সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় নিজ বাড়ীতে ফরিদ আলীর বসবাসের জায়গা হয়নি। তার কেনা জমিতে সন্তানেরা থাকছেন। এখন তিনি নদীতে একটি ছইঘরে বসবাস করছেন। তার এমন বসবাস সুখের নয়। একেবারে ফাকা জায়গায় একাকী এভাবে থাকা ফরিদ আলী খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছেন বলে জানান।
উপজেলার পূর্ণিমাগাঁতী ইউনিয়নের ভেংড়ী গ্রামের প্রায় বায়ান্ন বছর বয়সী ফরিদ আলী বিভিন্ন সময়ে দিন আয়ের পেশায় কাজ করছেন। তার দুজন স্ত্রী, ছেলে সন্তান দুজন ও দুজন মেয়ে সন্তান বলে জানানো হয় । মেয়ে সন্তান দুজনেরই বিয়ে হয়েছে। আর ছেলে সন্তান দুজন বিয়ে করে সংসার করছেন। ফরিদ আলী আয়ের টাকা থেকে নিজ গ্রাম এলাকায় দুশতক জমি কিনে সন্তানদের নামে লিখে দিয়েছেন । সে জমিসহ আরো কশতক জমিতে ঘরবাড়ি তুলে সন্তানেরা বসবাস করছেন। সে বাড়ীতে ফরিদ আলীর জায়গা হয়নি।
সদর উল্লাপাড়া নাগরৌহা গ্রাম এলাকায় কচুয়া নদীতে কবরস্থানের কাছাকাছিতে তিনি মাস তিনেক হলো বসবাস করছেন। নদীটিতে এখন কোমর সমান পানির মাঝে দুটি ড্রাম ভাসিয়ে মাচা ফেলে তার উপর ছই তুলে ঘর বানিয়ে বসবাস করছেন। সেখানেই নদীর ঢালে আরো একটি ছইঘর তুলেছেন। গত রাত থেকে নতুন ছই ঘরে থাকছেন।
সরেজমিনে গিয়ে আরো দেখা গেছে, একেবারে ফাকা জায়গায় ছইঘরে কোনো মতে থাকার জায়গা করে নিয়ে থাকছেন। প্রায় মাস তিনেক হলো তিনি এখানে আছেন। ছইঘর থেকে বেরিয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার দুরের তার সন্তানদের বসবাস ভেংড়ী গ্রাম দেখিয়ে বলেন সন্তানেরা বাড়ী থেকে বেরিয়ে যেতে বলায় তিনি কোনো কিছু না বলে একাকী বাড়ী ছেড়ে চলে এসেছেন।
তার একজন স্ত্রী মাঝে মধ্যে এসে খোজ খবর নেন বলে জানান । তিনি নদীতে মাছ ধরে বেচে পেটের খাবার জোটান। মাছ না পেলে সেদিন না খেয়ে থাকেন বলে জানান। তার কথায় সন্তানেরা তাকে বাড়ীতে জায়গা দেয়নি । এরপরও তাদের মঙ্গল কামনা করে বলেন তারা যেন মান অপমান না হয়। একাকী এভাবে থাকতে ভয় করে কিনা জানতে চাইলে নীরব থাকেন।
ফরিদ আলীর সন্তানদের একজন আবু হুরাইরা বলেন, তারা কেউ বাড়ী থেকে পিতাকে বের করে দেওয়া কিংবা বের হয়ে যাওয়ার কথা বলেন নি। তিনি নিজ ইচ্ছেতেই বাড়ী থেকে বেরিয়ে গিয়ে সেখানে থাকছেন। তবে পিতাকে দেখতে আসা কিংবা বাড়ীতে ফিরে নেওয়ার চেষ্টা তারা ভাইবোনদের কেউ করেন নি। তার কথায় এর আগেও বাড়ী থেকে বেরিয়ে এভাবে থেকেছেন। আবার বাড়ী ফিরে এসেছেন ।
উপজেলার পূর্ণিমাগাঁতী ইউনিয়নের এক নন্বর ওয়ার্ডের সদস্য সিরাজুল ইসলাম বলেন তার ভেংড়ী গ্রামের ফরিদ আলী এভাবে আছেন জানা নেই। তার কাছে ফরিদ আলী বিষয়টি জানালে সন্তানদের সাথে কথা বলে বাড়ী তুলে দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
একুশে সংবাদ.কম/সা.হ.সা/বি.এস
আপনার মতামত লিখুন :