অবশেষে তিস্তার বুকে দাঁড়াল উত্তর জনপদের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত সেতু। গাইবান্ধার হরিপুর-চিলমারী সড়কে নির্মিত ১৪৯০ মিটার দীর্ঘ ‘মওলানা ভাসানী সেতু’ বুধবার (২০ আগস্ট) উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হলো।
দুপুরে সুন্দরগঞ্জ প্রান্তে সেতুর ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। উদ্বোধন শেষে মিলাদ ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, এলজিইডির কর্মকর্তা এবং সেতু নির্মাণ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। সেতু এলাকায় উৎসুক মানুষের ভিড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। ভোর থেকেই দুই জেলার মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে ছুটে আসেন ঐতিহাসিক এই মুহূর্তের সাক্ষী হতে।
২০১৪ সালের জানুয়ারিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। নানা জটিলতা পেরিয়ে ১১ বছর পর সৌদি সরকারের অর্থায়ন ও চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে সেতুটি সম্পন্ন হয়। প্রকল্প ব্যয় হয়েছে প্রায় ৮৮৫ কোটি টাকা।
সেতু চালুর ফলে গাইবান্ধা, কুড়িগ্রামসহ উত্তরাঞ্চলের কৃষি ও শিল্পপণ্যের পরিবহন সহজ হবে। স্বল্প খরচে উৎপাদিত পণ্য রাজধানী ও দক্ষিণাঞ্চলে পৌঁছানো যাবে। ভুরুঙ্গামারী স্থলবন্দরের দূরত্ব কমবে ৪০-১০০ কিলোমিটার। এর ফলে শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলবে।
নামকরণ নিয়ে বিতর্ক
স্থানীয়দের দাবি ছিল মুক্তিযোদ্ধা ও আন্দোলনের পথিকৃৎ শরিতুল্যাহ মাস্টারের নামে সেতুটির নামকরণ করা হোক। তিনি ১৯৯৫ সাল থেকে আন্দোলন চালিয়ে ‘তিস্তা সেতু বাস্তবায়ন কমিটি’ গঠন করেছিলেন। তবে গত ১০ আগস্ট সরকারি প্রজ্ঞাপনে সেতুর নামকরণ করা হয় ‘মওলানা ভাসানী সেতু, গাইবান্ধা’।
সব বিতর্ক ছাপিয়ে উদ্বোধনের দিন তিস্তার দুই পারে ছিলো শুধু উচ্ছ্বাসের ঢেউ। দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণের আনন্দে গাইবান্ধা-কুড়িগ্রামের মানুষের চোখে-মুখে ফুটে ওঠে আশার আলো।
একুশে সংবাদ/ঢ.প/এ.জে