলাতেও রয়েছে আলোর ব্যবস্থা। লাইব্রেরি চত্বরে স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক নির্বাচিত সিনিয়র সহ-সভাপতি ও পৌর সদরের চৌবাড়ীয়া মাষ্টার পাড়া মহল্লার বাসিন্দা আলহাজ্ব শেখ আব্দুস সামাদ মাষ্টার (অব: প্রধান শিক্ষক) বলেন, শুধু বই পড়ার জন্য কেউ পাঠাগারে যেতে চায় না। ভাঙ্গুড়ার উন্মুক্ত এ পার্কে লাইব্রেরি থাকায় বিনোদন ও জ্ঞান চর্চার উভয় ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।
উন্মুক্ত লাইব্রেরি নির্ঝরিণি`র বিষয়ে ভাঙ্গুড়া উপজেলার বাসিন্দা ও নবম- দশম শ্রেণির রসায়ন বইয়ের লেখক বিদ্যুৎ কুমার রায় বলেন, বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে, এখন মানুষের মনস্তাত্বিক উন্নয়ন প্রয়োজন প্রয়োজন। ‘জ্ঞানার্জনের জন্য বই পড়ার কোনো বিকল্প নেই। বই পড়তে মানুষকে আগ্রহী করে গড়ে তুলতে প্রয়োজন পাঠাগার বা লাইব্রেরি। উন্মুক্ত এই লাইব্রেরি স্থাপনের ফলে স্থানীয়দের অবাধ জ্ঞানচর্চার সুযোগ সৃষ্টি হলো যেটি প্রসংসার দাবিদার।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খাঁন বলেন একুশে সংবাদ. কমকে বলেন, আমি বিশ্বাস করি আমাদের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি চিন্তা, চেতনা, মনন তথা সামাজিক উন্নয়নের সমান অগ্রগতির প্রয়োজন রয়েছে। চিন্তার বিকাশের বড় হাতিয়ার হলো বই। ‘মননশীলতার চর্চা করতে হলে বই পড়ার বিকল্প নেই। মানুষের মাঝে বই পড়ার প্রতি আগ্রহ জাগাতেই আমার এই প্রয়াস।
একুশে সংবাদ/বিএইচ