AB Bank
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

থানচিতে জুমের কীটনাশক ব্যবহারে ধানের সাথি ফসলের প্রভাব


থানচিতে জুমের কীটনাশক ব্যবহারে ধানের সাথি ফসলের প্রভাব

পাহাড়ের ভূমিতে জুম চাষের ঘিরে যাদের স্বপ্ন, চিরচারিত প্রথা জুম চাষাবাদ টিকিয়ে রাখার জন্য আদিবাসীদের এতো সংগ্রাম। একই জমিতে একাধিকবার চাষাবাদে কারণে আদি প্রথা জুম সেটি টিকিয়ে রাখার মুশকিল। 

 

প্রতি বছরে মতো এবছরেও বান্দরবানে থানচিতে জুম চাষিদের পাহাড় জুঁড়ে জুমের ধানে সবুজ রঙের এখন সোনালী রুপের ধারন করেছে। কারো কারো জুমের ধান কাঁটছে, আবার কারো কারো জুমের কাঁচা ধানের পাঁকতে শুরু হচ্ছে। সেই জুম পাহাড়ের জুমের পাকা ধানের নবান্ন উৎসবমুখরে আদিবাসীদের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক থাকার কথা! কিন্তু না, তবে কেন? কীটনাশক ব্যবহারে হতে বেরিয়ে আসতে উৎপায় বা-কি? এসবই প্রশ্নের ঘুরপাক খাচ্ছে জুমচাষিদের মনে।

জুম চাষের মাটিতে আগাছার দমনে বিভিন্ন ধরনে কীটনাশক ব্যবহারে জুমের সাথি ফসল হরেকরকমের ফলমূল ও শাকসবজি’সহ ধানের উপরেও কিছুটা প্রভাব পড়েছে। জুমের ধানের প্রয়োজনে বৃষ্টি নাই, অপ্রয়োজনে অতিবৃষ্টি ফলে ফলন তেমন ভালো হয়নি। আবার জুমের কাঁচা ধানের ফলন ভালো হলেও পরবর্তীতে পাকা ধানের ফলন ঝরে পড়ে যায়। বিভিন্ন ধরনে পোকামাকড় কামড়ে ধানের ক্ষতির সম্মুখীন এবং জুমের ধানের সাথি ফসলে মিষ্টি কুমড়া, ভূট্টা, মারফা, সাদা কুমড়া, মরিচ, বেগুন, যব, তিল, পুঁই ও টকপাতাসহ হরেক রকমের শাক-সবজি চাষের উপরে অতি বৃষ্টি ও আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় ক্ষতি সম্মুখীনে জুম চাষাবাদে বিরূপ প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন- জুম চাষিরা।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, থানচি সদর’সহ তিন্দু, রেমাক্রী ও বলিপাড়া ইউনিয়নের জুম চাষিদের জুমের কাঙ্খিত ফসলের ফলন তেমন ভালো হয়নি। জুমের প্রয়োজনে বৃষ্টি নাই, অপ্রয়োজনে অতিবৃষ্টির এবং জুমের আগাছার দমনে বিভিন্ন ধরনে কীটনাশক স্প্রে করার ফলে কোনো কোনো জুমের ধানের পাশাপাশি হরেকরকমের ফলমূল ও শাকসবজি উপর প্রভাব পড়েছে। প্রতি বছরে তুলনায় এবছরে জুমের হরেকরকমের ফলমূল ও শাকসবজি ফলন তেমন ভালো হয়নি। 

 

আরো জানা যায়, পাহাড়ের জুমিয়া পরিবার গুলো প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি, মার্চ মাসের দিকে জুম চাষের জন্য জঙ্গলে কাটানো হয়। এপ্রিল মাসের শেষদিকে জুমের আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। আর মে-জুন মাসের দিকে আগুনে পোড়ানো মাটিতে ধান’সহ হরেকরকমের ফলমূল ও শাকসবজি বীচ চাষ শুরু করা হয়। এবং সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরের মাসের জুমের পাকা ধানের ফলন ধান কেটেঁ ঘরে তোলেন। এবং জুমের ধানের সাথি ফসল হরেকরকমের ফলমূল ও শাকসবজি জুম থেকে তোলে বাজারজাত করে থাকে। এতে ধান’সহ হরেকরকমের ফলমূল ও শাকসবজি বিক্রি করে বছর জুড়ে নিজেদের বসবাসের উপযোগী গড়ে তোলেন জুম চাষিরা।

 

থানচি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চার ইউনিয়নে চলতি অর্থবছরে ৮০০ হেক্টর জায়গায় জুম চাষ করা হয়েছে। সম্ভাব্য চালের উৎপাদন ৩ হাজার ১২ মেট্রিক টন। ২ হাজার ৫৫০ পরিবার এবার জুম চাষ করেছে। 

থানচি সদরে জুমচাষী প্রুসিংঅং মারমা, রাইখ্যাং ম্রোঃ, মানসাং ম্রো’সহ বেষ্ট কয়েকজনে জুমচাষিরা বলেন, প্রতি বছরে ন্যায়ের এবছরে জুম চাষিদের জুমের কাঙ্খিত ফসলের ফলন তেমন ভালো হয়নি। বর্ষার মৌসুমে পাহাড় ধ্বসের পড়ে জুমখেত নষ্ট, আগাছা দমনে কীটনাশক ব্যবহারে জুমের ধানের সাথি হরেকরকমের ফলমূল ও শাকসবজি উপর প্রভাব পড়েছে। এতে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে জুমচাষিরা।

 

জুমচাষিরা আরো বলেন, প্রতি বছরে মতো পাহাড়ি অঞ্চলে জুমের ধানের পাশাপাশি ভুট্টা, মরিচ, যব, সরিষা, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, বেগুন, কাকন ধান, মারফা, তিল, পুঁই ও টকপাতাসহ হরেক রকমের শাক সবজি চাষ করেছে। অতি বৃষ্টি ও আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় এবার জুম চাষাবাদে বিরূপ প্রভাব পড়ে ব্যাপক আকারে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

 

জুমচাষী ঙানয়াং ম্রো, পুসিংমং মারাম বলেন, আগের দিনের প্রতি বছরে জুমের ধানের সাথি হরেকরকমের ফলমূল ও শাকসবজিগুলো বিক্রি করে বাজার করার অনেক খরচ বাঁচা যেত। জুমের ধানও অনেক ফলন ভালো হতো। ইদানি বাজারে বিভিন্ন ধরনে কীটনাশক স্প্রে দিকে ঝুঁকেছে জুম চাষিরাও। আগাছার দমনে বিভিন্ন ধরনে কীটনাশক স্প্রে ব্যবহারে জুমের ধানের সাথি হরেকরকমের ফলমূল ও শাকসবজি উপর প্রভাব পড়েছে। এমনিতেই ক্ষতি সম্মুখীন হচ্ছে জুমচাষিরা। কীটনাশক ব্যবহার দমনে কোনো উদ্যোগ না নিলে ভবিষ্যতে ব্যাপক আকারে ক্ষতি সম্মুখীন হবে বলে জানান স্থানীয় জুম চাষিরা।

এদিকে থানচি বাজারে সাপ্তাহিক হাট বাজারে ঘুরে দেখা যায়, সাপ্তাহিক হাট বাজারে বিভিন্ন গ্রাম হতে পাহাড়ি জুমের ফলমূল ও শাকসবজি বিক্রি করেছে জুমিয়া নারীরা। পাহাড়ি মরিচ, মিষ্টি কুমড়া, ভুট্টা, মারফা, পুঁই ও টকপাতাসহ হরেক রকমের শাক-সবজিগুলো হস্তদামের বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতি বছরে ন্যায় এবছরের জুমের সাথি ফসল ফলন ভালো হয়নি। পাহাড়ি জুমের কীটনাশক ব্যবহারে ফলে ধানের পাশাপাশি জুমের সাথি ফসলে ক্ষতি সম্মুখীন হচ্ছে বলে ধারনা করেছেন- জুমিয়া নারীরা।

 

থানচি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দাশ গুপ্ত বলেন, এবছরে শুরুতে বৃষ্টিপাত কম ও শেষের দিকে অতিবৃষ্টি হওয়ার কারণে থানচিতে জুমের ঢালু জায়গায় জুমের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। অতিবৃষ্টির কারণে জুমের ধানের সাথি ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে। জুমচাষিদের ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে মন্ত্রণালয়, জেলা কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। জুমের আগাছা দমনে কীটনাশক ব্যবহারে প্রতিরোধ করতে জুমচাষিদের এগিয়ে আসতে হবে। কৃষি দপ্তরের সকল ধরনে সর্বোচ্চ সহযোগিতা প্রদান করা হবে বলে জানান তিনি।

 

একুশে সংবাদ/স ক 


 

Link copied!