কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় উদ্ধার করা নিহত ১৭ জনের মধ্যে ১৫ জনের মরদেহ শনাক্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) রাতে কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক সাজ্জাদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, এখন পর্যন্ত ১৫ জনের লাশ শনাক্ত করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দুই জনের আঙুলের ছাপ মিলছে না। শনাক্ত করে জেলা প্রশাসন ও পুলিশের মাধ্যমে লাশ হস্তান্তর করা হবে।
যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে তারা হলেন, কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার জিল্লুর রহমানের ছেলে হুমায়ুন কবির (৫৭), ভৈরব উপজেলার প্রবুদ চন্দ্র শীলের ছেলে সবুজ চন্দ্র শীল (৫০), ভৈরব রাধানগরের আব্দুল মান্নানের ছেলে আফজাল হোসেন (২৪), ভৈরবের মানিক মিয়ার ছেলে রাব্বি মিয়া (১৪), ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইলের শবত আলীর ছেলে মিজান উদ্দিন সরকার (৬৫), ময়মনসিংহ নান্দাইলের একই পরিবারের শিরু মিয়ার মেয়ে ফাতেমা বেগম (৩০), একই এলাকার সাইজ উদ্দিনের ছেলে সুজন মিয়া ও সুজন মিয়ার দুই ছেলে ইসমাইল (০৮) ও সজিব (১১), ঢাকার দক্ষিণখান এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে একেএম জালাল উদ্দিন আহমেদ (৩৬), কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি এলাকার কাশেম মিয়ার ছেলে গোলাপ মিয়া (৩৪), মিঠামইন এলাকার চাঁন মিয়ার ছেলে সায়মন মিয়া (২৩), একই এলাকার হবিদ মিয়ার ছেলে রাসেল মিয়া (১৪), ময়মনসিংহ নান্দাইলের আরজু মিয়ার মেয়ে হোসনা আক্তার (২৩)।
এদিকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. ইমরান হোসেন জানান, আহত অবস্থায় ৭০ জনকে আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে অনেককে গুরুতর অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল। দুর্ঘটনার খবরের পরপরই আহত ও নিহতদের খোঁজে হাসপাতালে ভিড় জমাচ্ছেন স্বজনরা। ভিড়ের কারণে চিকিৎসা কার্যক্রমে কিছুটা বিঘ্ন হচ্ছে। পুলিশ চেষ্টা করছেন ভিড় কিছুটা কমানোর জন্য। তাই নিহতদের পরিচয় শনাক্ত সহজ করার জন্য হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে একটি বড় পর্দায় নিহতদের ছবি প্রদর্শন করা হয়েছিল।
এর আগে বিভিন্ন সূত্রে ২৪ জন যাত্রীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও সরকারিভাবে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ১৭ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন।
প্রসঙ্গত, সোমবার (২৩ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে কিশোরগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা এগারসিন্দুর গৌধুলি ট্রেনের সঙ্গে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। মালবাহী ট্রেনটি ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দিকে যাচ্ছিল। একই সময় ভৈরব থেকে ঢাকায় যাচ্ছিল যাত্রীবাহী ট্রেন এগারো সিন্ধুর গোধুলি। ভৈরব রেলস্টেশনের আউটার পয়েন্টে ক্রসিংয়ে যাত্রীবাহী ট্রেনের শেষ তিন বগিতে ধাক্কা দেয় মালবাহী ট্রেনটি। এতে যাত্রীবাহী ট্রেনের কয়েকটি বগি উল্টে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, সিগনালিংয়ের কোনও জটিলতার কারণে ঘটনাটি ঘটেছে।
একুশে সংবাদ/ন.ন.প্র/জাহা



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

